অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ হলে শহিদদের আত্মত্যাগ কলঙ্কিত হবে

অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ হলে শহিদদের আত্মত্যাগ কলঙ্কিত হবে

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও ‘আমার বিএনপি পরিবার’ এর উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা বসে নেই। তারা নানা ধরনের চক্রান্ত করছে। তাই ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যর্থ হলে গণঅভ্যুত্থানে আত্মত্যাগকারী আবু সাঈদ, মুগ্ধ, ফায়াজের আত্মা কষ্ট পাবে, তাদের আত্মত্যাগ কলঙ্কিত হবে।

গণতন্ত্রের পক্ষে যারা জীবন দিয়েছেন, স্বর্ণা দাসের মতো সার্বভৌমত্বের পক্ষে যারা জীবন দিয়েছেন তাদের স্মরণ রাখতে হবে। তাহলে এই দেশ বাঁচবে। সার্বভৌমত্ব বাঁচবে। স্বাধীন জাতি হিসেবে আমরা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারব। আর যদি সরকারের ব্যর্থতায় জুলাই গণহত্যায় জড়িতরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠে তবে, এটা হবে জাতির জন্য দুর্ভাগ্য।

বিএসএফের গুলিতে নিহত কিশোরী স্বর্ণা দাসের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ উপলক্ষে বড়লেখা ও জুড়ী উপজেলা বিএনপি আয়োজিত মৌলভীবাজারের জুড়ীর খাগটেকা বাজারে রোববার দুপুরে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠান শেষে স্বর্ণার পরিবারকে ‘আমার বিএনপি পরিবার’-এর পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা তুলে দেওয়া হয়।

মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির উপদেষ্টা ও কাতার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরিফুল হক সাজুর সভাপতিত্বে এবং বড়লেখা উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব ইকবাল হোসেন ও সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল কাদির পলাশের যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর উপদেষ্টা আলমগীর কবীর, আহবায়ক আতিকুর রহমান রুমন, সদস্য সচিব কৃষিবিদ মো. মোকছেদুল মোমিন মিথুন, সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সহ সভাপতি নাসির উদ্দিন আহমদ মিঠু, বড়লেখা উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি আলাল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান খয়রু, জুড়ী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান আজগর, মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রদলের রুয়েল আহমদ, সিলেট জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দিনার প্রমুখ।

অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, আগস্টের ৫ তারিখে জনগণের যে বিপ্লব হয়েছে, সেই বিপ্লবের পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি এ দেশের জনগণের বিশ্বাস এবং আস্থা রয়েছে। আমরা এখনো তাদের ওপর থেকে আস্থা হারাইনি; কিন্তু তারা কেমন যেন একটু গা-ছাড়া ভাব নিয়ে দেশ চালাচ্ছেন। এই যে সীমান্তে হত্যাকাণ্ড, এ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার নির্লিপ্ত কেন? জনগণ তো আপনাদের সমর্থন করেছে। কেন আপনাদের কণ্ঠে জোরালো আওয়াজ বের হলো না।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে দেশে অনেক সীমান্ত হত্যা হয়েছে। যে সরকার এসেছে, তারা প্রতিবাদ করেছে। শুধু শেখ হাসিনার সরকার ছাড়া। শেখ হাসিনার সরকার কোনো প্রতিবাদ করেনি। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তকে শান্তিপূর্ণ সীমান্ত করা নিয়ে অনেক কথা হয়েছে, আহবান জানানো হয়েছে। কিন্তু সীমান্ত হত্যা বন্ধ হয়নি।

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তকে পৃথিবীর সব চাইতে রক্তাক্ত সীমান্ত, সহিংস সীমান্ত এবং সব চাইতে মৃত্যু আর লাশের সারিতে পরিণত করেছে। প্রসঙ্গত, গত ১ সেপ্টেম্বর রাতে কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের লালারচক সীমান্ত দিয়ে মায়ের সঙ্গে অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার পথে বিএসএফের গুলিতে মারা যায় স্বর্ণা দাস। স্বর্ণা জুড়ী উপজেলার পশ্চিমজুড়ী ইউনিয়নের কালনীগড় গ্রামের বাসিন্দা পরেন্দ্র দাসের মেয়ে। সে স্থানীয় নিরোধ বিহারী উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password