টিকটকারের প্রেমের ফাঁদে জল্লাদ শাহজাহানের সর্বনাশ। প্রেমের ফাঁদে পড়ে সব হারালেন আলোচিত ও বিখ্যাত জল্লাদ শাহজাহান। জল্লাদ শাহজাহান, কারাগারে একের পর ফাঁসি কার্যকরে অংশ নিয়ে পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন। দীর্ঘবছর কারাভোগের পর ২০২৩ সালের ২৮ জুন মুক্তি পান শাহজাহান। পরে একটি চায়ের দোকান দিয়ে ফেরেন স্বাভাবিক জীবনে। এ সময় এক টিকটকার তরুণীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে, তা থেকেই বিয়ে। তবে বিয়ে করেই সর্বস্ব হারিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
সোমবার (০১ এপ্রিল) এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, একদিন কেরানীগঞ্জের কদমতলি থেকে যাওয়ার পথে সিএনজি অটোরিকশার মধ্যে একটি ভ্যানিটি ব্যাগ পাই। ব্যাগে থাকা কাগজপত্র থেকে পাওয়া ফোন নম্বরে কল করে আমি ব্যাগটি নিয়ে যেতে বলি। ব্যাগের মালিক সাথী আক্তার ফাতেমা, ওরা যে এত বড়ো একটা প্রতারক চক্র তা আমি জানতাম না। ওদের চক্রে কয়েকজন নারী ও পুরুষ আছে। তারাই বিয়ের সময় সাক্ষী হয়েছে এবং আমার বিরুদ্ধে করা মামলায়ও সাক্ষী হয়েছে।
এ সময় জল্লাদ শাহজাহান অভিযোগ করে বলেন, সাথী আক্তার ফাতেমার আগেও পাঁচ জায়গায় বিয়ে হয়েছে বলে শুনেছি। তিনি বলেন, ব্যাগ নিতে আসার পর মেয়ে ও তার মায়ের সঙ্গে আমার পরিচয়। পরে মেয়েটির সঙ্গে আমি বেশ কয়েকবার কথা বলি। এক পর্যায়ে মেয়ে ও তার মা জুরাইন থেকে গোলামবাজার চলে আসে। তার মা আমার বাসায় রান্নার কাজ নেন।
শাহজাহান জানান, পরিচয়ের দেড় মাস পর ২১ ডিসেম্বর পাঁচ লাখ টাকা দেনমহরে আমার বিয়ে হয়। তবে মা-মেয়ে বিয়ের আগেই নানা কৌশলে আমার থেকে দেড় লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়, আর বিয়ের দিন একশত টাকার তিনটি ষ্ট্যাম্পে একটি অঙ্গীকারনামা স্বাক্ষর করে আমার গোছানো আরও দশ লাখ টাকা নেন।
বিয়ের প্রায় দুই মাসের মাথায় আমার স্ত্রী নগদ সাত লাখ টাকা ও স্বর্ণ অলংকার নিয়ে পালিয়ে যান। আমি এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করতে গেলে তারা নেয়নি, পরে জানতে পারি ১৫ ফেব্রুয়ারি সাথী আক্তার ফাতেমা আমার বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে মামালা করেছে। এ সময় বিভিন্ন অপরাধীদের ফাঁসি কার্যকরের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, শেখের বেটির কাছে আমার চাওয়া এসবের পুরস্কার হিসেবে আমাকে একটি আবাসন ও জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত যেন চলতে পারি তার জন্য একটি সহজ কর্সংস্থানের ব্যবস্থা করে দিন।
প্রসঙ্গত, প্রতারণার অভিযোগে স্ত্রী সাথী আক্তার ফাতেমা ও শাশুড়ি শাহিনুর বেগমসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন ৪৪ বছর জেল খেটে ৯ মাস আগে কারামুক্ত হওয়া জল্লাদ শাহজাহান ভূঁইয়া। রোববার (৩১ মার্চ) ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এ. কে. এম. রকিবুল হাসানের আদালতে এ মামলা করেন তিনি।
আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে অভিযোগেরে বিষয়ে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে ২৭ জুন প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। অন্য আসামিরা হলেন-শাহজাহানের শ্বশুর বাড়ির স্বজন দীন ইসলাম, আজিদা বেগম, রাসেল ও বাবলু।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন