করোনাকালীন শিক্ষার্থীদের কাটানো সময় ও অন্যান্য

করোনাকালীন শিক্ষার্থীদের কাটানো সময় ও অন্যান্য
MostPlay

২০২০সালের মার্চ মাসে যখন মহামারী মাথাচাড়া দিয়ে উঠে,তখন চারদিকে স্থবিরতা ছড়িয়ে পরে।চীনের উহান শহর থেকে শুরু করে উন্নত,অনুন্নত,এমনকি বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশও বাদ পরে নি করোনা মহামারীর প্রকোপ থেকে।বাংলাদেশের জনগণ পরিচিত হয় লকডাউন,আইসোলেশন,কোভিড,ইত্যাদি শব্দের সাথে।অফিস-আদালত,দোকানপাট থেকে শুরু করে বন্ধ করে দেয়া হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও।

সেই সুবাদেই অনেকেই ঘরে বসেই মনোযোগ দিয়েছে জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চায়,আত্ন-উন্নয়নে,ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য নিজেকে যোগ্য করে তোলা,ইত্যাদি ক্ষেত্রে।কথা বলেছি তাদের মধ্য থেকেই কিছু শিক্ষার্থীদের সাথে।

পরবর্তী সময়কালে ডিজিটালাইজেশন বা অনলাইন আর্নিং কতটা প্রভাব ফেলবে সে বিষয়ে কমবেশি সবাই বুঝতে পেরেছি।অনলাইন বিভিন্ন সাইট যেমন,এলএডিপি,ঘুরি লার্নিং ডট কম,টেন মিনিট স্কুল,বহুব্রীহি,মুক্তপাঠ,ইত্যাদি দেশীয় প্রতিষ্ঠান অনলাইনেই ডিজিটাল আর্নিং,সফট্ স্কিলসহ নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ের উপর দক্ষতা বৃদ্ধিতে জোর দিয়ে শিক্ষার্থীদের সাহায্য করেছে নতুন কিছু শিখতে।
ডিজিটাল মার্কেটিং,গ্রাফিক ডিজাইনিং,ওয়েব ম্যানেজমেন্ট,ভিডিও এডিটিং,ফটোগ্রাফি,কনটেন্ট রাইটিং,ল্যাংগুয়েজ লার্নিং ছাড়াও বিভিন্ন জনপ্রিয় বিষয়ে অনেক শিক্ষার্থী নিজ আগ্রহ ও চেষ্টায় হয়ে উঠেছে পারদর্শী।

স্নাতক পড়ুয়া নাজমুল হাসান জানান,তিনি লকডাউনের সময়টাকে কাজে লাগিয়ে গ্রাফিক ডিজাইনিং এবং ওয়েব ম্যানেজমেন্ট শিখেছেন।তার ধারণা পরবর্তী ডিজিটাল বিশ্বে এই শিক্ষা তাকে সাহায্য করবে ভবিষ্যৎ বেকারত্ব সমস্যার মোকাবিলা করতে।

শুধু রোজগারের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াও অনেকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন আত্ম-উন্নয়নে।গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের শিক্ষার্থী মালিহা নবনী বলেন,তার বইপোকা স্বভাবের তিনি পুরোদস্তুর সুবিধা যেমন নিয়েছেন লকডাউনকে কাজে লাগিয়ে,তেমনি তিনি তার বাবার সাহায্যে ঘরের কাজ এবং রান্না শিখেছেন।তার মতে,বেঁচে থাকার জন্য একদম বেসিক স্কিল শিখে ফেলা ভীষণভাবে তাকে সাহায্য করবে।

পবিপ্রবির শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিনের মতে,সফট্ স্কিল,আউটসোর্সিং এর পাশাপাশি শখেরও প্রাধান্য দেয়া উচিৎ।তাই তিনি তার পরিচিত এক আপুর সুবাদে ক্যালিগ্রাফি শিখেছেন।তার মনে হয়,শখের কাজকে প্রাধান্য দিলে একদিকে যেমন মনের খোরাক পূরণ হয়,তেমনি ভবিষ্যতে এটি অর্থ উপার্জনেরও মাধ্যম হতে পারে।

ঢাবি শিক্ষার্থী রাবেয়া আমিন মনে করেন,বদ্ধ ঘরে বন্দী থেকে আমরা যেই সুযোগটা পেয়েছি তাতে ইন্টারনেটই মূলত সাহায্য করেছে নতুন কিছু শিখতে।এর পাশাপাশি পুরোনো শেখা অনেক কিছুই নতুন করে ঝালাই করার সুযোগ হয়েছে।তিনি আশা করেন,এই বিষয়গুলো তাকে তার ব্যক্তিজীবন,সামাজিক জীবন,কর্মজীবন সবকিছুতেই ইতিবাচক সাহায্য করবে।

আজকের অবস্থানে দাড়িয়ে করোনা মহামারীর ভয়াবহতার সাথে গোটা একটি বছর কাটিয়ে দেবার পর যেমন সাধারণ জনজীবন বিপর্যস্ত হয়েছে,তেমনি সবথেকে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে বিভিন্ন স্কুল,কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষাজীবনে এক বিরাট পরিবর্তন আসার সাথে সাথে মুখ থুবড়ে পরেছে অনেকের মানসিক স্বাস্থ্য।

অনেক শিক্ষার্থী বেছে নিয়েছে স্বেচ্ছায় জীবনযুদ্ধের গতি একেবারেই থামিয়ে দেয়ার সুযোগ।এর মাঝেও অনেক শিক্ষার্থীরা বেছে নিয়েছিল জীবনকে আরেকটি সুযোগ দেয়ার প্রয়াস।কেউ শুনেছেন হাড়ি-কড়াইয়ের গল্প,তো কেউ ভালোবেসেছেন শখের কাজকে;তেমনি কারো বা হয়েছে নতুন সব দক্ষতার সাথে পরিচয়।ভবিষ্যৎ সংগ্রাম,যোগ্যতমের টিকে থাকার লড়াই,সবকিছু হারাবার উপক্রম হলেও আশাহত না হওয়া সেই সকল শিক্ষার্থী যেন এভাবেই এগিয়ে যেতে পারে পরবর্তী সময়ে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password