চলমান গ্যাস সংকট সহসাই কাটছে না

চলমান গ্যাস সংকট সহসাই কাটছে না

চলমান গ্যাস সংকট সহসাই কাটছে না। মূলত আমদানি করা LNG'র ভাসমান টার্মিনালের কারণে আরো অন্তত দু'মাস চাহিদামত গ্যাস দিতে পারবে না, পেট্রোবাংলা। প্রতিমন্ত্রীর আশা, মার্চের মাঝামাঝি, পরিস্থিতির খানিকটা উন্নতি হবে। এমন অবস্থায় উৎপাদন অব্যাহত রাখাই চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

দেশে গ্যাস সরবরাহের চলমান সংকট শিগগিরই কাটছে না—এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে গ্যাসের স্বল্পতা দেখা যাচ্ছে। তবে এটা খুবই সাময়িক। প্রচণ্ড শীতেও গ্যাসের চাপ কিছুটা কমে যায়।

তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) রূপান্তরের একটি ভাসমান টার্মিনাল রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বন্ধ আছে। দু–এক দিনের মধ্যেই এটি চালু হবে। বন্ধ থাকা টার্মিনাল চালু হলে দিনে ৮৫ থেকে ৯০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা যাবে বলে আশা করছেন প্রতিমন্ত্রী। তবে তিনি জানান, ১৮ জানুয়ারি আরেকটি টার্মিনাল রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যাবে। এটি আবার মার্চের প্রথম সপ্তাহে চালু হতে পারে।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের অগ্রগতি, সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। আমদানি করা এলএনজি রূপান্তর করে সরবরাহের জন্য দুটি ভাসমান টার্মিনাল আছে মহেশখালীতে। পাঁচ বছর পরপর এগুলো রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন হয়। এর একটি পরিচালনা করে মার্কিন কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জি।

গত ১ নভেম্বর ভাসমান টার্মিনাল রক্ষণাবেক্ষণের জন্য গভীর সমুদ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়। ৪৫ দিন পর চালুর কথা থাকলেও ইতিমধ্যে আড়াই মাস পার হয়ে গেছে। আরেকটি টার্মিনাল পরিচালনা করে দেশীয় কোম্পানি সামিট। তারা বর্তমানে ৫০ কোটি ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ করছে। এক্সিলারেট চালুর সঙ্গে সঙ্গে সামিটের টার্মিনাল রক্ষণাবেক্ষণে যাবে। তার মানে মার্চের আগে এলএনজি সরবরাহ বাড়বে না।

বাংলাদেশ তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা) সূত্র বলছে, দেশে দিনে গ্যাসের চাহিদা ৩৮০ কোটি ঘনফুট। ৩০০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ হলেও সব খাতে মোটামুটি চাহিদা পূরণ করা যায়। এখন সরবরাহ করা হচ্ছে ২৫০ কোটি ঘনফুটের কম। এতে শিল্প ও আবাসিক ধুঁকছে গ্যাসের অভাবে। তবে রমজানে মাসে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।

--গ্যাস সরবরাহ বৃহৎ চ্যালেঞ্জ-- কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে না দিলেও বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতের জন্য কিছু অগ্রাধিকার ঠিক করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, গ্যাস সরবরাহ একটি বৃহৎ চ্যালেঞ্জ। নিজস্ব গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদন বাড়ানো মূল অগ্রাধিকার। হবিগঞ্জের বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রে নতুন মজুত পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।

২০২৫ সালের মধ্যে সারা দেশের বিভিন্ন গ্যাসক্ষেত্রে ৪৬টি কূপ খনন করা হবে। এ থেকে নতুন করে ৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাস যোগ হতে পারে। এরপর আরও ১০০টি কূপ খননের পরিকল্পনা আছে। এ বছরের মধ্যে সমুদ্রে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানে দরপত্র আহ্বান করার পরিকল্পনা আছে। ভোলায় অনেক গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে।

এ গ্যাস ভোলার বাইরে আনতে এ বছরই পাইপলাইন নির্মাণের কাজ শুরু হতে পারে। প্রতিমন্ত্রী জানান, এলএনজি আমদানির জন্য আরও দুটি ভাসমান টার্মিনাল ২০২৬-২৭ সালের মধ্যে চলে আসবে। এলএনজি আমদানির বৃদ্ধির জন্য কয়েকটি চুক্তি করা হয়েছে। ২০২৬ সালে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ এখন লক্ষ্য।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password