আইবি বাংলো নির্মানে অনিয়ম প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

আইবি বাংলো নির্মানে অনিয়ম প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

গনপূর্ত অধিদপ্তরের মিরপুর ডিভিশনে পূর্ত সার্কেলে আইবি বাংলো নির্মানে ব্যাপক অনিয়ম ও সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এনিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে গনপূর্ত ও গৃহায়ন মন্ত্রনালয়ে। বিষয়টি তদন্ত করতে গঠিত হয়েছে কমিটি।   

মিরপুর গনপূর্ত বিভাগে কর্মরত থাকাকালীন ঢাকা গনপূর্ত বিভাগ-৪ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সাইফুজ্জামান চুন্নুর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। 

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মিরপুরের পাইকপাড়ায় পিডব্লিউডি ট্রেনিং সেন্টার (পুরাতন) এর ২য় তলায় সিড়ির পূর্ব পাশের পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত ৭ ও ৮ নং কক্ষ দুটি পরিদর্শন বাংলোতে রূপান্তরের লক্ষ্যে আনুসঙ্গিক সংস্কার ও আধুনিকায়নের জন্য ২০২২-২৩ অর্থবছরের বরাদ্দকৃত অর্থ ইতিমধ্যে উত্তোলনপূর্বক কাজ না করিয়েই সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করা হয়েছে।

মিরপুর গনপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সাইফুজ্জামান চুন্নুর বিরুদ্ধে উক্ত পরিদর্শন বাংলোর ২টি রুমে কাজের নামে ২৫ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ উঠে।

পরবর্তীতে বিষয়টি জানাজানি হলে তড়িঘড়ি করে কক্ষ দুটিতে লোক দেখানো মেরামত কাজ করতে গেলে গনপূর্ত অধিদপ্তরের যুগ্ন সচিব মুহাম্মদ সোহেল হাসান সরেজমিনে কক্ষ দুটি পরিদর্শন করে গনপূর্ত অধিদপ্তরের সংস্থাপন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আহম্মেদ আব্দুল্লাহ নূর এবং ই/এম বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পবিত্র কুমার দাসকে উল্লেখিত ৭ ও ৮ নং কক্ষ দুটি সিলগালা করার এবং এই বিষয়টি যথাযথ তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেন।

তদন্ত কমিটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন এবং কক্ষ দুটি সিলগালা করে দেন।

সাইফুজ্জামান চুন্নুর সাথে এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন 'সবকিছু মিটে গেছে। অচিরেই সিলগালা খুলে দেয়া হবে'।

মিরপুর গনপূর্ত বিভাগে কর্মরত থাকাকালীন ঢাকা গনপূর্ত বিভাগ-৪ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সাইফুজ্জামান চুন্নু ২০১৯-২০ অর্থবছরে যে কাজ সম্পাদন করা হয়েছে সেই একই কাজ ২০২২-২৩ অর্থবছরে সম্পাদন করার নামে ৮০ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হয়েছে।

এছাড়াও সাইফুজ্জামান চুন্নুর বিরুদ্ধে একাধিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে।

বিশ্বস্ত সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে মিরপুরের পাইকপাড়ায় পিডব্লিউডি ট্রেনিং সেন্টার (পুরাতন) এর ২য় তলায় ৪টি কক্ষ, ৩য় তলায় পশ্চিম পাশের ৪টি কক্ষ, ২টি বাথরুম ও বারান্দায় টাইলস লাগানোর কাজ বাস্তবায়িত হলেও সেই একই কাজ ২০২২-২৩ অর্থ বছরে দেখিয়ে সরকারি অর্থ আত্মসাত করা হয়েছে।

এছাড়াও ২০১৯-২০ অর্থবছরে ঐ একই ভবনে সম্পাদিত ৪টি দরজার পাল্লা, চৌকাঠ, এলুমিনিয়াম ও গ্লাসের কাজ ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেখানো হয়।

মাত্র ১০ টি কক্ষে কাজ করার জন্য ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছে যা অত্যদিক বেশী ও বাস্তবতা বিবর্জিত। এই খাতে অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে গুঞ্জন রয়েছে গনপূর্ত অধিদপ্তর জুড়ে।

উল্লেখ্য যে, সাইফুজ্জামান চুন্নু মন্ত্রীর নাম ভাঙ্গিয়ে একছত্রভাবে অধিদপ্তরের নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি ও টেন্ডার বাণিজ্যের নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন। অথচ সাইফুজ্জামানের বাবা পটুয়াখালী জেলা বিএনপি'র একজন পদধারী নেতা।

তার অনিয়ম, দুর্নীতি ও ক্ষমতার দাপটের কারণে গনপূর্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সর্বদাই তটস্থ থাকেন।

সরকারবিরোধী একটি রাজনৈতিক দলের অনুসারী পরিবারের সন্তান হয়ে তিনি কিভাবে সরকারেরই প্রভাবশালী একজন মন্ত্রীর নাম ব্যবহার করে দীর্ঘদিন গনপূর্ত অধিদপ্তরে দাপট দেখালেন এবং ফায়দা লুটলেন সেটাই এখন কোটি টাকার প্রশ্ন।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password