রাজধানীর কাকরাইলে এসএ পরিবহন পার্সেল অ্যান্ড কুরিয়ার সার্ভিস কার্যালয়ের আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও কিছুক্ষণ পরপর ঘটছে বিস্ফোরণ। এতে আবার জ্বলে উঠছে আগুন। ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট কাজ করছে। যোগ দিয়েছে সেনাবাহিনীও।
এস এ পরিবহনের প্রধান কার্যালয়ের গোডাউনে আগুন লেগে পুড়ে গেছে বহু মালামাল। সেই গোডাউনে পটকা, আতশবাজি ও কেমিক্যাল পেয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। তবে কেমিক্যালগুলো কি ধরনের দাহ্য পদার্থ তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সোমবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের ব্রিফিংকালে এসব তথ্য জানান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেজাউল করিম। ব্রিফিংয়ে গোডাউনের কোনো দাহ্য পদার্থ পাওয়া গেছে কিনা জানতে চাইলে রেজাউল করিম বলেন, আমরা পটকা ধরনে কিছু জিনিস পেয়েছি, কিছু অ্যাগ্রো প্রোডাক্ট পেয়েছি, কাগজপত্র পেয়েছি। যেসব কেমিক্যাল পাওয়া গেছে সেটি কি কেমিক্যাল তা আমাদের বিস্ফোরক দল এলে বলতে পারবো। এদিকে ওই গোডাউনের আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও দুপুর ১টা পর্যন্ত পুরোপুরি নির্বাপন হয়নি। বরং থেমে থেমে বিস্ফোরণের শব্দ আসছে।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেজাউল করিম বলেন, বর্তমানে আমরা থেমে থেমে আতশবাজি বা পটকা ফোটার শব্দ পাচ্ছি। আমরা ধারণা করছি গোডাউনের পার্সেলের ভেতরে পটকা বা আতশবাজি জাতীয় কিছু থাকতে পারে। এটা তদন্ত সাপেক্ষে পরে জানাতে পারবো। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত আগুন আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। সম্পূর্ণ নির্বাপন করতে আরও কিছু সময় লেগে যেতে পারে। তিনি আরও বলেন, বিস্ফোরণের কারণে আমাদের কাজে কিছুটা সমস্যা হয়েছে।
ওনাদের (এস এ পরিবহন) সঙ্গে আমরা এখনো কথা বলতে পারিনি। কি ধরনের বিস্ফোরক বা কেমিক্যাল ছিল এটা আমরা এখনো জানতে পারিনি। সাধারণ মালামালের সঙ্গে কোনোভাবেই কেমিক্যাল, পটকা, বিস্ফোরক এ ধরনের জিনিস রাখা উচিত নয় এবং কোনোভাবেই এটা গ্রহণযোগ্য নয়। এগুলো আলাদাভাবে বিশেষভাবে সংরক্ষণ ও পরিবহন করতে হয়।
যদি সাধারণ মালামালের সঙ্গে এসব একসঙ্গে রাখে, তাহলে তারা কাজটি ঠিক করেনি। এটি তদন্ত সাপেক্ষে বের করে পরে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো। আগুনে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেজাউল করিম বলেন, তিনতলা ভবনটির নিচতলায় আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হই। নিচতলায় কিছু জিনিসপত্র পুড়ে গেছে। বিস্তারিত ক্ষতির পরিমাণ তদন্ত করে জানাতে পারবো। এস এ পরিবহনের ওই গোডাউনে নিজস্ব আগুন নির্বাপন ব্যবস্থা ছিল কিনা জানতে চাইলে লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেজাউল করিম বলেন, নিজস্ব আগুন নির্বাপন ব্যবস্থা আমাদের চোখে পড়েনি।
তারপরও আমরা বিস্তারিত তদন্ত করে তাদের কি সরঞ্জাম ছিল সেটা বিস্তারিত বলতে পারবো। এস এ পরিবহনের ভেতরে তেলের স্টেশন থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেজাউল করিম বলেন, সেখান পর্যন্ত আগুন যায়নি। আমরা গোডাউনের মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছি। একটি প্রতিষ্ঠানের ভেতরে পেট্রল পাম্প রাখা যায় কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা তাদের নিজস্ব কিনা সেটা তদন্ত করে পরে বলতে পারবো।
আপাতত আমরা আগুন নির্বাপনে ব্যস্ত আছি। এ পেট্রল পাম্পের ছাড়পত্র আছে কিনা সেটি কাগজপত্র দেখে পরে আপনাদের জানাতে পারবো। এর আগে সকাল ১০টা ১০ মিনিটে কাকরাইলে অবস্থিত এস এ পরিবহনের প্রধান কার্যালয়ের গোডাউনে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস।
১০টা ১৫ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে আসে। এরপর একে একে আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয় ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট। প্রায় পৌনে এক ঘণ্টার চেষ্টায় সকাল ১০টা ৫৮ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় ফায়ার সার্ভিস।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন