গ্রহণযোগ্যতা, শৈলী বা স্টাইল এবং পরিবর্তনের সমষ্টিকে বোঝায় ফ্যাশন। তবে ফ্যাশন নির্ভর করে ধর্মীয় ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে। ফ্যাশনকে বলতে পারি ঢং, কেতা, রীতি, ধরন, প্রচল, কায়দা, রেওয়াজ বা চলতি প্রথা। ফ্যাশন শুধু জামা কাপড়েই না, ফ্যাশন হতে পারে জুতা, গহনা, সানগ্লাস ইত্যাদি। ফ্যাশনে সময়ের সাথে আমাদের রুচি, সাজ, পোশাক, চিন্তাচেতনার পরিবর্তন ঘটে।
ফ্যাশন হল এমন একটি শৈলী যা একটি শরীর বা মুখ বা চেহারায় ঘটে যা ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি, দিনে দিনে, সময়ে সময়ে পরিবর্তিত হয়। নির্দিষ্ট পোশাক বা পরিধেয় জিনিসগুলো সাংস্কৃতিক পরিচয়, জাতিগত পটভূমি এবং ঐতিহ্যকে প্রতিফলিত করে। ধর্মীয় পোশাকেও ফ্যাশন উপস্থিতি রয়েছে, তবে তা করা হচ্ছে ধর্মীয় পোশাকের মূল ভাবধারাকে অক্ষত রেখে। ফ্যাশন ডিজাইনের ইতিহাস প্রাচীন রোম এবং প্রাচীন মিশরে শুরু হয়।
ফ্যাশন মূলত চক্রাকারে আবর্তিত হয়, এক ফ্যাশন এখন আছে, কয় বছর পরে সেটা আবার নতুন নামে আবির্ভূত হয়। যেমন ১৯৬৭ সালের দিকে ছেলেদের ফুল প্যান্ট চাপা করে তৈরি করা হতো, সে সময় চোঙা প্যান্ট বলে বলা হত। ওই প্যান্ট পড়লে খোলার সময় চারজন মিলে খুলতে হতো। পরবর্তীতে দেখা গেছে প্যান্টের পায়ের ঘের ৩৬ থেকে ৪০ ইঞ্চি পর্যন্ত। যা লুঙ্গির ঘের কেও হার মানাতো। ঘুরে ফিরে আবির্ভূত হয়েছে স্কিন টাইপ প্যান্ট। এশিয়ার কোন এক উন্নত দেশ থেকে ২৫ বছর আগে প্রবাসী চাকরিজীবী তার জীবন সঙ্গিনীর জন্য একটা পায়জামা নিয়ে এসেছিল, যা বর্তমানে ডিভাইডার নামে চলছে কিন্তু সে সময় তার জীবনসঙ্গিনী সেটা পড়তে অনিয়া প্রকাশ করে। সেটা ব্যবহার করতে তার রুচিতে বাঁধে। পরবর্তীতে হয়ত সে ডিভাইডার কেটে ঘর ধোয়া মোছার কাজে ব্যবহার করেছে। কিন্তু এখন প্রত্যেকে ব্যবহার করছে ডিভাইডার। ফ্যাশন ক্ষণিকের জন্য আত্মপ্রকাশ করে তবে কিছু প্রচলিত (Traditional) ড্রেস যেমন ধর্মীয় পোশাক, ইউনিফর্ম (Uniform), কস্টিউম (Costume) ইত্যাদির পরিবর্তন ধীরে ধীরে হয়।
আমেরিকা বা ইউরোপিয়ান দেশগুলোতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের ফ্যাশনকে নামকরণ করা হয়েছে ১৯৬০ দশকে গোথ (goth), ১৯৭০ দশকে পাঙ্ক (punk) এবং ১৯৮০ দশকে ইমো (emo)। পোশাকে এ স্টাইল যারা ব্যবহার করত তারা মূলত সংগীতশিল্পী অথবা কোন সংগীত ব্যান্ড পার্টি সাথে জড়িত থাকতো। তাদের দেখা দেখি সাধারণ মানুষের মধ্যেও সেটার প্রভাব পড়তে দেখা গেছে। কিছু দেশে আছে ফ্যাশন কিলার, তাদের কাজ হল কর্মচারী কর্মকর্তাদের অফিসিয়াল ড্রেস তারা অনুসরণ করে। সে ধরনের ড্রেস বানিয়ে উদ্ভট রকমের কোন একটা ছবি প্যান্ট বা শার্টের মধ্যে লাগিয়ে ব্যবহার করে। তাদেরকে বলা হয় মূলত ফ্যাশন কিলার।
মনে রাখা দরকার ফ্যাশন মানে উগ্রতা, অশ্লীলতা ও উচ্ছৃঙ্খলতা নয়। উচ্চাভিলাষী ফ্যাশন আমাদের দেশে ধর্মীয় ও সামাজিক অবস্থার উপর আঘাত আনতে পারে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন