শাহবাগে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতা–কর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটেছে। সরকার পতনের এক দফা দাবিতে আজ রবিবার (৪ আগস্ট) সারা দেশে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
এ দিন রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে আন্দোলনকারী ও ছাত্রলীগ-যুবলীগ কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের ভেতর বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর ও যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়। এ সময় বেলা ১১টার দিকে শাহবাগ এলাকায় বিক্ষোভকারীরা জড়ো হন।
এসময় ছাত্রলীগ-যুবলীগ-আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সেখানে আসলে লাঠিসোঁটা নিয়ে তাদের ধাওয়া দেন বিক্ষোভকারীরা। পরে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দৌড়ে বিএসএমএমইউয়ের ভেতরে যান। পরবর্তীতে সেখানে আন্দোলনকারী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ইটপাটকেল ছোঁড়ে। এসময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে হাসপাতালের প্রাঙ্গণে রাখা কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পরে হাসপাতালের সামনে রাখা যানবাহন ও অ্যাম্বুলেন্সে অগ্নিসংযোগ করা হয়। সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে আগুন আরও ছড়িয়ে পড়ে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শাহবাগে আন্দোলনকারীরা জড়ো হয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেয়।
এসময় তাদের সরকার পতনের ডাকে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে শোনা গেছে। এর আগে সকালে শাহবাগ এলাকা দিয়ে দু–তিনজন করে বিক্ষোভকারী যাওয়ার সময় ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা তাদের মারধর করে বলে অভিযোগ ওঠে। পরে বিক্ষোভকারীরা সংগঠিত হয়ে এগিয়ে আসেন। এ সময় শাহবাগ এলাকায় কোনও পুলিশ দেখা যায়নি।
শাহবাগ থানা এলাকায় একটি পুলিশের গাড়িকে বিক্ষোভকারীদের আসতে দেখে সরে যেতে দেখা যায়। বিএসএমএমইউ হাসসপাতালের উপপরিচালক (এস্টেট) ডা. শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ডি ব্লকের ভেতরে রাখা প্রথমে মোটরসাইকেল এবং পরে অন্য সব গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। আমরা তাদের আটকাতে পারিনি।
এরপর নিচতলার ইনফরমেশন ডেস্ক ভাঙচুর করে, দোতলায় উঠে প্রশাসনিক ভবনে ঢুকতে চায়। কিন্তু প্রশাসনিক ব্লকে ঢোকার গেটে তালা দিয়ে দেওয়াতে তারা সেখানে ঢুকতে পারেনি। এরপর দোতলার অন্যপাশে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর করে। যতদূর পর্যন্ত পারা যায় ইট মেরেছে, দুই ও তিনতলার কাচ সব ভেঙে রেখে গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ডা দ্বীন মোহাম্মদ নূরুল হকসহ সবাই প্রশাসনিক ভবনে রয়েছেন। তবে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে কর্মচারী, রোগীসহ তাদের স্বজনদের মধ্যে। হাসপাতাল ব্লকে কেউ যেন কোনও দুর্বৃত্ত-হামলাকারী ঢুকতে না পারে, সেজন্য চেষ্টা করছেন তারা।
এদিকে, অবরোধ কর্মসূচির প্রভাব পড়েছে রাজধানীর সড়কে চলছে শুধু রিকশা-সিএনজি। সড়কে মাঝে মাঝে বাসের দেখা মিললে তাতে হুমড়ি খেয়ে পড়তে দেখা গেছে যাত্রীদের। গণপরিবহন সংকটে ভোগান্তিতে পড়েছেন অফিসগামী যাত্রী, জরুরি প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হওয়া মানুষ, হাসপাতালগামী রোগী ও স্বজনরা।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন