বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শেখ মো. কাওছার আহমেদ বলেছেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ না করা হলে রাজপথ ছাড়ব না। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ কিংবা তার ঘোষণা না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন আরও জোরদার করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ১৭ দিন ধরে চলমান অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি একথা বলেন। শেখ মো. কাওছার আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, রাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্য নিরাপত্তার বিষয় সামনে রেখে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও পুলিশের পক্ষ থেকে কর্মসূচি স্থগিত রাখতে বলা হয়েছিল। কিন্তু যেহেতু দাবি আদায় হয়নি এবং লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি চলছে, তাই স্বল্প পরিসরে হলেও অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পুলিশের পক্ষ থেকে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি পাওয়া গেছে। তবে ৬০ জনের নামের তালিকা সরবরাহ করা হয়েছে। তিনি বলেন, শিক্ষামন্ত্রী একের পর এক উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন। পাশাপাশি তার বিভাগ হয়রানিমূলক সার্কুলার জারি করছে। সুতরাং দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্লাসে ফিরে যাওয়ার সুযোগ নেই।
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির এই নেতা বলেন, আমরা জেনেছি, প্রধানমন্ত্রী দেশে এসেছেন। আমরা প্রত্যাশা করি, তিনি পাঁচ মিনিটের জন্য আমাদেরকে সাক্ষাতের অনুমতি দেবেন এবং আমাদের যে যৌক্তিক দাবিগুলো আছে সেগুলো মেনে নেবেন। ইতোমধ্যে তিনি দুইটি কমিটি করার নির্দেশ দিয়েছেন, কিন্তু কমিটি এখনো হয়নি।
এরমধ্যে আমাদের এই অবস্থান কর্মসূচি বানচাল করার ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি আরও বলেন, আপনারা দেখেছেন গ্রীষ্মের ছুটি বন্ধ করে দিয়েছে, তা শীতকালে নিয়ে গেছে। স্কুলের শিক্ষকদের অনুপস্থিতির তালিকা তৈরি করছে। ম্যানেজিং কমিটির কাছে চিঠি দিয়েছে। সর্বশেষ আজ থেকে গাজীপুরে ওয়ার্কশপ শুরু করেছে। যাদের নিয়ে এই ওয়ার্কশপ করার কথা, তারা রাজপথে আন্দোলন করছে। ঢাকায় এত জায়গা থাকতে গাজীপুরে এই ওয়ার্কশপ করা আমাদের আন্দোলন বানচাল করার একটি প্রচেষ্টা।
এদিকে গত ১১ জুলাই সারা দেশ থেকে বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঢাকায় এসে আন্দোলনে যোগ দেন। বৃহস্পতিবার এই কর্মসূচির ১৭তম দিন পার হয়েছে। আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষকরা জানান, প্রায় সব স্কুলে অঙ্গীকারনামার একটি ফরম বানানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, জাতীয়করণ দাবিতে চলমান আন্দোলনে ক্লাস বয়কট করে শিক্ষক-কর্মচারীরা অংশ নেবেন। যতদিন আন্দোলন চলবে, কেউ ক্লাসে ঢুকবেন না।
এতে সই করে প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। যাদের সাধ্য আছে, তারা ঢাকায় এসে কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। তারা জানান, সাড়ে ১২ হাজার টাকায় ১৫ দিনও চলা যায় না। সেখানে এক মাস চলব কিভাবে? এ বেতনে চাকরি করছেন মাধ্যমিক শিক্ষকরা। এটা লজ্জার। এ বৈষম্য দূর না করা পর্যন্ত আমরা স্কুলে ফিরে যাব না। আমাদের সঙ্গে ছাত্র-ছাত্রীরাও আছে, অভিভাবকরাও আছেন। গভর্নিং বডির সদস্যদেরও সম্মতি আছে। শুধু শিক্ষামন্ত্রী আর মাউশি আমাদের সঙ্গে নেই। তাদের কারণেই জাতীয়করণ আটকে আছে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন