উল্লেখযোগ্য পরিমান অস্ত্র কেনা হবে তুরস্ক থেকে

উল্লেখযোগ্য পরিমান অস্ত্র কেনা হবে তুরস্ক থেকে

ফোর্সেস গোল ২০৩০ বাস্তবায়নে তুরস্ক থেকে উল্লেখ্যযোগ্য পরিমান অস্ত্র সরঞ্জাম ক্রয় করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ এমনটাই জানিয়েছেন তুরস্কে অবস্থান করা বাংলাদেশের রাস্ট্রদূত মুসদ মান্নান এবং  ডিফেন্স অ্যাটাশে  বিগ্রেডিয়ার জেনারেল রাশেদ ইকবাল। এই লক্ষ্যে ইতিমধ্যে তুরস্ক এর সাথে সামরিক সরঞ্জাম ক্রয় প্রযুক্তি বিনিময়সহ নানাবিধ চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।

উল্লেখ্য বাংলাদেশ ফোর্সেস গোল ২০৩০ অর্জনে স্বল্প মেয়াদি ধাপ থেকে এখন মধ্যমেয়াদী উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করছে যার আলোকে বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর অধীনে থাকা ৩ বাহিনী তথা সেনা নৌ এবং  বিমানবাহিনীর উন্নয়ন এবং  নতুন নতুন প্রযুক্তি এবং  অস্ত্র সংযোজনে বিশেষ জোর দেয়া হচ্ছে।

ভু-রাজনৈতিক অবস্থান বিবেচনায় বাংলাদেশ তার অস্ত্র ক্রয়ের ক্ষেত্রে তার পুরোনো  নির্ভশীলতার জায়গা থেকে সরে এসে এখন নতুন নতুন অস্ত্র সরবরাহকারী দেশের দিকে ঝুকছে যার অংশ হিসাবে তুরস্ক,  সার্বিয়ার মত উদীয়মান সামরিক সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী দেশ গুলোর প্রতি নজর দিচ্ছে৷ ইতিপূর্বে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সার্বিয়া থেকে ১৫৫মি.মি. সেল্ফ প্রপেলার কামান ক্রয় করে যেখানে চীন ২০১১ সাল থেকে তাদের তৈরী পিএলজে-০৪৫  এবং  পিএল-১৫ এর মত আর্টিলারী সিস্টেম সরবরাহের বেপারে বিভিন্ন ভাবে লবিং করে আসছিল।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ইতিপূর্বে ২০১৪-২০১৮ সময়কালে তুরস্ক থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমান আর্মোর প্রেট্রল ভ্যাহিক্যাল, গ্রাউন্ড বেসড হিউমার সার্ভ্যেল্যন্স রাডার, রোটারিং ইউএভি সিস্টেম এবং বোএমবি ডিস্পোজাল সরঞ্জাম ক্রয় করে। সম্প্রতি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তুরস্ক থেকে টিয়ারজি-৩০০ টাইগার মিসাইল সিস্টেম কেনে যার রেঞ্জ ১২০ কিমি। তুরস্কের একটি সংবাদ সংস্থার তথ্য মতে বাংলাদেশ এযাবৎকালে শুধু ২০২০--২০২১ তুরস্ক থেকে ৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মুল্যের সামরিক সরঞ্জাম ক্রয় করেছে  এবং আরও  ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মুল্যের বিভিন্ন সরঞ্জাম ক্রয় করার বিষয় প্রক্রিয়াধীন রয়েছে যার অধীন আরও  মাল্টিপল রকেট লঞ্চড সিস্টেম,  আর্মোর ভ্যাহিক্যাল সহ বিভিন্ন সরঞ্জাম ক্রয় করা হতে পারে।

তুরস্কে আরও একটি সোর্স মতে বাংলাদেশ  তুরস্কের তৈরী হাইসার শর্ট টু মিডিয়াম রেঞ্জ সার্ফেস টু এয়ার ডিফেন্স মিসাইল এর সফল পরীক্ষা পর্যবেক্ষন করেছে এবং ভবিষ্যতে এই সিস্টেম টি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এয়ার ডিফেন্স বহরে যুক্ত হবার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সম্প্রতি প্রযুক্তি ক্রয়ের মাধ্যমে নিজ্বস এন্টি ট্যাংক মিসাইল তৈরী জন্য  দরপত্র আহবান করেছে যার অধীনে ৩য় কোন দেশের সাথে সম্মিলিত ভাবে সেনাবাহিনী একটি নতুন এন্টি ট্যাংক মিসাইল প্রস্তুত করবে।

তুরস্কের রকেটসান এর ভাস্যমতে রকেটসান তুরস্কের অন্যতম বড় অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান যারা শুরু থেকে পশ্চিমা প্রযুক্তি নির্ভর অস্ত্র উন্নয়ন এবং  নির্মান করে আসছে।  ২০১৯ সালের তথ্য অনুসারে রকেটসান বিশ্বে ৮৯ নম্বর অস্ত্র নির্মাতা হিসাবে স্থান দখল করে আসছে। রকেটসান তআর অধীনস্থ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এর অধীনে  স্থল আকাশ এবং নেভাল অস্ত্র তৈরী এবং বিপনন করে থাকে।  রকেটসান তুরস্কের নেভির জন্য এ্যাটমাকা  নামে একটি এন্টিশীপ ক্রজ মিসাইল ডেভেলপ করেছে যা তারা তাদের বহরে থাকা আমেরিকান হারপুন ব্লক-৩ মিসাইলের রিপ্লেস হিসাবে ব্যবহার করতে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ নৌবাহিনী ইতিপূর্বে নিজেদের সামরিক জাহাজে ব্যবহারের জন্য নতুন অত্যাধুনিক এন্টিশীপ মিসাইল ক্রয়ের টেন্ডার দেয় যেখানে বিশেষভাবে তুরস্ক এবং  দক্ষিন কোরিয়ান এন্টিশীপ মিসাইলের বেপারে আগ্রহ দেখানো হয়েছে।  এ্যাটমাকা একটি ৪র্থ প্রজন্মের হাই-সাবসনিক এন্টি শীপ/ এন্টি সার্ফেস ক্রজ মিসাইল যার সর্বোচ্চ ২২০ কিমি দুরের টার্গেট কে ধ্বংস করতে সক্ষম।  প্রযুক্তিগত ভাবে এটি ফ্রান্সের এক্সোসেট ব্লক-৪ এবং  আমেরিকান হারপুন ব্লক-৩ মিসাইলের সম পর্যায়ের।

এছাড়া তুরস্কের আরেক কম্পানি বায়রাক্তার এর তৈরী টিবি-২ এবং টার্কিস এরোস্পেস এর তৈরী আনকা এস ইউএভি সিস্টেম বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর বহরে যুক্ত হতে পারে মনে করা হচ্ছে।

মমধ্যমেয়াদী এই পরিকল্পনায় বাংলাদেশ  সামরিক বাহিনী শুধুমাত্র বিদেশ নির্ভরতা থেকে সরে এসে আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠার পথে ধাপে ধাপে নিজেদের অস্ত্র নির্মান সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে। আর এই লক্ষ্যে বাংলাদেশের এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তুরস্ক পাশে থাকবে বলে জানিয়েছে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password