প্রয়োজনে ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় লোডশেডিং করা হবে বলে জানিয়েছেন, প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। জানান, বিদ্যুতের দাম উৎপাদনের সাথে সমন্বয় করা হবে। আগামী বছরের শেষ নাগাদ নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আসন্ন হিটওয়েভের জন্য প্রস্তুতি আছে।
প্রতিমাসে তেলের দাম বাড়বে বা কমবে বলেও জানান, তিনি। আসন্ন হিটওয়েভের পূর্বাভাসকে ঘিরে নতুন করে পরিকল্পনা করছে বিদ্যুৎ বিভাগ। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এবার শুধু গ্রামে লোডশেডিং নয়, বিদ্যুৎ সরবরাহে ভারসাম্য আনা হবে শহরেও। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী জানান, বিদ্যুৎ ঘাটতিতে লোডশেডিং করা হবে ঢাকা ও আশেপাশের এলাকায়।
জ্বালানি আমদানিতে ডলার সংস্থানই লোডশেডিংয়ের মূল সমস্যা বলে মনে করেরন নীতিনির্ধারক ও বিশেষজ্ঞরা। কাঠফাটা রোদের তেজ, লু হাওয়া, রেকর্ড ভাঙা-গড়া তাপমাত্রায় দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন দাবাদহের দাপট ছিল এপ্রিলে। আর তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যুক্ত হয় লোডশেডিং।
প্রচণ্ড খরতাপে গ্রামীণ জনপদে দিনের বড় একটি সময় বিদ্যুৎ না থাকায় চরম নাভিশ্বাসে দিন কাটে সাধারণ মানুষের। রেকর্ড বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরও মিলেনি স্বস্তি। কোনো কোনোদিন বিদ্যুৎ ঘাটতি ছাড়ায় তিন হাজার মেগাওয়াট। এখন তাপমাত্রা সহনীয় পর্যায়ে আসায় কমেছে বিদ্যুৎ চাহিদাও। তবে স্বস্তির এই সময় কতটা স্থায়ী হবে, তা নিয়ে রয়েছে সংশয়। আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাস, সপ্তাহখানেক পর আসতে পারে আরো একটি তাপপ্রবাহ। এতে শঙ্কা জাগছে আবারও লোডশেডিংয়ের।
গত ৩০ এপ্রিল এ যাবৎকালের রেকর্ড ১৬ হাজার ৪৭৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের দিনও ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন থাকে গ্রামের মানুষ। তাই ধরে নেয়া যায়, তাপমাত্রা বাড়লে এবারও হিমশিম খেতে হবে চাহিদা মেটাতে। সেক্ষেত্রে এবার আর আগের মতো গ্রামে টানা লোডশেডিং নয়, বরং গ্রাম ও শহরে ভারসাম্য আনতে চায় বিদ্যুৎ বিভাগ।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, যদি পাওয়ার না দিতে পারে তাহলে এক জায়গার লোড আরেক জায়গায় দিতে হবে। আমরা এখন যেটা করতেছি আগামীতে হয়তো ঢাকার ভিতরে এবং আশপাশে কিছু লোডশেডিং করবো; তাহলে ভারসাম্য হবে। যদিও আমি মনে করতেছি প্রয়োজন হবে না।’
তিনি বলেন, ‘আমি বলেছি প্রাইভেট সেক্টরে তেলের যোগান ঠিকমতো দিতে। বিপিসিকে বলছি বাকিতে তেল দিতে। কিন্তু এখানে যদি ব্যাঘাত ঘটে তাহলে সমস্যা হবে।’ তবে পরিকল্পনা যা-ই থাকুক, জ্বালানি আমদানিতে অর্থ না পেলে ভেস্তে যাবে সব পরিকল্পনাই।
নসরুল হামিদ বলেন, যদি আমরা সময় মতো অর্থের যোগান দিতে পারি তাহলে কোন সমস্যা হবে না। আর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন বলেন, ‘সবকিছুর জন্য যতটুকু ডলার দেয়া দরকার অর্থ মন্ত্রণালয় সেটা দিচ্ছে না। ফলে বিদ্যুৎ বিভাগকে যতোই বলা হোক, তারা আমাদের নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দিতে পারবে না।’ বর্তমানে দেশে ২৭ হাজার বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা থাকলেও সরবরাহ ১৬ হাজার মেগাওয়াট না ছাড়ানোর মূল কারণ জ্বালানি সংকট।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন