সিন্ডিকেটের কারসাজিতেই বাড়ছে চালের দাম

সিন্ডিকেটের কারসাজিতেই বাড়ছে চালের দাম
MostPlay

যেভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বেড়েছে সেভাবে চালের দাম কমানোর নির্দেশ দিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী। আমন মৌসুমে দাম বাড়ার কোন কারণ নেই উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, লাভ নয়, ব্যবসায়ীদের লোভের স্বীকার হয়েছে ক্রেতা। নির্বাচনের সুযোগে ইচ্ছাকৃতভাব দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। দাম কমিয়ে আনা হবে- মন্ত্রীকে এমন আশ্বাস দিয়েছে ব্যবসায়ীরা।

হঠাৎ বাড়তে শুরু করেছে চালের দাম। মোকামগুলোয় দাম বাড়ার প্রভাব পড়েছে রাজধানীতেও। এ দফায় মোটা, মাঝারি ও সরু—সব ধরনের চালের দামই বেড়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, বছরের শুরুতে মিল মালিকেরা দাম বাড়িয়েছেন। ভরা মৌসুমে আমন চালের দাম বাড়বে– এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।

লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়িয়েছেন, এখন সেভাবেই কমাতে হবে। ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে এ কথা বলেছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। বুধবার খাদ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে ধান-চালের বাজার নিয়ে মতবিনিময় সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসমাইল হোসেন, খাদ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন ও পাইকারি চাল ব্যবসায়ীরা। সভা শেষে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মিলগেটে ২ টাকা দাম বাড়লে পাইকারি বাজারে ৬ টাকা কেন বাড়বে?

অবৈধ মজুতকারী কিংবা অহেতুক দাম বাড়িয়ে দেওয়া ব্যাবসায়ী– কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন। সবাইকে জবাবদিহি করতে হবে। বিনা লাইসেন্সে যারা ধানের মজুত করছেন তারা ছাড় পাবে না।’ ‘বিবেক না থাকলে, সততা না থাকলে মানুষ হওয়া যায় না’– মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘রেডি করা চাল বাজারে ছাড়তে হবে। সংকট তৈরি করা যাবে না। প্রচুর ধান আছে। সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই।’

এ সময় লাইসেন্সহীন মজুতদারি বন্ধ ও লাইসেন্স নবায়ন করার নির্দেশনা দেন সাধন চন্দ্র মজুমদার। সভায় বাংলাদেশ অটো মেজর হাসকিং মিল মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদ বলেন, ‘মিলারদের প্রতিযোগিতা করে ব্যবসা করতে হয়। সিন্ডিকেটের কোনো সুযোগ নেই। দাম বেড়েছিল– এটা সত্য। এখন বাজারে দাম কমতে শুরু করেছে।’

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এইচ আর খান পাঠান সাকি বলেন, ‘সুস্থ প্রতিযোগিতামূলক বাজার প্রত্যাশা করি। চালের দাম বাড়লে ছোট মিল মালিকরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন।’ নওগাঁ ধান-চাল মালিক সমিতির সভাপতি নিরোদ বরণ সাহা চন্দন বলেন, ‘যেভাবে ঢালাও মিলারদের দায়ী করা হচ্ছে, তা ঠিক নয়। করপোরেট কোম্পানিগুলো ধান-চালের বাজার অস্বাভাবিক করছে।’

দিনাজপুরের ব্যবসায়ী সমিতির নেতা মো. হান্নান বলেন, ‘ইতোমধ্যে ধান-চালের দাম কমতে শুরু করেছে। মনিটরিং বাড়ালে দাম আরও কমবে।’ সভায় ব্যবসায়ীরা বলেন, মিলারদের কোনো সিন্ডিকেট নেই। প্রতিযোগিতা করে কেনার কারণে ধানের দাম বেড়েছিল।

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল সভায় বলেন, ‘বাজার বাড়তি থাকায় আমরা ধান কিনছি না। সঠিক পরিসংখ্যান না থাকায় বাজারের সঠিক চরিত্র প্রতিফলিত হচ্ছে না। সরকারের পরিকল্পনাও সঠিকভাবে কাজ করছে না।’ এ বছর লাইসেন্সহীন লোকরা ধান কিনছে এবং অবৈধ মজুত করে বাজার অস্থির করছে বলে মন্তব্য করেন এসিআইর প্রতিনিধি মো. রুবেল। বেলকন গ্রুপের প্রতিনিধি বেলাল হোসেন বলেন, ‘ধানের ওপর আরোপ করা অযাচিত ট্যাক্স প্রত্যাহার করতে হবে। একই সঙ্গে খাদ্য অধিদপ্তরের তদারকি বাড়াতে হবে।’

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password