নাঈমের পরিচয় এখন ডলার নাঈম

নাঈমের পরিচয় এখন ডলার নাঈম

প্রথম শুরু ৩৩০০ টাকায় একটা আইপি কেনা থেকে। দিনে অনলাইনে কাজ করতে হতো ৯-১০ ঘণ্টা। প্রতি মাসে ছিল হাজার টাকার উপরে লোকসান। তবু হাল ছাড়েননি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এই শিক্ষার্থী।

দুই বছরের ব্যবধানে এখন তার অধীনেই ফ্রিল্যান্সিং করছেন প্রায় ১৫০ শিক্ষার্থী। নিজের একটা অফিসও হয়েছে। প্রতি মাসে তার আয় হয় প্রায় ৫০ হাজার টাকা। নাঈম থেকে তার নাম হয়ে গেছে এখন ‘ডলার নাঈমে’।

সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে জন্ম নাঈমের। সেখান থেকেই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে বর্তমানে পড়ছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের তৃতীয় বর্ষে।

২০১৭ সালে তিনি শুরু করেন এই কাজ। তখন তিনি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।

তিনি বলেন, ‘প্রথমদিকে দৈনিক ৯-১০ ঘণ্টা কাজ করেও আইপি কেনার টাকাই উঠাতে পারতাম না। এভাবে প্রতি মাসে লোকসান গুনতে হতো হাজার টাকারও বেশি’।

কিভাবে শুরু জানতে চাইলে নাঈম বলছিলেন, অনেকটা প্রয়োজন থেকেই এই পথে আসা। পড়াশোনার পাশাপাশি নিজেও যদি কিছু একটা আয় করতে পারি তাহলে পরিবারের জন্য সুবিধা হয়। এরপর কাজ শুরু করি ‘ইউএসএ সার্ভে’ সাইটে।

তিনি আরও বলেন, প্রথমে অন্যের অধীনে অনলাইন সার্ভেতে অংশগ্রহণ করতাম। পরে রিসেলার থেকে প্রোভাইডার হিসেবে যাত্রা শুরু করি।

এখন সারা বাংলাদেশের ১০ জন সফল এবং স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রোভাইডারের মধ্যে নিজেকে একজন দাবি করার যোগ্যতা রাখেন বলেও জানান তিনি। এর কারণ হিসেবে বলেন, তার ‘NRJ Empire’ প্রোভাইডারের মাধ্যমে প্রায় এক হাজারের বেশি মানুষ সার্ভে কাজ শিখেছে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে।

এরইমধ্যে নিজের গ্রামেও বেশ সাড়া ফেলেছেন নাঈম। গ্রামের বাজার হরিনাথপুরে ‘এনআরজে আইটি হাট অ্যান্ড কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার’ নামে একটি কম্পিউটার সেন্টার করেছেন তিনি। যেখানে শিক্ষার্থীরা ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিকস ডিজাইন এবং ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিতে পারছেন।

এদিকে ক্যাম্পাস খুললে রাজশাহীতেও একটি কম্পিউটার সেন্টার খোলার পরিকল্পনা করছেন তিনি। সেখানেও বিনামূল্যে ফ্রিল্যান্সিং সেখাবেন শিক্ষার্থীদের। এতে মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীরা পড়শোনার পাশাপাশি বাড়তি আয়ের সুযোগ পাবেন বলেও জানান তিনি।

নাঈম বলেন, ‘দেশের বাইরে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা নিজের লেখাপড়ার খরচ নিজেই বহন করেন। আমাদের দেশের ছেলেমেয়েদেরও সুযোগ রয়েছে স্বনির্ভর হওয়ার’।

একজন শিক্ষার্থী তিন-চার ঘণ্টা ফ্রিলান্সিং বা অনলাইন সার্ভেতে সময় দিলে মাসে পাঁচ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন অনায়াসে বলে জানান তিনি।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password