গরম–গরম শিঙাড়া

গরম–গরম শিঙাড়া

শিঙাড়ায় পাওয়া যায় নানা স্বাদ। উপকরণের একটু অদল-বদলই নিয়ে আসে ভিন্নতা। সকালে, বিকেলে চায়ের সঙ্গে এই একটি খাবার আমাদের জীবনযাপনে প্রবেশ করেছে কয়েক যুগ আগে। এখনো সেটি জনপ্রিয়। রেসিপি দিয়েছেন আফরোজা নাজনীন

নাগা মরিচের শিঙাড়া

উপকরণ

খামিরের জন্য: ময়দা ২ কাপ, সাদা তেল ২০০ গ্রাম, লবণ স্বাদমতো, চিনি স্বাদমতো, বেকিং পাউডার আধা চা-চামচ ও পানি পরিমাণমতো।

পুরের জন্য: গাজর ১টি, আলু ৪টি (বড়), মটরশুঁটি ১ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচকুচি ৩টি, নাগা মরিচকুচি আধা চা-চামচ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, পাঁচফোড়ন ১ চা-চামচ, পেঁয়াজকুচি ১ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদ অনুযায়ী, চিনি স্বাদমতো, ধনেভাজা গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, জিরাভাজা গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, গরমমসলাগুঁড়া আধা চা-চামচ, হলুদগুঁড়া আধা চা-চামচ, কাজুবাদাম ভাজা ১ টেবিল চামচ, ধনেপাতাকুচি ১ টেবিল চামচ ও তেল ২ টেবিল চামচ।

প্রণালি

প্রথমে ময়দা, সাদা তেল, লবণ, চিনি, বেকিং পাউডার দিয়ে ভালো করে ময়ান দিয়ে নিন। পরিমাণমতো পানি দিয়ে মেখে কিছুক্ষণ ঢেকে রেখে দিন। তারপর লেচি করে নিন, একটা লেচিতে দুটো শিঙাড়া তৈরি হবে। এবার পুরের তরকারি করে নিন। প্রথমে আলু, গাজর ছোট টুকরা করে কেটে দিন। তারপর তেল গরম করে পাঁচফোড়ন ফোড়ন দিয়ে নিন। পেঁয়াজকুচি দিয়ে নেড়ে ভেজে সবজিগুলো দিয়ে কিছুক্ষণ ভাজুন।

অল্প ভাজা হলে নাগা মরিচকুচি, কাঁচা মরিচকুচি, আদাবাটা, লবণ, চিনি, হলুদ, ধনেপাতাকুচি দিয়ে নাড়াচাড়া করে পানি দিয়ে ঢেকে দিন। কিছুক্ষণ পর ঢাকনা তুলে ভাজা ধনে-জিরাগুঁড়া ও গরমমসলাগুঁড়া, কাজুবাদাম দিয়ে ভালো করে নেড়ে একদম মাখা মাখা করে নামিয়ে নিন। ময়দার লেচিগুলো বেলে নিতে হবে।

মাঝবরাবর কেটে নিন। একটু লম্বা করে বেলতে হবে। এবার এক খণ্ড নিয়ে তিন কোনা ভাঁজ করে তাতে পুর ভরে দিন। পুর ভরার পর হাতে একটু পানি নিয়ে শিঙাড়ার মুখটা বন্ধ করে দিতে হবে। এবার গরম ডুবো তেলে একটি একটি করে শিঙাড়া দিয়ে হালকা আঁচে ভাজতে হবে বাদামি রং করে। এবার ভাজা হয়ে গেলে নামিয়ে নিয়ে গরম-গরম পরিবেশন করুন চাটনি বা সসসহ।

কলিজার শিঙাড়া

 

উপকরণ

খামিরের জন্য: ময়দা ২ কাপ, সাদা তেল ২০০ গ্রাম, বেকিং সোডা সিকি চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো, চিনি স্বাদমতো, বেকিং পাউডার আধা চা-চামচ ও পানি পরিমাণমতো।

পুরের জন্য: সেদ্ধ কলিজা ২৫০ গ্রাম, গাজর ১টি, আলু ২টি (বড়), কাঁচা মরিচকুচি ৩টি, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা আধা চা-চামচ, মরিচগুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো, চিনি স্বাদমতো, ধনেগুঁড়া ১ টেবিল চামচ, জিরাগুঁড়া ১ টেবিল চামচ, গরমমসলাগুঁড়া আধা চা-চামচ, হলুদগুঁড়া আধা চা-চামচ, পেঁয়াজকুচি ১ টেবিল চামচ, তেজপাতা ১টা, এলাচি ২টা, দারুচিনি ২–৩টি, লবঙ্গ ৪-৫টি ও তেল পরিমাণমতো।

প্রণালি

প্রথমে ময়দা, সাদা তেল, লবণ, চিনি, বেকিং পাউডার, বেকিং সোডা দিয়ে ভালো করে ময়ান দিয়ে নিন। পরিমাণমতো পানি দিয়ে মেখে কিছুক্ষণ ঢেকে রেখে দিন। তারপর লেচি করে নিন, একটা লেচিতে দুটো শিঙাড়া তৈরি হবে। এবার পুরের তরকারি করে নিন। কলিজা একটু লবণ দিয়ে সেদ্ধ করে পানি ফেলে দিন।

তারপর তেল গরম করে পেঁয়াজকুচি দিয়ে দিন। এতে কাঁচা মরিচকুচি, তেজপাতা, এলাচি, দারুচিনি, লং, আদা-রসুনবাটা, লবণ, চিনি, হলুদ, মরিচগুঁড়া, ধনেগুঁড়া, জিরাগুঁড়া দিয়ে নাড়াচাড়া করে একটু পানি দিয়ে কষিয়ে নিন। সেদ্ধ কলিজা দিয়ে নেড়েচেড়ে ঢেকে দিন।

কিছুক্ষণ পর ঢাকনা তুলে গরমমসলাগুঁড়া দিয়ে ভালো করে নেড়ে একদম মাখা মাখা করে নামিয়ে নিন। এবার ময়দার লেচিগুলো বেলে নিতে হবে এবং মাঝবরাবর কেটে নিন। একটু লম্বা করে বেলতে হবে। এবার প্রতিটি তিন কোনা ভাঁজ করে তাতে পুর ভরে দিতে হবে। পুর ভরার পর শিঙাড়ার ওপরের দিকটা পানির মাধ্যমে মুখটা বন্ধ করে দিন।

গরম ডুবো তেলে একটি একটি করে শিঙাড়া দিয়ে হালকা আঁচে ভাজতে হবে বাদামি রং করে। এ ছাড়া শিঙাড়ার ওপর তেল ব্রাশ করে নিয়ে বেকিং ট্রেতে রেখে প্রিহিট করা ওভেনে ১৮০ ডিগ্রিতে ২০-২৫ মিনিট বেক করতে পারেন।

ফুলকপি আলুর শিঙাড়া

উপকরণ

খামিরের জন্য: ময়দা ২ কাপ, সাদা তেল ২০০ গ্রাম, জোয়ান আধা চা-চামচ, লবণ ও চিনি স্বাদমতো, বেকিং পাউডার আধা চা-চামচ ও পানি পরিমাণমতো।

পুরের জন্য: ফুলকপি ১টি (ছোট), আলু ৪টি (বড়), কাঁচা মরিচকুচি ৩টি, আদাবাটা ১ চা-চামচ, পাঁচফোড়ন ১ চা-চামচ, হিং আধা চা-চামচ, লবণ ও চিনি স্বাদমতো, ধনে-জিরা ভাজাগুঁড়া ১ টেবিল চামচ, গরমমসলাগুঁড়া আধা চা-চামচ, চিনাবাদাম ভাজা ৫০ গ্রাম, হলুদগুঁড়া আধা চা-চামচ, ধনেপাতাকুচি ১ টেবিল চামচ, শর্ষের তেল ২ টেবিল চামচ।

প্রণালি

প্রথমে ময়দা, সাদা তেল, লবণ, চিনি, বেকিং পাউডার, জোয়ান দিয়ে ভালো করে ময়ান করে নিন। পরিমাণমতো পানি দিয়ে মেখে কিছুক্ষণ ঢেকে রেখে দিন। এরপর লেচি করে নিন, একটা লেচিতে দুটি শিঙাড়া তৈরি হবে। পুরের তরকারি করে নিন। প্রথমে ফুলকপি ও আলু ছোট টুকরা করে কেটে নিয়ে একটু ভাপ দিয়ে পানি ফেলে দিন।

তারপর তেল গরম করে পাঁচফোড়ন ও হিং ফোড়ন দিয়ে সবজিগুলো দিয়ে কিছুক্ষণ ভাজুন। অল্প ভাজা হলে কাঁচা মরিচকুচি, আদাবাটা, লবণ, চিনি, ভাজা বাদাম, হলুদ, ধনেপাতাকুচি দিয়ে নাড়াচাড়া করে একটু পানি দিয়ে ঢেকে দিন। কিছুক্ষণ পর তুলে নিন। ভাজা ধনে-জিরাগুঁড়া ও গরমমসলাগুঁড়া দিয়ে ভালো করে নেড়ে একদম মাখা মাখা করে নামিয়ে নিন।

ময়দার লেচিগুলো লম্বা করে বেলে মাঝবরাবর কেটে নিতে হবে। এবার একখণ্ড নিয়ে তিন কোনা ভাঁজ করে তাতে পুর ভরে দিতে হবে। পুর ভরার পর হাতে একটু পানি নিয়ে শিঙাড়ার মুখটা বন্ধ করে দিতে হবে। এবার গরম ডুবো তেলে একটি একটি করে শিঙাড়া দিয়ে হালকা আঁচে ভাজতে হবে। বাদামি রং না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকুন। ভাজা হয়ে গেলে নামিয়ে চাসহ পরিবেশন করুন মজাদার শিঙাড়া।

মিষ্টি শিঙাড়া

উপকরণ

খামির জন্য উপকরণ: ময়দা ২ কাপ, সাদা তেল ২০০ গ্রাম, বেকিং সোডা সিকি চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুযায়ী, চিনি স্বাদমতো, বেকিং পাউডার আধা চা-চামচ ও পানি পরিমাণমতো।

পুরের জন্য: নারকেল কোরা ১টা, গুড় ১০০ গ্রাম, চিনি ২০০ গ্রাম, গুঁড়া দুধ ১ কাপ।

প্রণালি

প্রথমে ময়দা, সাদা তেল, লবণ, চিনি, বেকিং পাউডার, জোয়ান দিয়ে ভালো করে ময়ান দিন। পরিমাণমতো পানি দিয়ে মেখে কিছুক্ষণ ঢেকে রেখে দিন। তারপর লেচি করে নিন, একটা লেচিতে দুটো শিঙাড়া তৈরি হবে। নারকেল কুরে নিন। একটা কড়াইয়ে ১ কাপ গুঁড়া দুধ, গুড় আর নারকেল একসঙ্গে দিয়ে চুলায় নেড়েচেড়ে দিন। নারকেলের নাড়ুর মতো করে পুর করে নিতে হবে। এবার ময়দার লেচিগুলো বেলে নিন। মাঝবরাবর কেটে নিন। একটু লম্বা করে বেলতে হবে। এক খণ্ড নিয়ে তিন কোনা ভাঁজ করে তাতে নারকেলের পুর ভরে দিন। পুর ভরার পর হাতে পানি লাগিয়ে শিঙাড়ার মুখ বন্ধ করে দিতে হবে।

কড়াইয়ে তেল গরম করে ডুবো তেলে শিঙাড়াগুলো ভেজে নিন। পানি আর চিনি সমপরিমাণ নিয়ে চিনির শিরা তৈরি করে নিন। ভাজা শিঙাড়াগুলো শিরার মধ্যে দিয়ে ১৫ মিনিট পর তুলে নিলেই তৈরি দারুণ মজার মিষ্টি শিঙাড়া।

চিনাবাদামের মিনি শিঙাড়া

উপকরণ

খামিরের জন্য: ময়দা ২ কাপ, সাদা তেল ২০০ গ্রাম, কালিজিরা আধা চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো, চিনি স্বাদমতো ও পানি পরিমাণমতো।

পুরের জন্য: আলু ৪টি (বড়), কাঁচা মরিচকুচি ৩টি, আদাবাটা ১ চা-চামচ, পাঁচফোড়ন ১ চা-চামচ, পেঁয়াজকুচি ১ টেবিল চামচ, ধনেগুঁড়া ভাজা আধা টেবিল চামচ, জিরাগুঁড়া ভাজা আধা টেবিল চামচ, লবণ স্বাদ অনুযায়ী, চিনি স্বাদ অনুযায়ী, গরম মসলাগুঁড়া আধা চা-চামচ, চিনাবাদাম ভাজা ৫০ গ্রাম, তেল ২ টেবিল চামচ।

প্রণালি

প্রথমে ময়দা, তেল, লবণ, চিনি, কালিজিরা দিয়ে ভালো করে ময়ান দিয়ে নিন। পরিমাণমতো পানি দিয়ে মেখে কিছুক্ষণ রেখে দিন। তারপর ছোট ছোট লেচি করুন। একটা লেচিতে দুটো শিঙাড়া হবে। পুরের তরকারির জন্য প্রথমে আলু ছোট টুকরা করে কেটে নিন। তারপর তেল গরম হলে পাঁচফোড়ন দিন। পেঁয়াজকুচি দিয়ে নেড়ে আলু দিয়ে দিন। ভেজে এতে কাঁচা মরিচকুচি, আদাবাটা, লবণ, চিনি, ভাজা বাদাম দিয়ে নাড়াচাড়া করে একটু পানি দিয়ে ঢেকে রাখুন।

কিছুক্ষণ পর ঢাকনা তুলে ধনে, জিরা ভাজা গুঁড়া ও গরমমসলাগুঁড়া দিয়ে ভালো করে নেড়ে একদম মাখা মাখা করে নামিয়ে নিন। এবার ময়দার লেচিগুলো লম্বা করে বেলে নিন। মাঝবরাবর কেটে নিন। তিন কোনা ভাঁজ করে নিন। তাতে পুর ভরে দিতে হবে। পুর ভরার পর অল্প পানির মাধ্যমে শিঙাড়ার মুখটা বন্ধ করে দিতে হবে। এবার গরম ডুবো তেলে হালকা ভেজে নিন আঁচে বাদামি রং করে। ভাজা হয়ে গেলে নামিয়ে নিয়ে গরম-গরম পরিবেশন করুন।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password