সংসদে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব আনার দাবি চরমোনাই পীরের

সংসদে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব আনার দাবি চরমোনাই পীরের

ফ্রান্সে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শনের প্রতিবাদে চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ফ্রান্স দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচি থেকে দলটির আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম অবিলম্বে সংসদ অধিবেশনে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব আনার দাবি জানিয়েছেন।মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে ফ্রান্স দূতাবাস ঘেরাও পূর্ব সমাবেশে তিনি এ দাবি জানান।

মুফতি রেজাউল করিম বলেন, ‘বাংলাদেশ ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশ। ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতি রাসুল (সা.) কে নিয়ে ব্যঙ্গ উক্তি করার পর সারা বিশ্বের মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধানরা বিভিন্ন ব্যবস্থা নিলেও আমাদের দেশের সরকার এখনো নিশ্চুপ কেন? এদেশের মুসলমানরা আপনাদের সম্পর্কে বুঝে গেছে আপনারা কোন পক্ষের।’

তিনি বলেন, ‘আজকের সমাবেশ থেকে আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি অচিরেই সংসদে বিল উত্থাপনের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিন্দা জ্ঞাপন করতে। ফ্রান্স দূতাবাসের মাধ্যমে আমাদের এ বার্তা পৌঁছে দিতে হবে। ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতি যতক্ষণ প্রকাশ্যে ক্ষমা না চাইবে, তাকে ছাড় দেওয়া হবে না।’

তিনি ফ্রান্সের সঙ্গে বাংলাদেশের সব রকম কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবি জানিয়ে বলেন, ‘ওআইসিতে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব আনতে হবে। বাংলাদেশে রাসুল (সা.) এর বিরুদ্ধে কটূক্তিকারীদের বিচারের জন্য কঠোর আইন পাস করতে হবে। ফ্রান্সের পণ্য বর্জন করতে হবে। আমাদের প্রতিবাদ বিক্ষোভ অব্যাহত রাখতে হবে।’এসময় তিনি ঘোষণা দেন, আগামী বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) সারা দেশে জেলা ও মহানগরে এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে।

মঙ্গলবার বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেট থেকে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের পর একটি বিশাল মিছিল নিয়ে ফ্রান্স দূতাবাস ঘেরাওয়ের উদ্দেশ্যে গুলশানের দিকে রওনা হয় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতাকর্মীরা। মিছিলটি শান্তিনগর মোড়ে পৌঁছালে পুলিশ আটকে দেয়। এবং এখানেই তাদের কর্মসূচির ইতি ঘটে।

মিছিলে ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা- ‘বিশ্ব নবীর অপমান, সইবে নারে মুসলমান’, ‘ম্যাঁকোর চামড়া, তুলে নেব আমরা’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, মুসলমান জেগেছে’, ‘বয়কট বয়কট, ফ্রান্সের পণ্য বয়কট’, ‘ঘেরাও ঘেরাও ঘেরাও হবে, ফ্রান্সের দূতাবাস’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।বিক্ষোভে ফ্রান্সের পতাকা এবং দেশটির প্রেসিডেন্টে এমানুয়েল ম্যাক্রঁর কুশপুত্তলিকা আগুন দিয়ে পোড়ানো হয়েছে। সেই বিক্ষোভ থেকে ফ্রান্সের পণ্য বর্জনের আহ্বানও জানানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ১৬ অক্টোবর প্যারিসের উপকণ্ঠে দেশটির এক স্কুল শিক্ষকের শিরশ্ছেদ করে ১৮ বছর বয়সী এক কিশোর। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর বিতর্কিত কার্টুন শিক্ষার্থীদের প্রদর্শনের কারণে ক্ষুব্ধ ওই কিশোর স্কুল শিক্ষককে হত্যা করেন। পরে ফ্রান্সের সরকার ওই স্কুল শিক্ষককে দেশটির সর্বোচ্চ মরণোত্তর পদকে ভূষিত এবং বিভিন্ন ভবনের গায়ে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর বিতর্কিত সেই কার্টুন প্রদর্শন শুরু করে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় এই কার্টুনের প্রদর্শনের ব্যবস্থার নির্দেশ দেন।

ফরাসি প্রেসিডেন্টর এই অবস্থানের প্রতিবাদে আরব উপসাগরীয় অঞ্চলসহ মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ফ্রান্সের পণ্য বর্জনের হিড়িক পড়ে গেছে। অনেক খ্যাতনামা চেইন শপসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ফরাসি পণ্য বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে। করোনাকালে এই বর্জনের সুদূরপ্রসারী প্রভাব আঁচ করতে পেরে আরব দেশগুলোর প্রতি পণ্য বর্জন বন্ধের অনুরোধ জানিয়েছে ফ্রান্স।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password