বাংলাদেশের নির্বাচন কিভাবে হবে তা জনগণ ঠিক করবে: রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত

বাংলাদেশের নির্বাচন কিভাবে হবে তা জনগণ ঠিক করবে: রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত
MostPlay

বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার মন্টিটস্কি বলেছেন, বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন কিভাবে হবে- তা এ দেশের জনগণই ঠিক করবে। নির্বাচন এই দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এতে রাশিয়া হস্তক্ষেপ করবে না। সম্প্রতি গাজীপুর সিটির উপনির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। তাই আগামী সংসদ নির্বাচনও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে বলে আমার বিশ্বাস।

বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। ক্লাব সভাপতি সালাহ্উদ্দিন মো. রেজার সভাপতিত্বে সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন, ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি চৌধুরী ফরিদ ও রাশিয়ার অনারারি কানসাল স্থপতি আশিক ইমরান।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক শহীদুল্লাহ শাহরিয়ার। রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ায় রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে বাংলাদেশসহ এমন অনেক দেশ বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। অবরোধ বিশ্বব্যাপী খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তাকে বাধাগ্রস্ত করছে।’

রাশিয়া-ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশে রাশিয়ার সহায়তায় তৈরি পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ পিছিয়ে যাবে কিংবা বাধাগ্রস্ত হবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদুৎকেন্দ্রে চলতি বছরের অক্টোবরেই পূর্ব নির্ধারিত শিডিউল মোতাবেক পারমাণবিক জ্বালানি সরবরাহ শুরু করবে রাশিয়া। পাবনার কাছে স্থাপিত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের জাতীয় গ্রিডে ২ দশমিক ৪ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত হবে।

২০২০-২০২১ সালে এই প্ল্যান্টের উভয় রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল স্থাপনের কাজ সমাপ্ত হয়েছে।’ মন্টিটস্কি আরও বলেন, ‘রাশিয়ার বৃহত্তম গ্যাস অনুসন্ধানকারী প্রতিষ্ঠান গ্যাজপ্রমের সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো ২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশে সফলভাবে কূপ খনন করছে। সম্প্রতি ভোলা দ্বীপে ২০তম কূপ খননের কাজ শেষ হয়েছে। গ্যাজপ্রম বাংলাদেশে তার কার্যক্রমের পরিধি আরও বাড়াতে ইচ্ছুক। রাশিয়া বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

তিনি বলেন, ‘২০২২ সালে রাশিয়ার সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থাগুলো প্রায় ৯ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন গম সরবরাহ করেছে, যা বাংলাদেশের আমদানির ৪২ শতাংশ। এ ছাড়া ২০১৪ সাল থেকে রাশিয়াই বাংলাদেশের পটাশ সারের অন্যতম প্রধান রপ্তানিকারক দেশ। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়াতে রাশিয়ায় বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন এবং রাশিয়ান কোম্পানি ন্যাশনাল গ্রুপ এলএলসির মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। এতে বাংলাদেশ থেকে রাশিয়ায় আলু এবং অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ করা যাবে।’

তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার বাজারে বাংলাদেশে তৈরি ওষুধ, পাট, চামড়া এবং সামুদ্রিক খাবারের চাহিদা রয়েছে এবং এর যথেষ্ট সম্ভাবনাময় বাজার রয়েছে।’ প্রেস ক্লাব সভাপতি সালাহ্উদ্দিন মো. রেজা বলেন, বাংলাদেশ ও রাশিয়ার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। এ সম্পর্ক আগামীতে আরও সুদৃঢ় হবে।

সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে মিলিত হওয়ায় রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতকে তিনি ধন্যবাদ জানান। মতবিনিময় সভায় প্রেস ক্লাবের সাংস্কৃতিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন হায়দার, ক্রীড়া সম্পাদক এম সরওয়ারুল আলম সোহেল, গ্রন্থাগার সম্পাদক আহমেদ কুতুব, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক খোরশেদুল আলম শামীম, কার্যকরী সদস্য মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

সূত্রঃ যুগান্তর

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password