সময়মতো কয়লার বকেয়া বিল ডলারে পরিশোধ করতে না পারায় আগামীকাল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্র পায়রা। আগামী ২৫ জুনের আগে সেটি চালু হওয়ার সম্ভাবনাও কম। কর্তৃপক্ষ বলছে, বকেয়ার একটা অংশ, প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধের পর নতুন করে এলসি খুললেও কয়লা আসতে সময় লাগবে অন্তত তিন সপ্তাহ। ফলে অন্তত ২১ দিন বন্ধ থাকবে দেশের সবচে সাশ্রয়ী এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি।
কয়লা সংকটে সাময়িক বন্ধ হচ্ছে পটুয়াখালীর পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন। আজ কিংবা আগামীকাল মধ্যরাত থেকে এই কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে বলে নিশ্চিত করেছেন কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক গোলাম মাওলা।
এর আগে গত ২৫ মে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট বন্ধ হয়ে যায়। ডলার-সংকটে বিল বকেয়া থাকায় কয়লা সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে দেশের সবচেয়ে বড় এই বিদ্যুৎকেন্দ্র সংকটে পড়ে। ফলে কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয় উৎপাদন বন্ধ করে দিতে। কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর অবশিষ্ট কয়লা দিয়ে একটি ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদন ২ জুন পর্যন্ত চালিয়ে যাওয়া সম্ভব বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। তিন বছর আগে উৎপাদনে আসার পর এবারই প্রথম পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
এতে দেশজুড়ে লোডশেডিং বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। যদিও কর্তৃপক্ষ বলছে, চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে কয়লা দেশে আসবে। তখন পুনরায় বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু করা সম্ভব হবে। জানা যায়, চীন ও বাংলাদেশের যৌথ বিনিয়োগে ২০২০ সালে ১৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করে।
কেন্দ্রটি চালানোর জন্য কয়লা কিনতে ঋণ দিয়ে আসছে চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট কোম্পানি (সিএমসি)। এপ্রিল পর্যন্ত কয়লার ৩৯০ মিলিয়ন ডলার বকেয়া বিল পরিশোধ না করায় কয়লা সরবরাহ বন্ধ করে দেয় সিএমসি। তবে নতুন করে কয়লা আমদানির জন্য সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক ১০০ মিলিয়ন ডলার সংস্থান করেছে।
ফলে এ মাসের শেষের দিকে পুনরায় চালু হতে পারে কেন্দ্রটির বিদ্যুৎ উৎপাদন। বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক গোলাম মাওলা বলেন, ইতোমধ্যে এলসি খোলা হয়েছে। সরকার ১০০ মিলিয়ন ডলারের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহের মধ্যেই কয়লা চলে আসলে আবারও চালু হবে কেন্দ্রটি।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন