নওগাঁর বদলগাছী মহিলা কলেজে অধ্যক্ষ পদ নিয়ে তৈরি হয়েছে তীব্র দ্বন্দ্ব। কলেজে একসাথে দুইজন নিজেকে অধ্যক্ষ দাবি করায় চেয়ারে বসা নিয়ে ধাক্কাধাক্কি ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।
বুধবার সকালে এইচএসসি পরীক্ষা চলাকালে এমন ঘটনা ঘটে। এ সময় কলেজের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক ইমামুল হোসেন নিজেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দাবি করে অধ্যক্ষ মাহবুব আলমকে চেয়ার ছাড়তে বলেন।
তিনি পাশের একটি চেয়ার নিয়ে বসে জানান, এডহক কমিটির পুরোনো সভাপতি লুৎফর রহমান তাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের শিক্ষকদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়লে একপর্যায়ে ইমামুল হোসেন কলেজ ত্যাগ করেন। স্থানীয়রা জানান, এই ঘটনায় কলেজে শিক্ষার পরিবেশ চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। প্রায় প্রতিদিন কোনো না কোনো বিরোধ চলছে। শিক্ষার্থীরা বলছে, তারা শান্ত পরিবেশে ক্লাস করতে চায়।
কলেজ থেকে জানায়, ২০২৩ সালের ২৭ আগস্ট অধ্যক্ষ মাহবুব আলমের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তুলে কিছু শিক্ষার্থী মিছিল-মিটিং করে। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। এরপর নতুন এডহক কমিটি গঠিত হয় এবং সহকারী অধ্যাপক মমতাজ জাহানকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ করা হয়। তবে মাহবুব আলম জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযোগ জানালে তাদের পক্ষ থেকে নতুন এডহক কমিটি অনুমোদন করা হয়। সেই কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাহবুব আলম পুনরায় অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পান।
ইমামুল হোসেন দাবি করছেন, হাইকোর্টে রিট করার পর পুরোনো কমিটির সভাপতি তাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। যদিও সেই কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে বলে দাবি করছে বর্তমান কমিটি। বর্তমান অধ্যক্ষ মাহবুব আলম বলেন, “জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী আমাকে বহাল রাখা হয়েছে। রিটের শুনানি এখনো হয়নি, কিন্তু তার আগেই তারা চেয়ারে বসার চেষ্টা করছে।”
এডহক কমিটির বর্তমান সভাপতি ফজলে হুদা বাবুল বলেন, “হাইকোর্টে দুই পক্ষের শুনানি হবে। আদালত যার পক্ষে রায় দেবে, তিনিই দায়িত্ব পালন করবেন। তার আগেই চেয়ার দখলের চেষ্টা দুঃখজনক।” শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বলছেন, দ্রুত বিরোধের সমাধান না হলে কলেজের শিক্ষার পরিবেশ পুরোপুরি ভেঙে পড়বে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন