যমুনা নদীর ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম উন্নয়নে ১০ কোটি ২০ লাখ ডলার বা এক হাজার ১১২ কোটি টাকা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। ‘যমুনা রিভার সাসটেইনেবল ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্ট-১’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এই অর্থ ব্যয় করা হবে। এসংক্রান্ত অর্থ সহায়তার বিষয়টি অনুমোদন করেছে সংস্থাটির বোর্ড।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, যমুনা নদী টেকসই ব্যবস্থাপনা প্রকল্প প্রস্তাবিত প্রকল্পগুলোর একটি সিরিজের মধ্যে প্রথম। এটি পর্যাপ্ত গভীরতার সঙ্গে নেভিগেশন চ্যানেলগুলোকে উন্নত করতে সাহায্য করবে।
যা সারা বছর বড় পণ্যবাহী জাহাজগুলোকে চলাচলে সহায়তা করতে পারে। এটি অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন পুনরুজ্জীবিত করতে এবং আঞ্চলিক সংযোগ ও বাণিজ্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। এ ছাড়া নদীভাঙন ও বন্যা থেকে প্রায় দুই হাজার ৫০০ হেক্টর জমি রক্ষা, স্থানীয় জনগণের জীবন-জীবিকা ও সম্পদের সুরক্ষা এবং নতুন অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরি করতে সহায়তা করবে।
প্রকল্পটি বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ফুলছড়ি, গাইবান্ধা ও কালিহাতী অতিক্রম করে যমুনার দুটি চ্যানেলে প্রকৃতিভিত্তিক সমাধান ও উদ্ভাবনী নদী কাঠামো এবং নৌ চলাচলের সহায়তা করবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। উন্নত নেভিগেশন চ্যানেলগুলো বাস থেকে যাত্রী ফেরিতে যাতায়াতকারীদের জন্য উন্নত নিরাপত্তা এবং সস্তা পরিবহন সুবিধা দেওয়ার মাধ্যমে প্রায় এক লাখ মানুষ উপকৃত হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, প্রকল্পটি যমুনা নদীর তীরে বসবাসকারী দুর্বল মানুষের জন্য দুর্যোগ এবং বাস্তুচ্যুতির ঝুঁকি হ্রাস করার দিকেও মনোনিবেশ করবে। প্রায় ১.২ মিলিয়ন লোককে একটি বীমা প্রকল্পের আওতায় আনা হবে এবং এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি সুবিধাভোগী হবে নারী। বীমার বিষয়টি সক্রিয় হলে বীমাধারকরা ডিজিটালভাবে অর্থ পাবেন। কিন্তু প্রায় এক লাখ ২০ হাজার মানুষ সম্প্রদায় সুরক্ষা তহবিল থেকেও উপকৃত হবে।
বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র ওয়াটার রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট স্পেশালিস্ট এবং প্রকল্পের টিম লিডার আহমেদ শওকি বলেন, প্রকল্পটি হবে বাংলাদেশ ডেল্টাপ্ল্যান ২১০০-এর অধীনে প্রথম বহুখাতীয় বিনিয়োগ। পাইলট কার্যক্রম পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা উন্নত করতে সাহায্য করবে এবং নদীর প্রাকৃতিক গতিপথে হস্তক্ষেপ করবে না। এই পর্যায় থেকে শেখা সাফল্য এবং পাঠগুলো পরবর্তী প্রকল্পের নকশা এবং সুযোগকে ত্বরান্বিত করবে।
বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক বলেছেন, যমুনা পৃথিবীর বৃহত্তম এবং গতিশীল নদীগুলোর মধ্যে একটি। এর ওপরে লাখ লাখ মানুষের জীবন ও জীবিকা নির্ভর করে। তবু জলবায়ু পরিবর্তন এবং ক্রমবর্ধমান পানির স্তরের কারণে নদীভাঙন প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষকে বাস্তুচ্যুত করে। তাদেরকে দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দেয়। যমুনা নদীর টেকসই এবং জলবায়ু সহনশীল ব্যবস্থাপনা দেশ ও জনগণের জন্য প্রচুর অর্থনৈতিক সুবিধা বয়ে আনবে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন