ইডেন কলেজর শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগ

ইডেন কলেজর শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে বিক্ষোভে যাওয়ার সময় ইডেন মহিলা কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ হামলা চালিয়েছে ও বাধা দিয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান। দুপুর ১২টা থেকে আজ রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে কোটা সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা।

ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের মেয়েদের হামলায় সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ইডেন কলেজের সভাপতি শাহিনুর সুমিসহ (২৮) অন্তত সাত জন আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুরে ইডেন কলেজের শিক্ষার্থীরা কোটা আন্দোলনে যোগ দিতে ক্যাম্পাস থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের দিকে আসতে চাইলে কলেজ ছাত্রলীগের মেয়েরা তাদের ওপর হামলা করেন।

আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে সুমিকে গুরুতর অবস্থায় চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া তার হাসপাতালে ভর্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

হাসপাতালে নিয়ে আসা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফোন্টের সাধারণ সম্পাদক কেন্দ্রীয় কমিটির রাফিকুজ্জামান ফরিদ বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনে রাজু ভাস্কর্যের সামনে আমাদের প্রোগ্রাম ছিল। ইডেন কলেজ থেকে কয়েকজন সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে সেখানে যাওয়ার সময় ছাত্রলীগের ২০-৩০ জন আমাদের ওপর হামলা ও মারধর করে। তাদের হামলায় সুমিসহ অনেকেই আহত হয়।

সুমি ছাড়াও হামলার শিকার হয়েছে সায়েমা, তামান্না, ফাহমিদা, সানজিদা, মিমসহ কমপক্ষে ছয়-সাত জন। পরে সুমিকে গুরুতর অবস্থায় ঢামেক হাসপাতালে আনা হয়।’ ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘ঢামেকের জরুরি বিভাগে আহত সুমির চিকিৎসা চলছে।’

মুক্তিযোদ্ধা কোটা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাহার এবং সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের একদফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নিতে গেটের তালা ভেঙে বের হয়েছেন ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা। সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুর ১টার দিকে কলেজের আবাসিক এলাকা সংলগ্ন ফটকের তালা ভেঙে বের হয়ে আসেন তারা।

এসময় ঢাকা কলেজের অর্ধশতাধিক কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী গেটের সামনে অবস্থান করেছিলেন। ইডেনের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, গতকাল রাত থেকেই কোটাবিরোধী বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালনে বাধা দিয়ে আসছিলেন হল ছাত্রলীগের নেতারা। রাতে একপর্যায়ে তাদের বাধা উপেক্ষা করেই বাইরে আন্দোলনে বের হন শিক্ষার্থীরা।

আজও সকাল থেকে প্রতিটি হলের নিচে তালা মেরে শিক্ষার্থীদের বাইরে বের হতে দিচ্ছিলেন না। এ সময় সবাই সম্মিলিতভাবে গেট খুলে বাইরে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হলেও মূল ফটকে তখন তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। অবশ্য বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ছাত্রলীগ নেত্রীদের হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন বলেও অভিযোগ করেছেন।

জান্নাতুল ফেরদৌস নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, সকাল থেকেই ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা প্রতিটি হলের গেটে এবং নিচে অবস্থান নিয়েছেন। তারা কাউকে বাইরে বেরিয়ে আসতে দিচ্ছেন না। গতকাল রাতে যারা আন্দোলনে গিয়েছে তাদেরকেও মারধর করা হয়েছে। যার যার মত প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে। কেন তারা এমন করছে সেটি আমরা জানি না।

সবশেষ গেটের তালা ভেঙে আমরা বাইরে বেরিয়ে আসতে পেরেছি। সাবিহা আক্তার নামে নারী শিক্ষার্থী বলেন, আজকের মিছিলে যেন অংশ না নেই সেজন্য সবাইকে এই হুমকি-ধামকি দেওয়া হয়েছে। সবার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেই আমরা বাইরে বেরিয়ে এসেছি। এখন আমরা সবাই মিছিল নিয়ে রাজু ভাস্কর্যে যাচ্ছি। অপরদিকে কোটা বাতিল ও প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে এরইমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সমাবেশে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, ঢাকা কলেজ এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও জড়ো হচ্ছেন।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password