অস্ত্রোপচারে মূত্রাশয় থেকে বেরোল ফোন চার্জার কর্ড

অস্ত্রোপচারে মূত্রাশয় থেকে বেরোল ফোন চার্জার কর্ড

আড়াই দশক ধরে অস্ত্রোপচার করছেন। কিন্তু, একজন শল্যচিকিত্‍‌সক হিসেবে এমন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন আগে কখনও হননি ওয়ালি ইসলাম। এক্স-রে প্লেটে যুবকের মূত্রাশয়ে ফোনের চার্জার কর্ড দেখে নড়েচড়ে বসেন এই শল্যচিকিত্‍‌‍সক। গোটা ঘটনায় তিনি যত না বিস্মিত, তার থেকে অনেক বেশি শকড! তাই ফেসবুকে সেই বিচিত্র অভিজ্ঞতা শেয়ার না-করে পারেননি।

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, ফোন চার্জারের কর্ড কী করে মূত্রাশয়ে গেলে? ওই যুবকের দাবি, গলা দিয়ে গিলে ফেলেছিলেন। কিন্তু, অভিজ্ঞ সার্জনের চোখে ফাঁকি দিতে পারেননি। যুবক যে ডাহা মিথ্যে বলছেন, তা ধরতে এক সেকেন্ডও সময় লাগেনি ওই শল্যচিকিত্‍‌সকের। তিনি যা কারণ বললেন, তা শুনলে অবাক হবেন আপনিও। ডাক্তার জানালেন, ওই চার্জার কর্ড দিয়ে হস্তমৈথুন (masturbate) করতে গিয়েই এমন কাণ্ড ঘটিয়ে বসেছেন তিরিশের ওই যুবক।

নিশ্চিত অবাক হচ্ছেন। ভাবছেন তো, ফোনের চার্জর দিয়ে কী ভাবে মাস্টারবেট হতে পারে? তর্কের খাতিরে যদি হয়ও, তা হলে তা মূত্রাশয়ে যায় কী করে? তা-ও আবার একজন পুরুষের ক্ষেত্রে! যুবকের রকম দেখে আপনার মতো ওই শল্যচিকিত্‍‌সকও প্রথমে বিস্মিত হয়েছিলেন। কিন্তু, তিনি নিশ্চিত মূত্রনালী দিয়েই আস্ত একটা চার্জার কর্ড গুয়াহাটির ওই যুবক মূত্রাশয় (Urinary Bladder)-এ প্রবেশ করিয়েছিলেন।

অসমের ওই অভিজ্ঞ ডাক্তার জানাচ্ছেন, এটি মাস্টারবেটের একটি ধরন। চিকিত্‍‌সা পরিভাষায় এই পদ্ধতিকে বলা হয়, ইউরিথ্রাল সাউন্ডিং (urethral sounding)। যা হস্তমৈথুন বা মাস্টারবেশনেরই একটা ধরন। মূত্রনালী দিয়ে কোনও বস্তু বা তরল প্রবেশ করানোর প্রক্রিয়াকে বলা হয় ইউরিথ্রাল সাউন্ডিং।

ঘটনা ঘটানোর পাঁচ দিন পর তলপেটে ব্যথা নিয়ে অসম হাসপাতালে আসেন ওই যুবক। চিকিত্‍‌সককে বারবার বলতে থাকেন দুর্ঘটনাবশত মোবালই ফোনের চার্জার কর্ড গিলে ফেলেছেন। তার জন্য পেটে ব্যথা হচ্ছে।

মল পরীক্ষা করার পরে, অস্ত্রোপচারের আগে একটি এন্ডোস্কোপিও করানো হয়েছিল। কিন্তু, অস্ত্রোপচারের সময় গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্টে কিছু না পেয়ে, একটু অবাক হন তিনি। এক্স-রে করার সিদ্ধান্ত নেন। এক্সরের সেই ছবিতেই ধরা পড়ে মূত্রাশয়ে আটকে থাকা ফোন চার্জার। অস্ত্রোপারে সেটি মূত্রাশয় থেকে বের করার পর, ফেসবুকে ভিডিয়ো-সহ শেয়ার করেন ওই চিকিত্‍‌সক। উদ্ধার হওয়া সেই ফোন চার্জার কর্ড এবং এক্স-রে প্লেটেরও তিনি ছবি দিয়েছেন। ক্যাপশন দেন: “Surprises in Surgery!

পোস্টে তিনি লেখেন, সার্জারিতে ২৫ বছরের অভিজ্ঞতা হওয়ার পরেও কিছু কিছু ঘটনা আজও আমার মেধা ও দক্ষতাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে। এর পরেই তিনি তিরিশের ওই যুবকের কথা বলেন। পেটে ব্যথা নিয়ে এসেছিল ছেলেটি। বলেছিল, 'হেডফোন চলে গেছে পেটে।' কিন্তু, পেটের ভেতর কোথায় কী! এন্ডোস্কপিতে কিছু নেই। অস্ত্রোপচারেও কিছু পাওয়া যায়নি। যন্ত্রণার উত্‍‌স্য খুঁজতে গিয়ে অবশেষে এক্স-রে প্লেটে ধরা পড়ে মূত্রাশয়ে থাকা ফোন চার্জার। কোথা দিয়ে সেটে মূত্রাশয়ে প্রবেশ করেছে, আশাকরি আপনারা বুঝতে পারছেন। সফল অস্ত্রোপচারের পর ছেলেটি এখন সুস্থ। তবে, তাঁর মানসিক সুস্থতা নিয়ে চিকিত্‍‌সকের মনেই প্রশ্ন আছে।

পোস্টের একদম শেষ লাইনে বিস্ময় প্রকাশ করে তিনি লেখেন, 'বাস্তবিকই এই পৃথিবীতে সবকিছুই সম্ভব!

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password