দাম্পত্য জীবনে সুখে থাকার মন্ত্র

দাম্পত্য জীবনে সুখে থাকার মন্ত্র

প্রতিটি মানুষের নিজস্ব একটি দুনিয়া থাকে। একে অপরকে যতই ভালবাসুন না কেন, উভয়েরই একটু বিরতির প্রয়োজন আছে। এটি বিশ্বাসঘাতকতা নয়, শুধু নিজেদেরই কিছু সময় দেওয়া। বেশিরভাগ দম্পতিদের মতে এতে করে তাদের সম্পর্ক আরও ভালো হয়েছে।

কথায় আছে মানুষ মাত্রই ভুল। মানুষ তার জীবনের ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে। আবার অনেকে একই ভুল বার বার করে। সব সম্পর্কে কোন না কোন ভুল হয়ে থাকে। বিবাহিত জীবনও তার ব্যতিক্রম না। কিছু ভুল থাকে যা অনেক কিছুই কেড়ে নিতে পারে। পরে ভুল বুঝলেও আগের অবস্থান ফিরে পাওয়া সম্ভব হয় না। বিশেষ করে সাংসারিক জীবনে। যার ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে সন্তানদের উপর। তাই এই সম্পর্কের ক্ষেত্রে সব সময় যত্নশীল থাকা জরুরী। জানা যাক, বিবাহিত যুগলদের জন্য সুখি হবার মন্ত্র

মিথ্যা কথা বলা
যেকোন সুন্দর সম্পর্কের মূল্যে থাকে স্বচ্ছতা। বিবাহিত জীবনে এটিকে বেশি গুরুত্ব দেয়া উচিত। বিয়ে আপনি প্রেম করে করেন আর পারিবারিক পছন্দে। অনুষ্ঠানিকতার শেষে কথা একটাই সংসার মিয়া-বিবির যৌথ অবদান। তাই দু’জনকেই এই বিষয়টি বজায় রাখতে হবে। আর স্বচ্ছতা তখনই আসবে যখন একে অপরকে মিথ্যা বলা এড়িয়ে চলবে। দু’জন ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব, পছন্দ-অপছন্দ দুই রকম হতেই পারে। মিথ্যা দিয়ে সমস্যা সমাধান করতে চাইলে তা উল্টো জট পাকিয়ে দিবে। বরং আলাপ-আলোচনা করে একে অপরকে কিছু বিষয়ে ছাড় দেয়া শিখতে হবে। সাথে সাথে মেনে চলতে হবে।

দোষারোপ করা
ছেলে-মেয়ে কোন ভুল করলো কিংবা পরীক্ষায় নম্বর কম পেল। অমনি পতি দেব এসে বাচ্চাদের মা’কে বীর দর্পে দু’কথা শুনিয়ে দিল। কেন বাবা হিসেবে আপনি তাদের সময় দিচ্ছেন না? এমনটা করে নিজেদের সম্পর্ক যেমন খারাপ হবে সাথে সাথে বাচ্চারাও ভুল শিক্ষা পাবে। কেননা আপনারা যাই করবেন তাই তারা শিখবে। পরিবারে সুন্দর পরিবেশ তখনই সৃষ্টি হবে যখন ঘরে সন্তানদের দেখাশুনা হোক আর অন্যান্য কাজ, দায়-দায়িত্ব হোক একে অপরকে সহযোগিতা করবেন। এক পক্ষকে সব সময় দোষারোপ করা হলে তার ফলাফল সুন্দর কিছু আসবে না।

সম্মান না করা
সম্মান দিতে না পারলে কেনই বা বিয়ে করা। সফল দাম্পত্য জীবনের অন্যতম রহস্য এটি। একে অপরকে মূল্যায়ন করতে হবে। মনে যদি কোন বিষয়ে সন্দেহ জাগে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একান্তে বসে দুজনে কথা বলে সেই ব্যাপারে পরিষ্কার হয়ে যেতে হবে। 

আকর্ষণ বজায় রাখুন 
বিবাহিত জীবন যতদিনের হোকনা কেন একে অপরের প্রতি আকর্ষণ বজায় রাখুন। সাধারণ কিছু ভালোবাসা আর আবেগে জড়িয়ে রাখুন নিজেদের। নতুনত্বের প্রয়োজন নেই, রোমান্টিক মুহূর্ত তৈরি করুন আর উপভোগ করুন। 

ঝগড়া নয় কখনও
বিবাহিত যুগলের মধ্যে ঝগড়া হওয়া নতুন কোন ব্যাপার নয়। ঝগড়া কিন্তু বড় কোন বিষয় নিয়ে হয় না। কিন্তু মাঝে মাঝে এই সামান্য ব্যাপারে বেঁধে যাওয়া ঝগড়া মারাত্মক আকার ধারণ করে থাকে। আশ্চর্যের বিষয় হল, একটু বুদ্ধি খাটিয়ে চললেই এই সব সামান্য ব্যাপারের বড় ঝগড়া খুব সহজে এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব। এইসব ছোটখাটো বিষয় নিয়ে ঝগড়া করার চাইতে এই বিষয়গুলো এড়িয়ে গিয়ে হাসি ঠাট্টার ছলে সমাধান করে ফেলাই উত্তম।

নিজেদের মতো করে সময় কাটান
প্রতিটি মানুষের নিজস্ব একটি দুনিয়া থাকে। একে অপরকে যতই ভালবাসুন না কেন, উভয়েরই একটু বিরতির প্রয়োজন আছে। এটি বিশ্বাসঘাতকতা নয়, শুধু নিজেদেরই কিছু সময় দেওয়া। বেশিরভাগ দম্পতিদের মতে এতে করে তাদের সম্পর্ক আরও ভালো হয়েছে।

পারস্পরিক শখ 
স্বামী-স্ত্রী দুজনের শখ যে একই হবে তা কিন্তু নয়। আলাদা শখ বা পছন্দগুলো প্রকাশ করুন একে অপরের কাছে। এতে করে একে অপরকে জানার আকর্ষণ আরও বাড়বে।

ভবিষ্যতের কথা 
দাম্পত্য জীবনে সব চাইতে বড় বিষয় হচ্ছে ভবিষ্যতের ভাবনা ভাবা। ভবিষ্যতের কোন পরিকল্পনা দুজনে একসঙ্গে তৈরি করা। এতে করে সম্পর্কে গভীরতা বাড়ে এবং দাম্পত্য জীবনে একজন অপরজনের গুরুত্ব বুঝতে পারেন। এতে সুখি হন দম্পতিরা।

একসঙ্গে ঘুমানো
স্বামী-স্ত্রীকে একই বিছানায় ঘুমাতেই হবে এমন কোন কথা নেই। সবার আরাম একই রকমে হয় না তাই প্রয়োজনে আলাদা ঘুমানোকে বড় ব্যাপার করে না দেখে সুবিধার কথা ভাবুন।

বিষয় গুলো খুব সাধারণ হলেও, যেসকল দম্পতির মধ্যে এরূপ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে তাদের দাম্পত্য জীবন সুখের হয়ে থাকে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password