অহংকার নয় `প্রিয় রাজনৈতিক গুরুঅভিভাবক ও পথ প্রদর্শককে স্মরণ`

অহংকার নয় `প্রিয় রাজনৈতিক গুরুঅভিভাবক ও পথ প্রদর্শককে স্মরণ`

প্রতিনিধি: রাফিকুল ইসলাম আরজু )  আজ আমার মনটা খুবই খারাপ । ২০০৮ সালের এই দিনে আমার প্রান প্রিয় রাজনৈতিক গুরু , অভিভাবক, পথ প্রদর্শক , সুখে দুখে যাকে  পাশে পেয়েছি,নিরাহংকার সাদা মনের মানুষ ভিপি কামাল আজকের এই দিনে আমাদের সবাইকে কাঁদিয়ে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে না ফেরার দেশে গমন করেন।সর্বস্তরের মানুষের কাছে তুমুল জনপ্রিয় নেতা তারিকুল ইসলাম কামাল ( ভিপি কামাল) পিতা গোলাম কুদ্দুস মিয়া ও মাতা কুলসুম বেগমের কোল আলোকিত করে ১৯৬৯ সালে ফারিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলার কামারগ্রামে জন্মগ্রহন করেন। ২ ভাই ও ৮ বোনের মধ্য তিনি ছিলেন তৃতীয়।

কামার গ্রাম কাঞ্চন একাডেমিতে ৭ম শ্রেনীতে অধ্যায়নরত অবস্থায় ১৯৮৪ সালে চতুল উচ্চ বিদ্যালয় ভর্তি হন । বড় ভগ্নিপতি গোলাম সারওয়ার মৃধার সান্নিধ্যে থেকে ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন ।পর্যায়ক্রমে বোয়ালমারী থানা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক , সভাপতি ও ১৯৯৩ সালে বোয়ালমারী সরকারী কলেজের ভিপি নির্বাচিত হন 

মানুষকে আপন করে নেওয়ার সন্মোহনি শক্তি ছিল প্রখর । তাঁর স্বভাব সুলভ আচরণ। দেখা হলেই দাদা ভাই বলে কথা বলতেন । মানুষ মরে যায় ,রেখে যায় স্মৃতি।যে স্মৃতি শুধুই কাঁদায়। তাকে নিয়ে আমার অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে । স্মৃতি সেটা তো নির্জীব , সে কাঁদে না শুধু কাঁদায়।
একজন সৃজনশীল ও বলিষ্ট রাজনীতিবিদ হিসেবে তাকে কাছে থেকে দেখেছি। কবি নাজমুল হক নজীর ভাইয়ের সাথে কামাল ভাই আমাকে পরিচয় করে দিয়েছিলেন , নজীর ভাই তখন চন্দনার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক , কামাল ভাইয়ের উৎসাহে এবং তাঁর পীড়াপীড়িতে আমাকে নজীর ভাই সাংবাদিক হিসেবে নিয়োগ দেন ।

আমার রিপোর্ট প্রকাশিত হলে পত্রিকা নিয়ে বাড়িতে আসতেন এবং আমাকে পড়তে বলতেন। লেখা কোথায় সংশোধন করা হয়েছে তিনি সেটা আমাকে ধরিয়ে দিতেন। সেখান থেকেই কামাল ভাইয়ের কাছে রিপোর্টিংয়ে সহযোগিতা পেয়েছি।রিপোর্টার থেকে একজন সম্পাদক হয়ে ওঠার নেপথ্যে যে দু-চারজনের তুমুল উৎসাহ ও সহযোগিতা পেয়েছি তাদের অন্যতম তারিকুল ইসলাম কামাল ।
পৃথিবীর সব ঋণ শোধ করা যায়, ভালোবাসার ঋণ কখনোই শোধ করা যায় না ।

রাজনীতি নিয়ে আমরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা, দিনের পর দিন আলোচনা করেছি। কখনো চতুল,কখনো বোয়ালমারী, কখনো খান বেলায়েত হোসেন ( সাবেক আলফাডাঙ্গা থানা আওয়ামীলিগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ) এর বাসায় কখনো কামাল আতাউর রহমান সাইক্লোন ( সাবেক সভাপতি যুবলীগ , আলফাডাঙ্গা থানা শাখা ) বাসায় বসে আলোচনা করেছি। । আমি তখন আলফাডাঙ্গা থানা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ -সম্পাদক।

সেই সময়ে রাজনীতি এতটাই কার্যকর ছিল, এতটাই বিতর্কমুখর ছিল; সেটা এখন ভাবাই যায় না । তিনি নিয়মিত রাজনৈতিক বই পড়তেন । বোয়ালমারী সরকারী কলেজের ছাত্রদের নিজস্ব স্বকীয়তা, সৃষ্টিশীলতা, সৃজনশীলতা দিয়ে গড়ে তোলার চেষ্টা করেন।

তার নেতৃত্বেই ছাত্রলীগ সাধারণ ছাত্রদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে,মানুষের অন্তরে স্থান করে নেয়।অনেক সময় তাকে ছাড়া সাধারন ছাত্ররা কলেজে যেতে ভয় পেত ছাত্রদলের ক্যাডারদের ভয়ে । তার সুঠাম দেহ ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ছাত্রলীগ দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলে। এই জনপ্রিয়তা ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারনেই সে বিপুল ভোটে ভিপি নির্বাচিত হন ।

জনপ্রিয়তার জন্য ছাত্রদলের ক্যাডারদের আক্রমনের স্বীকার হন এবং হাতের কব্জির হাড় কেটে যায় সেখানে ইনফেকশন এবং ক্যানসার ধরা পড়ে । বিজি প্রেস কোয়াটারে ছোট বোনের বাসায় অবহেলায় ,অনাদারে , অভিমানে বিনা চিকিৎসায় পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন । একদিন দুঃখ করে বলেছিলেন রাজনীতির জন্য আমার জীবন আজ বিপন্ন কিন্তু কোন নেতা তো আমার খবর নিল না । পার্থিব জগতের লোভ-লালসা তাকে স্পর্শ করেনি।

জীবন ভর দিতে দেখেছি কিন্তু নিতে দেখিনি কখনো । আজ আপনি আমাদের মাঝে নেই কিন্তু রেখে গিয়েছেন আদর মাখা ভালোবাসা , স্মৃতি , সেই স্মৃতি নিয়ে আজও আমি বেঁচে আছি । যত দিন বেঁচে থাকব আপনার জন্য দোয়া করবো। আল্লাহ তায়ালা যেন আপনাকে জান্নাতের উচ্চ আসন দান করেন

সুত্র: আর এ‌ম জিবি নিউজ

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password