নাগরিক সমাজের কথা বলার স্থান বন্ধ (ক্লোজড) হয়ে গেছে। বাংলাদেশের নাগরিক সমাজের কথা বলার জায়গা বন্ধ হয়ে গেছে বলে মনে করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন সিভিকাস মনিটর।
বুধবার (৬ ডিসেম্বর) ‘পিপল পাওয়ার আন্ডার অ্যাটাক ২০২৩’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এমনটা জানিয়েছে সংগঠনটি। সেইসঙ্গে বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাতে বিশ্ব নেতাদের পদক্ষেপ কামনা করা হয়।
প্রতিবেদনে বাংলাদেশ বিষয়ে বলা হয়েছে, জানুয়ারির ভোটকে সামনে রেখে ভিন্ন মতাবলম্বীদের দমন করতে সব রকম ব্যবস্থা নিচ্ছে ক্ষমতাসীন দল। ভীতি প্রদর্শন, সহিংসতা, গ্রেপ্তার ও নির্যাতনে মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক, আন্দোলনকারী ও সমালোচকদের টার্গেট করা হচ্ছে। বিভিন্ন অভিযোগে বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে সিভিকাসের এশিয়া প্যাসিফিকবিষয়ক গবেষক জোসেফ বেনেডিক্ট বলেন, আমাদের তথ্য এটাই বলছে, শেখ হাসিনা শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য কোনো কিছুতেই থেমে নেই। বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনো অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।
সংগঠনটির শীর্ষ গবেষক মারিয়ানা বেলালবা ব্যারেতো বলেন, এখন বিশ্বে অধিকার লঙ্ঘনের সামনের সারিতে আছে বাংলাদেশ। নিরপেক্ষ নাগরিক সমাজের কর্মকাণ্ড চালানোর মতো স্পেস নেই। প্রতিবাদ সমাবেশ ও সড়কে অবরোধ নিষিদ্ধ করেছে পুলিশ। তারপরও কেউ প্রতিবাদ করলে তাদের ওপর রাবার বুলেট, কাঁদুনে গ্যাস ও জলকামান ছোড়া হয়। দমনপীড়ন থেকে বাদ যাচ্ছে না সাংবাদিক ও সমালোচনাকারীরাও।
জোসেফ বেনেডিক্ট বলেন, বাংলাদেশি নাগরিক সমাজের পাশে দাঁড়াতে এখনই সময় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এবং শেখ হাসিনা শাসকগোষ্ঠীর গতিপথ পরিবর্তনের আহ্বান জানানো। জেলবন্দি রাজনৈতিক নেতা ও কর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি দাবি করতে হবে বিশ্ব নেতাদের।
একই সঙ্গে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাতে হবে নির্বাচনে প্রকৃতপক্ষে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে। সিভিকাস মনিটর প্রতিটি দেশকে তার নাগরিক সমাজের পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে বছরজুড়ে দেশভিত্তিক নাগরিক সমাজের অধিকারকর্মী, অঞ্চলভিত্তিক গবেষণা দল, আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের সূচকগুলো এবং মনিটরের নিজস্ব বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে সংগৃহীত ডাটা নিয়ে।
এই চারটি আলাদা উৎস থেকে প্রাপ্ত ডাটাকে তারপর সংকলিত করে প্রতিটি দেশকে ৪টি ক্যাটাগরিতে ফেলা হয়। তা হলো- ওপেন (বা মুক্ত), ন্যারোড (বা সংকীর্ণ), অবস্ট্রাকটেড (বা বাধার সম্মুখীন) রিপ্রেসড অর ক্লোজড (বা নিষ্পেষণমূলক, বন্ধ হয়ে যাওয়া)। এর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা বোঝানো হয় ক্লোজড ক্যাটাগরি দিয়ে। এ ক্যাটাগরিতে অবস্থান নিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বেও ২৮টি বিধিনিষেধের দেশের মধ্যে অন্যতম।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন