মজুত না থাকায় চালের দাম নিয়ন্ত্রণ হয়নি

মজুত না থাকায় চালের দাম নিয়ন্ত্রণ হয়নি

সরকারের কাছে মজুত না থাকায় চালের দাম নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।তিনি বলেছেন, চালের বাজার বাড়ার একমাত্র কারণ সরকারের গুদামে চাল না থাকা। যে সুযোগটা মিলার ও ব্যবসায়ীরা নিয়েছে। তারা একচেটিয়া সিন্ডিকেট করে বাজারে দাম বাড়িয়েছে।

মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) বাজারে বেড়ে যাওয়া চাল, আলু ও পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধির কারণ উদঘাটনের জন্য মাঠ পর্যায়ে গবেষণার ফলাফল প্রকাশ বিষয়ক জাতীয় কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) অডিটোরিয়ামে এ কর্মশালায় কৃষিমন্ত্রী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বিএআরসির গবেষণায় জানানো হয়, এ বছর চালের অস্বাভাবিক দামের কারণ মজুত প্রবণতা। করোনায় খাদ্য ঘাটতির শঙ্কায় ব্যবসায়ী ও মিল মালিকরা প্রচুর চাল মজুত করেছিল। এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার।কৃষিমন্ত্রী এ সময় বলেন, মিলাররা যেভাবে বাজারে সিন্ডিকেট করছে, তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এ কাজটা কার্যত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের। পাশাপাশি খাদ্য ও কৃষিমন্ত্রণালয় এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে শক্তিশালী মনিটরিং ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।

এদিকে, এ বছরও চাল মজুত বাড়ানো সম্ভব হয়নি বলে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমরা চাল সংগ্রহে ব্যর্থ হয়েছি। বাজারে দাম বেশি থাকায় আমন ও আউশের ধান মিলাররা সরকারকে দেয়নি। আমরা এক টনও সংগ্রহ করতে পারিনি।তিনি আরও বলেন, সঙ্কট মোকাবিলায় চাল আমদানির সিদ্ধান্তেও গতি আসেনি। ২৫ শতাংশ ভর্তুকি দিয়ে আমদানিকারকরা চাল আমদানি করে পত্তা করতে পারছে না। কারণ, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেশি। তারা আরও ভর্তুকি বাড়াতে বলছে।

পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ভারতের কারণেই শুধু পেঁয়াজের দাম বেড়েছিল। তারা হঠাৎ করেই পেঁয়াজ বন্ধ করে দিল। আগে থেকে জানালে আমরা বিকল্প ব্যবস্থা করতে পারতাম। তাই আমরা পেঁয়াজের জন্য ভারত নির্ভরতা কমাতে পাঁচ বছরের রোডম্যাপ নিয়েছি। এরপর নিজেরা স্বয়ংসম্পূর্ণ না হতে পারলেও এতোটা আমদানি নির্ভরতা থাকবে না।

গত বছর ২০২০ সালে দেশের বাজারে চাল, আলু ও পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিক ছিল। এখনও চালের দাম কমেনি। এ মূল্য বৃদ্ধির কারণ উদঘাটনের জন্য মাঠ পর্যায়ে গবেষণার করেছে বিএআরসি। চালের পাশাপাশি জানানো হয়েছে, পেঁয়াজের দাম বেড়েছে একই ধরনের ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে। এছাড়া ভারতের পেঁয়াজের আমদানি নির্ভরতা এবং সরকারের বাজার নিয়ন্ত্রণে কম সক্ষমতার কারণও ছিল দাম বাড়ার পেছনে।

এ কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি সচিব মেসবাহুল ইসলাম। সভাপতিত্ব করেন বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার।

এ কর্মশালায় বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ, খাদ্য অধিদফতর, খাদ্য ভবন, এফপিএমইউ-খাদ্য ভবন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোসহ বিভিন্ন গবেষণা ও সম্প্রসারণ প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ১০০ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও প্রতিনিধি অংশ নেন।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password