অনলাইনে প্রেম কলেজছাত্রী ভারতে পাচার

অনলাইনে প্রেম কলেজছাত্রী ভারতে পাচার

অনলাইনে প্রতারক চক্রের সদস্যের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয় রত্নার। এরপর তাকে দেখানো হয় বিদেশে ‘ভালো চাকরির’ প্রলোভন। পরবর্তীতে বৈধ পাসপোর্ট–ভিসা তৈরি করে রত্নাকে পাচার করা হয় ভারতে। ভুক্তভোগী রত্না ঠাকুরগাঁও সরকারি মহিলা কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী। তার বয়স ১৮।

২৪ দিন আগে কলেজে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে রত্নার মায়ের দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতে একজনকে গ্রেফতারের পর জানা যায়, বৈধ পাসপোর্ট ও ভিসা ব্যবহার করেই পাচারকারী চক্র তাকে সিলেট সীমান্ত দিয়ে ভারতে নিয়ে গেছে। জানা যায়, ১৭ বছর আগে রতœার বাবা–মায়ের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। রত্নার মা এরপর আর বিয়ে করেননি। একমাত্র মেয়েকে ঘিরেই ছিল তার সব স্বপ্ন ও জীবন।

রত্নার মা বলেন, আমি শুধু একটি কথাই বলব—আমার মেয়েটাকে আমি ফেরত চাই। আমার মেয়ে বলছিল, তাকে নাকি চাকরির জন্য হলপাড়ায় ১২ দিনের একটি ট্রেনিং করানো হচ্ছে! ভালো চাকরির কথা বলে ওকে বাইরে নিয়ে গেছে। এখন আমি আমার মেয়ে ছাড়া কীভাবে বাঁচব? রত্নার নানি বলেন, আমরা গরিব মানুষ, সরল-সোজা। আমার নাতনিটা কি আদৌ মানুষের কাছে ফিরবে? ওকে দ্রুত ফিরিয়ে এনে দোষীদের কঠোর শাস্তি চাই আমরা। সমাজের অন্য মেয়েদের যেন এমন সর্বনাশ না হয়।

তদন্তে জানা গেছে, পাচারকারী চক্রটি অত্যন্ত সুকৌশলে প্রথমে রত্না অনলাইনে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করে। এরপর তাকে দেশের বাইরে ভালো বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখানো হয়। গ্রেফতার হওয়া আসামি জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, চক্রটি পুরোনো মানব পাচারচক্রের মতো অবৈধ পথে নয়, বরং রত্নার নামে ভুয়া পরিচয়ে পাসপোর্ট–ভিসা তৈরি করে আইনগত পথেই তাকে সীমান্ত পার করিয়েছে। এই ‘বৈধ প্রক্রিয়া’ অবলম্বন করায় রত্নাকে খুঁজে পাওয়া আরও কঠিন হয়ে পড়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি সরোয়ার আলম খান বলেন, আমরা মানব পাচারকারী চক্রের একজনকে আটক করেছি এবং বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। যত দ্রুত সম্ভব মেয়েটিকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিতে পারি—এই লক্ষ্যেই অভিযান জোরদার করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় তাকে উদ্ধারের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password