করোনায় ছেলেকে নিয়ে চিন্তিত ববিতা

করোনায় ছেলেকে নিয়ে চিন্তিত ববিতা
MostPlay

চলচ্চিত্রের অভিনয়শিল্পী ববিতার একমাত্র ছেলে অনিক থাকেন কানাডায়। গেল বছরের ডিসেম্বরে দুই সপ্তাহের জন্য ঢাকায় এসেছিলেন। বন্ধুরাসহ মায়ের সঙ্গে বেড়াতে গিয়েছিলেন কক্সবাজারেও। বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে কানাডায় থাকা ছেলেকে নিয়ে ভীষণ চিন্তার মধ্যে আছেন ববিতা। বললেন, ‘মনটা মোটেও ভালো নেই। যতই দিন যাচ্ছে, উদ্বেগ–উৎকণ্ঠা বাড়ছে। কী এমন দুর্যোগ পৃথিবীতে এল, ইচ্ছা করলেও ছেলের সঙ্গে দেখা করতে যেতে পারছি না, আবার চাইলে ছেলেও এই মুহূর্তে আমার কাছে আসতে পারছে না।’

প্রথম আলোয় গতকাল পর্যন্ত প্রকাশিত খবরের তথ্যমতে, কানাডায় এখন পর্যন্ত প্রায় ২৫০ জন আক্রান্ত করোনাভাইরাসে। ফেব্রুয়ারিতে চীন থেকে আসা এক দম্পতির মাধ্যমে এটা ছড়ায়। অন্টারিও প্রদেশ আর ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি। দেশের প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো দুই সপ্তাহের জন্য নিজেকে কটেজ কোয়ারেন্টিনে রেখেছেন। চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে আছেন। কটেজে থেকেই আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে তিনি দেশ পরিচালনা করছেন। কয়েক দিন আগে তাঁর স্ত্রী সোফি ট্রুডো যুক্তরাজ্য সফর শেষে ফিরেই অসুস্থ বোধ করছিলেন। টেস্টে সোফির দেহে করোনাভাইরাসের কোভিড-১৯ রোগ ধরা পড়ে।

ববিতার ছেলে অনিক থাকেন কানাডার ওয়াটার লু এলাকায়। বরেণ্য এই অভিনয়শিল্পী বললেন, ‘আমার ছেলের অফিস বন্ধ। প্রয়োজন ছাড়া বাইরে কোথাও বের হচ্ছে না। কী একটা সময় পার করছে! তবে ওখানকার সরকার যেসব প্রদক্ষেপ নিচ্ছে, তা আশাবাদী করছে। সারাক্ষণই মা-ছেলের কথা হচ্ছে। তবে সামনের দিনে যে কী হয়, তা বুঝতে পারছি না। মন চাইলেও ছেলের কাছে যেতে পারছি না! কী যে কষ্ট লাগছে, বলে বোঝাতে পারব না। মায়ের মন বলে কথা, মেনে নিতেও পারছি না।’
তবে করোনাভাইরাস নিয়ে সবাইকে আতঙ্কিত না হতে অনুরোধ করছেন ববিতা। বললেন, ‘পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন থাকলে এবং করোনা প্রতিরোধে যেসব নিয়ম আছে, তা মেনে চলাটাই এখন আমাদের সবার দায়িত্ব।’

ববিতা দীর্ঘ অভিনয়জীবনে ২৭৫টি ছবিতে অভিনয় করেছেন। দেশের বিখ্যাত সব নির্মাতার পাশাপাশি কাজ করেছেন দেশের বাইরের বিখ্যাত নির্মাতার ছবিতেও। সত্যজিৎ রায়ের ‘অশনিসংকেত’ ছবির জন্য ববিতা দেশে ও দেশের বাইরে প্রশংসা কুড়ান। সন্তানকে ঠিকভাবে গড়ে তুলতে একটা সময় ছবিতে কাজ কমিয়ে দেন। বললেন, ‘তা না হলে পৌনে তিন শ ছবির থেকে তা বেড়ে অনেক বেশি হতো। আমি নারী। একাই চলতে হতো। সমানতালে দুই সংসার সামলাতে হয়েছে। অনিকের কথা ভেবে সারাটা জীবন একাই পার করেছি। ওকে মানুষের মতো মানুষ করে তোলাই ছিল আমার লক্ষ্য।’

ববিতা বলেন, ‘নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে আমি খুব ব্যস্ত একজন অভিনয়শিল্পী। এক সন্তানের মা। তাও আবার সিঙ্গেল মাদার। অনিকের বাবা যখন মারা যান, তখন ওর বয়স তিন বছর। শুটিংও ফেলে রাখা যাবে না। তবে এর মধ্যে ভালো ভালো ছবি করার প্রস্তাব ছাড়তে হয়েছে। ঢাকার বাইরের শুটিংয়ের ক্ষেত্রে অনেক কিছু ভাবতে হতো। আর ঢাকায় যেসব ছবির শুটিং হতো, সেগুলো করার ক্ষেত্রেও অনেক চিন্তাভাবনা করেছি।’

 

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password