বাড়িতে সর্পগন্ধা থাকলে সাপ আসেনা

বাড়িতে সর্পগন্ধা থাকলে সাপ আসেনা

কথিত আছে, যে বাড়িতে সর্পগন্ধা থাকে সে বাড়িতে সাপ আসেনা। সাপসহ যে কোনো বিষধর পোকা মাকড়ের কামড়ের প্রতিষেধক হিসেবেও এই ভেষজ উদ্ভিদ দারুণ কার্যকর। এটি একটি উপকারী উদ্ভিদ। সর্পগন্ধা একটি চিরহরিৎ জাতীয় গাছ। সর্পগন্ধা আমাদের অনেকের পরিচিত একটি ভেষজ।

ঔষধি গুণের জন্য এই গাছ বিখ্যাত। বাংলা নাম-সর্পগন্ধা, ছোট চাঁদ, নাক ফুলি, ইউনানি নাম-উসরোল, আয়ুর্বেদিক নাম-সর্পগন্ধা, ইংরেজি নাম-Sankeroot, বৈজ্ঞানিক নাম-Rouvolfia serpentana (Linn) Benth, পরিবার-Apocynaceae। অনেকেই একে সর্পাদনী, নাকুলি, সুগন্ধা, রক্তপত্রিকা, ঈশ্বরী, অহিভুক, সর্পক্ষী, চন্দ্রিকা, পাতালগারুদা, ধনবরুয়া নামে ডেকে থাকে ।

এই গাছটি সব জায়গায় জন্মে না। উদ্ভিদটি বাংলাদেশ, ছাড়ও ভারত, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার, নেপাল, ভুটান, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ায়সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে জন্মে। আমাদের দেশে খাসিয়া পাহাড়ের পাদদেশ, রাঙামাটি এবং বান্দরবান এলাকায় কিছু কিছু দেখা যায়। এই গাছটি সাধারণত ঝোপ আকারের হয়ে থাকে। গুল্মজাতীয় এই গাছটির পাতা ছোট ছোট এবং লম্বা আকৃতির হয়ে থাকে।

সাধারণত এর শিকড় ও পাতা ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। অনেক প্রাচীন আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে এর গুণের কথা পাওয়া যায়। এটি ১৫-৪৫ সে.মি. পর্যন্ত উঁচু হয়। বিশেষ শাখাপ্রশাখা হয় না। মালতী ফুল গাছের মতো পাতাগুলো কাণ্ডের চারিদিকে গজায়। কাণ্ড শীর্ষে পুষ্প দণ্ডে মৃদু গন্ধময় হালকা গোলাপি রং এর গুচ্ছাকারে ফুল প্রস্ফুটিত হয়।

গ্রীষ্মকাল ফুল ফোটার প্রধান মৌসুম। বর্ষার শেষ দিকে ফুল থেকে ফল হয়। কাঁচা ফলের রং সবুজ, পাকলে কালো জামের মতো রং ধারণ করে। ফলের মধ্যে জোড়ায় জোড়ায় গাছ থাকে। এর মূল দেখতে মোটা, এর ব্যাস ২-৪ সে.মি. পর্যন্ত হয়, তবে ভঙ্গুর এবং রং ধূসর ও পীত বর্ণের। কাঁচা মূলের গন্ধ কাঁচা তেঁতুলের মতো।

বিষধর সাপে কামড়ালে হৃদযন্ত্রে তীব্র বায়ুর চাপ সৃষ্টি হয়, যার ফলে রক্তের সঞ্চালন ক্রিয়া অসম্ভব বেড়ে যায় এবং এক সময় হৃদ্‌যন্ত্র বন্ধ হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে সর্পগন্ধা বায়ুচাপ দমন করে হৃদ্‌যন্ত্রের ক্রিয়া স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। এর ফলে চিকিৎসকরা চিকিৎসা করার সময় পান।

অতিরিক্ত আহরণের ফলে এটি প্রায় বিলুপ্তির পথে। এর মূল অনিদ্রা, রক্তচাপ, উত্তেজনা ও পাগলামি ছাড়াও দুশ্চিন্তা ও মূর্ছা রোগসহ বিভিন্ন স্নায়ুবিক রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এটা একটি বিষাক্ত উদ্ভিদ, তাই এটি শুধু অভিজ্ঞ চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করার পরে গ্রহণ করা উচিত।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password