দগ্ধ সালমাকে অর্থ সহায়তা করলেন ইউএনও নাহিদা

দগ্ধ সালমাকে অর্থ সহায়তা করলেন ইউএনও নাহিদা

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় নারায়ণগঞ্জসহ কাঁদছে সারা দেশ। শোকে ভাসছে পুরো নারায়ণগঞ্জ জেলা।এমনই এক ভয়াবহ ঘটনার স্বাক্ষী হয়ে রইলেন পশ্চিম তল্লা এলাকার সালমা বেগম। আগুনে ঝলসে গেছে তার শরীরের অর্ধেকাংশ। হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে বর্তমানে তিনি বাসায় অবস্থান করছেন।

নারায়ণগঞ্জ সদর ইউএনও নাহিদা বারিক বলেন, এমন ঘটনা কখনো দেখিনি। খুব কাছ থেকে মৃত্যু যন্ত্রনা আমি দেখেছি। চোঁখের সামনে দগ্ধ মানুষগুলো একেএকে নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছে। চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি। এরপর মরদেহগুলো কফিনে করে স্বজনদের বুঝিয়ে দেয়া নিয়ে অনেক ব্যস্ত সময় অতিক্রম করতে হয়েছে। খবর পেয়েছি মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় সালমা নামে এক নারী দগ্ধ হয়েছে। মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে তার বাসায় গিয়ে ১০ হাজার টাকা ও ৩০ কেজি চাল দিয়ে আসছি। সালমাও সেই দিনের ঘটনা আমাকে বলেছে। তাকে আশ্বস্ত করে আসছি সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।

ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে সালমা বেগম বলেন, এলাকায় তখন কারেন্ট ছিল না। অন্ধকারের মধ্য দিয়েই আমার ও স্বামীর জন্য ওষুধ আনতে ফার্মেসিতে যাচ্ছিলাম। আর ফার্মেসিতে যেতে হলে মসজিদের সামনে দিয়েই যেতে হয়। কারণ রাস্তায় পানি। যখনই মসজিদের সামনের গেইট পর্যন্ত পৌঁছাই তখনই একটি আগুনের ফুলকি এসে আমাকে ধাক্কা দিয়ে পানিতে ফেলে দেয়। আমার শরীরে আগুন লাগছে আমি দেখি নাই। পাশের বাসায় গিয়ে পানি ঢালি। শরীরের কাপড় ছিড়ে যায়।

এই অবস্থায় কোনোরকম দৌড়ে বাসায় এসে আমার স্বামীকে বলি আমার শরীর জ্বলছে। তখন স্বামী বললো তুমার শরীর জ্বলবে কেন। আমি বললাম মসজিদে কি জানি হয়েছে। পরে কাপড় খুলে দেখি আমার শরীরের এক সাইট ঝলসে গেছে।

স্বামী ইলেকট্রিক মিস্ত্রী মো. আমির বলেন, আমি এদিন অসুস্থ অবস্থায় বাসায় শুয়েছিলাম। তাই আমার স্ত্রী আমার ও তার জন্য ওষুধ আনতে যান। কিছুক্ষণ পরে দেখি সে ওষুধ না এনে ভেজা কাপড়ে দৌড়ে বাসায় এসে বলছে আমার শরীর ঝলে যাইতেছে। পরবর্তীতে তাকে ঢাকা শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করানো হয়। সেখান থেকে চিকিৎসা দিয়ে এখন বাসায় নিয়ে আসা হয়েছে। সেই সাথে সোমবার আবার যাওয়ার জন্য বলছে।

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার পশ্চিমতল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। মুহূর্তেই মসজিদের ভেতরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময়ে মসজিদে থাকা মুসল্লীদের গায়ে আগুনের ফুলকি গিয়ে পড়লে একে একে দগ্ধ হতে থাকে। মসজিদের ভেতর থেকে আসতে থাকে মুসল্লীদের আত্মচিৎকার। পরে আশেপাশের লোকজন দিয়ে তাদের উদ্ধার করে। তাদের অনেকের শরীরের কাপড় ছিল না।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password