শনিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে আওয়ামী লীগের একাংশের শতাধিক নেতাকর্মী চন্দ্রগঞ্জ নিউ মার্কেট এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জে হামলা চালিয়ে ছাত্রলীগের চার কর্মীকে গুরুতর জখম করার ঘটনায় সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে।
এ সময় তারা হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চন্দ্রগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক কাজী মামুনুর রশিদ বাবলুকে দায়ী করে গ্রেপ্তারের দাবি জানায়। মিছিল শেষে তারা কিছু সময় ঢাকা-লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের চন্দ্রগঞ্জ এলাকা অবরোধ করে রাখে।
এতে সড়কের দুই পাশে যানজটের সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করে। এ সময় বক্তব্য দেন চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছাবির আহমেদ, চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন, চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন লিটন, সাধারণ সম্পাদক কাজী সোলায়মান, চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক সাহাব উদ্দিন ও যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক রিংকু প্রমুখ।
স্থানীয় লোকজন ও দলীয় সূত্র জানায়, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কাজী বাবলুর সঙ্গে আওয়ামী লীগের এক পক্ষের দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। কাজী বাবলু স্বেচ্ছাসেবক লীগের পদ বহন করলেও তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন। এ নিয়েই তাঁর সঙ্গে চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছাবির আহমেদের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে।
এ ছাড়া সম্প্রতি চন্দ্রগঞ্জ বাজার ইজারা নিয়েও তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক ভালো নয়। জানা গেছে, চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান মাসুদ স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা বাবলুর অনুসারী হিসেবে পরিচিত হলেও বর্তমানে তিনি আওয়ামী লীগ নেতা ছাবিরের পক্ষে।
এ কারণে ছাত্রলীগ নেতা মাসুদ এখন বাবলুর প্রতিপক্ষ। গত ২ রমজান থেকে মাসুদের সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্ব শুরু হয়। মাসুদুর রহমান মাসুদ বলেন, ‘কাজী বাবলুর লোকজন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। আহতদের ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করাচ্ছি।’
অভিযোগ অস্বীকার করে চন্দ্রগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক কাজী মামুনুর রশিদ বাবলু বলেন, ‘আমার সঙ্গে কিছুদিন ধরে মাসুদের রাজনৈতিক কারণে মান-অভিমান ও দূরত্ব রয়েছে। তবে আমি বা আমার কেউ তাদের ওপর হামলা করিনি। আমাদের রাজনৈতিক দূরত্বকে পুঁজি করে জামায়াত-বিএনপির লোকজন এ ঘটনাটি ঘটাতে পারে। আমি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’
চন্দ্রগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মফিজ উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, হামলা-মারামারির ঘটনায় চারজন আহত হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার (১২ এপ্রিল) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের পাঁচপাড়া এলাকার যৈদের পুকুর পাড়ে ছাত্রলীগকর্মী এম সজীব, সাইফুল পাটওয়ারী, রাফি ও সাইফুল ইসলাম জয়ের ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় সজীব, সাইফুল ও রাফিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অপর আহত জয় লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন