এসএমএসের মাধ্যমে পেঁয়াজের দাম বাড়াচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। করেছেন নানা অনিয়ম। সাধারণ ভোক্তাদের ঠকিয়ে হাতিয়েছেন মোটা অংকের টাকা। সকালে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণ ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় অংশীজনদের অংশগ্রহণে এক মত বিনিময় সভায় এ অভিযোগ করেছেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।
এসময় পণ্য আমদানী ও উৎপাদন খরচ যাচাইয়ের পর দাম নির্ধারণ করেও সুফল মিলছেনা বলে জানান ট্যারিফ কমিশন কর্মকর্তা। মোবাইল এসএমএসের মাধ্যমেই নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে পেঁয়াজের বাজার। ভারতের রপ্তানিকারকরা দাম বাড়িয়ে দিতে বলেন এদেশের আমদানিকারকদের। তারা নিজস্ব এজেন্টের মাধ্যমে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দেয় সারা দেশে। এভাবেই ঝড়ের গতিতে দিন দুয়েকের মধ্যেই কোটি কোটি টাকার বাড়তি মুনাফা করে নিয়েছে ব্যবসায়ীরা।
এমন তথ্য মিলেছে রাজধানীর শ্যামবাজার আড়ত থেকে। বাংলাদেশে আমদানি হওয়া পেঁয়াজের প্রায় পুরোটাই আসে ভারত থেকে। গত শুক্রবার তিন মাসের জন্য পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় দেশটি। ভারতের ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড জানিয়েছে, আগামী বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকবে।
পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় গত ২৯ অক্টোবর বাড়তি রপ্তানি মূল্য নির্ধারণ করে ভারত। চলতি মাসের ৩১ তারিখ পর্যন্ত এ বিধিনিষেধ দেওয়া হলেও তা আরও তিন মাসের জন্য বাড়ানো হয়। এ বিষয়ক আগের নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, বিশ্বের যেকোনো দেশেই পেঁয়াজ রপ্তানি করা যাবে। তবে প্রতি টন পেঁয়াজের ন্যূনতম মূল্য ৮০০ ডলার রাখতে হবে।
পরিবহন ও বীমা খরচ এ দামের সাথে অন্তর্ভুক্ত নয় বলেও জানানো হয়। ভারতের রপ্তানি বন্ধের ঘোষণার পর দেশের বাজারে একরাতের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ হয়ে যায়। যদিও দেশি বা বিদেশি পেঁয়াজের সংকট নেই বাজারে। কিন্তু অস্বাভাবিক দাম বাড়ার কারণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
শ্যামবাজারে পেঁয়াজের আড়তদাররা জানান, ভারতের ঘোষণার পরপরই ঐ দেশের রপ্তানিকারকরা জানিয়ে দেন হিলি, বেনাপোল ও ভোমরার আমদানিকারকদের। এসএমএসে জানান, দাম বাড়িয়ে দিতে। এরপর আমদানিকারকরা সে বার্তা ছড়িয়ে দেন নিজস্ব এজেন্টদের কাছে। সবাই একযোগে বাড়িয়ে দেয় পেঁয়াজের দাম।
শ্যামবাজারের এক আড়তদার বলেন, ‘ওখানে যদি মাল না আসে তখন তাঁরা (ভারতীয় রপ্তানিকারক) বলে যে মাল ঢুকবে না, যা আছে তা বাড়ায় বিক্রি করো। ভারতের পেঁয়াজ বন্ধ হওয়ার পরে কিছু কিছু ব্যবসায়ী যারা ৯৫ বা ১০০ টাকায় পেঁয়াজ কিনেছিল এরা সুযোগ বুঝে ২০০ টাকা দাম হাঁকিয়েছে।’ পেঁয়াজের বাজারে এমন অস্থিররতা দেখা গিয়েছিলো কিছুদিন আগেও।
এমন পরিস্থিতিতে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সংস্থাটির মহাপরিচালক এ এইচ এম শফিকুজজামান বলেন, ‘এই যে এই অসাধু চক্র যারা বারবার এটা করছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি এবং তাদের বিরুদ্ধে আরও যে কঠোর আইনের ব্যবস্থা আছে মজুদদারি আইন সেই জায়গাগুলোতে আমরা মামলার ব্যবস্থা নিচ্ছি।’ তবে দেশি মুড়িকাটা জাতের পেঁয়াজ বাজারে উঠতে শুরু করায় কমছে দাম।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন