রোববার দেশের সব কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি কোটা বিরোধীদের

রোববার দেশের সব কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি কোটা বিরোধীদের

রোববার সব কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনসহ অবস্থান ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরতরা।

কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা দুদিনের কর্মসূচি দিয়ে আজকের মতো শাহবাগ মোড় থেকে সরে গেছেন। কমসূচির মধ্যে রয়েছে, শুক্রবার অনলাইন-অফলাইনে বৈঠক, শনিবার বিকাল ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি এবং রোববার সব কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনসহ অবস্থান ধর্মঘট।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় শাহবাগ মোড়ে বিক্ষোভ সমাবেশের শেষে এ ঘোষণা দেন কোটা আন্দোলনের সমন্বয়কারী ঢাবি শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম। গত কয়েকদিন ধরে হাইকোর্ট কর্তৃক প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ ৫৬ শতাংশ কোটা পুনর্বহালের আদেশের বিরুদ্ধে এবং ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়কারী হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ১৯৭১ সালে বৈষম্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ হয়েছিল। কিন্তু এ কোটা পদ্ধতির ফলে চাষার ছেলে চাষা, রাজমিস্ত্রীর ছেলে রাজমিস্ত্রী, মজুরের ছেলে মজুর থেকে যাবে। আমরা একই প্রশ্নে পরীক্ষা দেবো, একই প্রশ্নে লিখবো, একই প্রশ্নে ভাইভার মুখোমুখী হবো। কিন্তু তারা কোটা সুবিধার কারণে একাই একশো সুবিধা পাবে, সেটা মেনে নেবো না। তাহলে কি জন্মই আমাদের আজন্ম পাপ?

তিনি বলেন, সরকার কোটা চায় না, প্রশাসন কোটা চায় না, শিক্ষকরা কোটা চায় না, বিশ্ববিদ্যালয় কোটা চায় না, তাহলে কোটা চায় কে? সরকার যেখানে কোটা পদ্ধতি বাতিল করেছে সেখানে কোন অদৃশ্য শক্তিবলে এই কোটা বহাল করা হয়? আমরা এই অদৃশ্য শক্তির হাত গুঁড়িয়ে দেবো।

নাহিদ ইসলাম বলেন, হাইকোর্ট শিক্ষার্থীদের প্রতি প্রহসন করছে। তারা কি এমন পরিপত্র জারি করলো যে ৫ বছরের মধ্যে সেটা আবার বাতিল করতে হচ্ছে? আমরা হাইকোর্টের বিরুদ্ধে না। তারা নিজেদের মতো কাজ করে যাবে কিন্তু আমরা আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের দাবি আদায় করে ঘরে ফিরব।

তিনি আরও বলেন, আমরা দুপুর থেকেই শাহবাগ মোড় অবরোধের পর আজকের মতো কর্মসূচি শেষ করছি। আজকে আমরা ফিরে যাচ্ছি কিন্তু আগামীতে আরও বেশি শক্তি সঞ্চয় করে রাজপথে নামবো। আজকে সারা দেশে শিক্ষার্থীরা নিজেদের দাবি আদায়ে আন্দোলন সংগ্রাম করেছে। আমরা আশা করি, আমাদের দাবি আদায়ের আগ পর্যন্ত তারা আমাদের সঙ্গে থাকবে। এসময় তিনি এই আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় হাইকোর্ট কর্তৃক প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ ৫৬ শতাংশ কোটা পুনর্বহালের আদেশের বিরুদ্ধে এবং ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে লাগাতার আন্দোলনের অংশ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়য়ের সেন্ট্রাল লাইব্রেরির সামনে থেকে মিছিল বের করেন।

মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বর-টিএসসি হয়ে বেলা সোয়া ১২টায় শাহবাগ মোড়ে যায়। এ সময় শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। শিক্ষার্থীদের অবরোধের ফলে আশেপাশের যান চলাচল বন্ধ হয়ে শাহবাগ অচল হয়ে পড়ে। দীর্ঘ ৬ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকার পরে অবরোধ তুলে নিয়ে কর্মসূচি সমাপ্ত করলে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password