নোয়াখালীতে কালবৈশাখী ঝড়ে দেড় শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত

নোয়াখালীতে কালবৈশাখী ঝড়ে দেড় শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত
MostPlay
কয়েক মিনিটের কালবৈশাখী ঝড়ে নোয়াখালীর সদর ও কবিরহাট উপজেলার প্রায় দেড় শতাধিক কাচা ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। ভেঙে ও উপড়ে পড়েছে অর্ধশতাধিক গাছ। কয়েকটি স্থানের সড়কের উপর ভেঙে পড়েছে বিদ্যুতের খুঁটি।বুধবার সকাল ৭টার দিকে বৃষ্টি শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে আকস্মিকভাবে আঘাত হানে কালবৈশাখী।এলাকাবাসী বলছে, সদর উপজেলার আন্ডারচর ইউনিয়নের পূর্ব মাইজচরা, পশ্চিম মাইজচরা, আন্ডারচর গ্রাম, কবিরহাট উপজেলায় ধানসিঁড়ি ও সুন্দলপুর ইউনিয়নে কয়েকটি গ্রামে আঘাত হানে কালবৈশাখী ঝড়। এছাড়াও নোয়াখালী পৌরসভার দত্তেরহাটে একটি চলন্ত ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার উপর একটি গাছ উপড়ে পড়ে। চালক দ্রুত গাড়ি থেকে নেমে যাওয়ায় কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। সদর উপজেলার আন্ডারচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী হায়দার বকশী জানান, সকাল ৭টার দিকে তার ইউনিয়নের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখীতে পূর্ব মাইজচরা, পশ্চিম মাইজচরা ও আন্ডারচর গ্রামে শতাধিক কাচা বসতঘর বিধ্বস্ত হয়। এছাড়াও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনেক বসতঘর। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর তালিকা তৈরির কাজ চলছে।সদর উপজেলার এওয়াজবালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল জাহের বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ে তার ইউনিয়নের পশ্চিম এওয়াজবালিয়া, চরকরমুল্লা গ্রামের অন্তত ২০-৩০টি কাছা ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। উপড়ে পড়েছে অনেকগুলো গাছপালা ও কয়েকটি বিদ্যুতের খুঁটি। কবিরহাট উপজেলার সুন্দলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নুরুল আমিন রুমি জানান, কালবৈশাখী ঝড়ে তার ইউনিয়নের পশ্চিম লামচি, উত্তর লামচি, পূর্ব রাজুরগাঁও, পশ্চিম রাজুরগাঁও ও সবিরপাইক গ্রামে অনেকগুলো ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ভেঙে গেছে অনেক গাছপালা। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর তালিকা প্রস্তুত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে জেলা ত্রাণ শাখায় প্রেরণ করা হবে।কবিরহাট উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান মুনাফ বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ে তার ইউনিয়নের উত্তর জগদানন্দ, নলুয়া ও নবগ্রাম এলাকায় ৩০-৪০টি কাচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। বেশ কিছু গাছপালা উপড়ে ও বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে গেছে। কবিরহাট উপজেলা পল্লী বিদ্যুতের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) গোপাল চন্দ্র শীব জানান, ঝড়ে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে গাছপালা ভেঙে পড়ে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গেছে। এতে কয়েকটি ইউনিয়নের বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।পল্লী বিদ্যুৎ নোয়াখালী অঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা জানান, কালবৈশাখী ঝড়ে জেলার বেগমগঞ্জ, সুবর্ণচর ও সদর উপজেলায় ৭টি পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়েছে। খুঁটিগুলোর মেরামতের কাজ চলছে।সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুল ইসলাম সরদার জানান, কালবৈশাখী ঝড়ে ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ার খবর শুনেছি। তবে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা এখনো পাওয়া যায়নি। স্ব-স্ব ইউপি চেয়ারম্যান ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তদের খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কবিরহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজিয়া পারভীন বলেন, ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর সম্পর্কে ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুঠোফোনে জানিয়েছেন। অন্য কোন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি এখনো জানাননি।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password