দ্বীপ্তের নিহত হওয়ার ঘটনা নিছক সড়ক দুর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত হত্যা

দ্বীপ্তের নিহত হওয়ার ঘটনা নিছক সড়ক দুর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত হত্যা
MostPlay

কানাডায় শিক্ষার্থী আরিয়ান আলম দ্বীপ্তের নিহত হওয়ার ঘটনা নিছক সড়ক দুর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত হত্যা! বিষয়টি সুরাহা করতে তদন্তের দাবি জানিয়েছে তার পরিবার। কানাডার টরন্টোয় গত ১৩ ফেব্রুয়ারি মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তিন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। এরমধ্যে আরিয়ান আলম দীপ্তও (২১) রয়েছেন।

তিনি কানাডার হামবার্গ ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির শিক্ষার্থী ছিলেন। চার ভাই-বোনের মধ্যে দীপ্ত ছোট। দ্বীপ্তের এমন মৃত্যু পরিবারের কেউ মানতে পারছেন না। বিশেষ করে দীপ্তর বোন অনন্যা আহসান দোলা ভাইকে হারিয়ে সারাক্ষণ কান্না করছেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, গত ১১ ফেব্রুয়ারি জন্মদিনের দিন দ্বীপ্ত মায়ের সঙ্গে কথা বলতেছিল। তখন আমি দ্বীপ্তকে বলি, আই লাভ ইউ ভাই আমার, শুভ জন্মদিন। জবাবে দ্বীপ্ত জানায়, আই লাভ ইউ টু আপু, আই মিস ইউ। এটাই ছিল আমার সঙ্গে দ্বীপ্তের শেষ কথা।

এরপর আমি ওকে অনেক ফোন দিয়েছি, মেসেজ দিয়েছি। কিন্তু দ্বীপ্ত আর ফোন ধরে না, মেসেজ দেখে না। আমি আর কোনোদিন আমার ভাইকে দেখতে পাব না।’ জানা গেছে, নিবিড় কুমারের সঙ্গে এক ফ্ল্যাটেই থাকত দ্বীপ্ত। কিন্তু সম্প্রতি ফ্ল্যাট থেকে নিবিড়ের বন্ধু লাবীবের ১ হাজার ৮০০ ডলারের জ্যাকেট গায়েবের দোষ দেওয়া হয় দ্বীপ্তকে। শুধু তাই নয়, জ্যাকেটের জরিমানা দেওয়ার পাশাপাশি তাকে মারধরও করা হয়। বের করে দেওয়া হয় ফ্ল্যাট থেকেও। আবার তাদের সঙ্গে গিয়েই প্রাণ হারায় দ্বীপ্ত।

নেপথ্যে নিবিড় কুমারের বন্ধু লাবীবের নামও উঠে আসে। এসব কারণেই এটি দুর্ঘটনা নাকি হত্যাকাণ্ড, এর তদন্ত চায় দ্বীপ্তের পরিবার। দ্বীপ্তের বাবা-মা জানান, নিবিড় কুমার সাসপেন্ডেড লাইসেন্স দিয়ে কীভাবে ৫০ কিলোমিটার গতির রাস্তায় ১৪০ কিলোর গতিতে গাড়ি চালাচ্ছিল, তা খতিয়ে দেখা দরকার। এ ছাড়া দ্বীপ্তকে তার বন্ধুরা জোর করে ঘুরতে নেওয়ার পাশাপাশি মাসখানেক আগে মারধর করারও অভিযোগ করেন তারা।

দ্বীপ্তের এক বন্ধুর চ্যাটে দেখা যায়, গায়ক কুমার বিশ্বজিতের ছেলে নিবিড় কুমারের সঙ্গে বের না হওয়ার অজুহাত হিসেবে আরিয়ান জানায়, তার কাছে টাকা নেই। কিন্তু অপর বন্ধু জানায়, এটা ওরা মানবে না। আরিয়ানের পরিবারের অভিযোগ জোর করেই দ্বীপ্তকে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছে ওরা। দ্বীপ্তের বাবা এম আলমগীর জানান, আমার ছেলেকে জোর করে নিয়ে গেছে তারা। লাবীব এ ঘটনার সব জানে। লাবীব ওই গাড়িতে যায়নি, অথচ সে নিবিড় কুমারের বন্ধু। আমরা চাই লাবীবকে আইনের আওতায় আনা হোক।

তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই অনেক কিছু বেরিয়ে আসবে। উল্লেখ্য, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি কানাডায় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান আরিয়ান আলম দ্বীপ্ত, শাহরিয়ার খান মাহির ও আঞ্জেলা বারৈ শ্রেয়া নামে এক শিক্ষার্থী। তবে, গাড়িটির ড্রাইভিংয়ে থাকা কুমার বিশ্বজিতের ছেলে নিবিড় কুমার শঙ্কামুক্ত। জানা গেছে, গাড়ি চালানোর সময় এক হাইওয়ে থেকে আরেক হাইওয়েতে ওঠার সময় টার্ন নিতে গিয়ে কুমার গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। এ সময় গাড়িটি হাইওয়ের রেলিংয়ে ধাক্কা খেয়ে উল্টে আগুন ধরে যায়।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password