সেন্ট্রাল হসপিটালে ভুল চিকিৎসায় মারা যাওয়া মাহবুবা রহমান আঁখির মৃত্যুর কারণ জানাল ল্যাবএইড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের জনসংযোগ কর্মকর্তা চৌধুরী মেহের-এ-খোদা বলেন, ‘প্রসবোত্তর রক্তক্ষরণে আঁখির মৃত্যু হয়েছে। এ রকমটা স্বাভাবিকভাবেই হতে পারে।
আঁখির মৃত্যুর পর রবিবার (১৮ জুন) এক সংবাদ সম্মেলনে ল্যাবএইড হাসপাতালের পক্ষ থেকে জনসংযোগ কর্মকর্তা চৌধুরী মেহের-এ-খোদা এসব তথ্য জানান। আঁখির চিকিৎসায় ছয় সদস্য বিশিষ্ট একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হলেও মৃত্যু পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে কোনো চিকিৎসক আসেননি।
মেহের-এ-খোদা জানান, গত ১০ জুন বিকেল ৩টা ৩৯ মিনিটে মাহবুবা রহমান আঁখিকে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাকে অচেতন অবস্থায় লাইফ সাপোর্টে অ্যাম্বুল্যান্সে আনা হয়েছিল। তার প্রসবোত্তর রক্তক্ষরণ ও হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল। তিনি বলেন, ল্যাবএইড হাসপাতালের সিসিইউতে রোগীকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হচ্ছিল।
রোগীর অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ছয় সদস্য বিশিষ্ট একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয় এবং সে অনুযায়ী চিকিৎসা প্রদান অব্যাহত ছিল। ল্যাবএইডের জনসংযোগ কর্মকর্তা আরো বলেন, রোগীর ইউরিন আউটপুট বন্ধ থাকায় ডায়ালিসিস প্রদান করা হচ্ছিল। সকল প্রকার প্রচেষ্টার পরও রোগীর কোনো প্রকার উন্নতি পরিলক্ষিত হয়নি।
আজ দুপুর ১টা ৪৩ মিনিটে তিনি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান। জানা গেছে, তিন মাস ধরে সেন্ট্রাল হসপিটালের গাইনি ও প্রসূতি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. সংযুক্তা সাহার অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন আঁখি। তার শারীরিক অবস্থা স্বাভাবিক ছিল বলে চিকিৎসক জানিয়েছিলেন।
নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমেই সন্তান প্রসব সম্ভব বলে তাকে আশ্বস্ত করেছিলেন ডা. সংযুক্তা সাহা। প্রসব ব্যথা ওঠায় শুক্রবার (৯ জুন) রাত ১২টা ৫০ মিনিটে সেন্ট্রাল হসপিটালে ডা. সংযুক্তা সাহার অধীনে ভর্তি করা হয় আঁখিকে। তখন ডা. সংযুক্তা সাহা হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন না।
তার পরও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, তিনি আছেন এবং ওটিতে (অপারেশন থিয়েটার) কাজ করছেন। ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী মাহবুবা রহমান আঁখি (২৫) নরমাল ডেলিভারির আশায় কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে সেন্ট্রাল হসপিটালে গিয়েছিলেন। তার ইচ্ছা ছিল ডা. সংযুক্তা সাহার কাছে ডেলিভারি করাবেন। কিন্তু সেখানে ভুল চিকিৎসার শিকার হয়ে তিনি মারা যান। এর আগে তার সদ্যোজাত শিশুটিও মারা যায়।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন