পদ্মা নদীর তীরে ঘাটটিতে ভোর হতে না হতেই ঘাসের স্তূপ দেখা যায়। ঢাকার দোহার উপজেলার বাহ্রা ইউনিয়নের পদ্মার তীরে সকাল হলেই ফরিদপুরের শারীপুর থেকে ঘাস বোঝাই করে ছোট বড় ট্রলার আসতে শুরু হয় তেঁতুল তলায়।
দোহার উপজেলাসহ আশেপাশের এলাকা থেকে মানুষ আসে এই ঘাস কিনতে। গরু-ছাগলের খাদ্য হিসেবে পরিচিত নেপিয়ার, দূর্বাঘাস, গর্বা ঘাস সহ আরও অনেক ধরনের ঘাসের স্তূপ নিয়ে বসে থাকেন বিক্রেতারা। সকাল ৬টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত বিক্রি হয়। চরাঞ্চলের এ সকল মানুষ বর্তমানে এখান থেকেই আয়ের উৎস বের করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানায়। চরকুশাই গ্রামের জনৈক আলিম ও খলিল জানায়, তারা প্রতিদিন সকাল হলেই এই ঘাটে ঘাস কিনতে আসে।
জানা যায়, প্রতিটি ঘাসের আঁটি আকার ভেদে বিভিন্ন দামে বিক্রি হয়। এক আঁটি কাঁঠাল পাতা ৩০ টাকা, দূর্বাঘাস ৭০-৮০ টাকা, গর্বা ঘাস ৮০-১০০ টাকা, নেপিয়ার ঘাস প্রকার ভেদে ৩০-৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়। প্রায় দেড় শতাধিক পরিবার এ ঘাস বিক্রীত আয় এর উপর নির্ভরশীল। তাদের প্রাকৃতিক ঘাস বিক্রি করে সংসার চলে। ঘাস বিক্রি করতে আসা অরঙ্গবাদ এলাকার রশিদ (২৫) জানায়, সে গরীব মানুষ, ঘাস আর মাছ বিক্রির টাকায় সংসার চালায়। প্রতিদিন এখানে ঘাস বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে। বর্ষার পানির কারণে ঘাস ডুবে গেলে একটু চিন্তায় পড়তে হয়। এই কাজ করে সংসার ও সন্তানের লেখাপড়ার খরচও বহন করে থাকে। প্রতিমাসে সে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা আয় করে থাকে।
স্থানীয় উপজেলা প্রাণিসম্পদ তথ্যমতে প্রাকৃতিক এ কাঁচা ঘাসে শামুক থাকলে গরু কৃমিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং নাইট্রোজেন থাকতে পারে যা গরুর মৃত্যুর কারণ। তাই এ ঘাস গরুকে খাওয়ানোর আগে ৬ ঘণ্টা ছড়িয়ে রাখলে শঙ্কা কেটে যায় বলে স্থানীয় উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের অভিমত।
স্থানীয়রা জানায়, বেশ কয়েক বছর ধরে এই ঘাটে ঘাসের বাজার বসে। বেশিরভাগ গরীব মানুষ কোনো কাজ না পেয়ে পদ্মার শালীপুর থেকে ভোর রাতে বের হয়ে ঘাস কেটে এখানে বিক্রি করে। সব বয়সের মানুষ এই ঘাটে দেখতে পাওয়া যায় ঘাস বিক্রি করতে। ক্রেতার সংখ্যাও অনেক বেশি। ঘাট এলাকায় চা স্টল সহ বিভিন্ন ধরনের দোকান সাজিয়ে বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি করছে যা বাড়তি উপার্জনের সুযোগ হয়েছে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন