কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে সরকার

কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে সরকার

দেশে পরিকল্পিতভাবে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করার পাঁয়তারা চলছে বলে সরকার মনে করছে। এবং এ ধরনের ঘটনা সরকার কঠোর হস্তে দমন করবে বলেও সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান জানিয়েছেন। আজ তিনি দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের ঊর্ধ্বতন বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেছেন। একাধিক মন্ত্রী সঙ্গেও টেলিফোনে আলাপ করেছেন এবং এ ব্যাপারে সরকারের অবস্থান তিনি সুস্পষ্ট ভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে , উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন; যে ধর্ষণের ব্যাপারে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। যারা অপরাধী তাদেরকেই আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। এবং সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা হচ্ছে। সরকার ছাত্রদের দাবী মেনে নিয়ে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। এবং এটির আইনি প্রক্রিয়াও চলমান রয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই এই আইন অধ্যাদেশ আকারে জারি হবে। কিন্তু তারপরেও এই সমস্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে যারা উস্কানি সৃস্টির চেষ্টা করছে এবং নানা রকম অপপ্রচার এবং গুজব ছড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর অবস্থান গ্রহণ করবে। এবং এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী আওয়ামীলীগকে এ ব্যাপারে সক্রিয় হওয়া এবং সরকার বিরোধী অপপ্রচার গুজব নানা রকম অপতৎপরতার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ভাবে মোকাবেলার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।

এ নির্দেশের প্রেক্ষিতে আওয়ামীলীগ আগামী কাল থেকে এ ধরনের গুজব, অপপ্রচারের এবং কুৎসার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামছে বলে জানা গেছে। আওয়ামীলীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেছেন যে, আগামীকাল আওয়ামী লীগ ধর্ষণের প্রতিবাদে যেমন কর্মসূচি নিবে তেমনি এই ধর্ষণ ইস্যুকে কেন্দ্র করে যারা ঘোলাপানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করবে।

সরকারের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, সরকারের কাছে এ ধরনের তথ্য এসেছে যে সাম্প্রতিক সময়ে যে একের পর এক যে ধর্ষণের ঘটনাগুলো ঘটছে এগুলো কাকতালীয় নয়, বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, এগুলো পরিকল্পিত এবং একটি মহল পরিকল্পিতভাবে ঘটনাগুলো ঘটাচ্ছে। সরকারকে কোণঠাসা করার জন্য, বিপদে ফেলার জন্য। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সরকারের নীতি নির্ধারকরা মনে করছেন, ষড়যন্ত্রকারীদের এই চেষ্টা সফল হতে পারে না । একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ইতিমধ্যে অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, দেশের অনেক স্থানেই পরিকল্পিত ভাবে কিছু দুর্বৃত্তকে ভাড়া করে এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর জন্যই লেলিয়ে দেয়া হচ্ছে এবং তারা এ ঘটনাগুলো ঘটাচ্ছে। গণমাধ্যমেও এ ধরনের ঘটনাগুলো ফলাও ভাবে প্রকাশের জন্য ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এই পুরো বিষয়গুলো এক সঙ্গে বিশ্লেষন করে যেটি দাঁড়াচ্ছে তাহলো সরকারের বিরুদ্ধে একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র করছে।

এবং ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের জন্য উস্কানিমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। যখন সরকার ধর্ষণের বিচার করছে, যখন আইন সংশোধন করা হচ্ছে তখন ছাত্র অধিকার ফোরামের ব্যানারে ধর্ষণ বিরোধী সমাবেশ এবং সেখান থেকে উস্কানিমূলক কর্মসূচির ব্যাপারে সরকার সতর্ক অবস্থান গ্রহণ করেছে। আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন যে আওয়ামীলীগ একটি বড় রাজনৈতিক সংগঠন এবং সংগঠনটির বিপুল জনপ্রিয়তা রয়েছে। কাজেই আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে রাজপথে আন্দোলন করে কেউ সফল হতে পারেনি। অতীতেও সফল হতে পারেনি ভবিষতেও সফল হতে পারবে না । 

ছাত্রদের যে ধর্ষণ বিরোধী শাহবাগে অবস্থান এবং লং মার্চ এই কর্মসূচির ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিবে বলে জানা গেছে। প্রথমে তাদেরকে এই কর্মসূচী প্রত্যাহারের অনুরোধ করবে এবং তাতে যদি কাজ না হয় তাহলে আওয়ামী লীগও রাজপথে কর্মসূচি পালন করবে। তবে কোন পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির মাধ্যমে পরিস্থিতি যেন ঘোলাটে এবং অশান্ত না হয় সেদিকেও নজর রাখার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একাধিক সূত্র বলছে যে এখন একটি সংঘবদ্ধ চক্র এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে রাজপথ গরম করা এবং একটি অন্য রকম পরিস্থিতি সৃষ্টি করার কৌশল এটেছে। 

কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে এ ধরনের অপকৌশল তিনি সফল হতে দেবেন না।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password