আভিধানিক নাম আঁশফল। আঁশ নেই কিন্তু নাম আঁশফল৷ এখন বাড়িতে বাড়িতে আঁশফলের গাছ দেখা যাচ্ছে ৷ Nephelium Longana এর বৈজ্ঞানিক নাম ৷ প্রচলিত নাম স্থান ভেদে কাঠলিচু, ছোট লিচু, পিছফল,পিয়াজ ফল,রাজফল, আজফল, আচফল, রঙন ফল। ফলবিহীন গাছ দেখলে মনে হবে লিচুগাছ। বিদেশেও আঁশফলকে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়। যেমন- ভিয়েতনামে নাহান, কম্বোডিয়ায় মিয়েন ও মায়ানমারে কিয়েট মৌক ইত্যাদি। থাইল্যান্ড, চীন, মালয়েশিয়া ও তাইওয়ানে আঁশফলের চাষ হচ্ছে। ফল দেখতে অনেকটা লিচুর মতোই, গোলাকার। তবে আকারে ছোট এবং এর রসাল অংশ কম।
পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ আঁশফলে রয়েছে প্রচুর শর্করা ও ভিটামিন সি। এই ফল উদারাময় নিবারক ও কৃমিনাশক হিসেবে দারুণ কার্যকর। অনেকে এই ফলকে বলকারক হিসেবে মনে করে। শারীরিক দুর্বলতা তাড়াতে অতুলনীয়। অবসাদ দূর করতেও এর সুনাম রয়েছে। ঢাকা জেলার দোহার ও নবাবগঞ্জ, কেরানিগঞ্জে আগে থেকেই ফলটি পাওয়া যেত। তাই এখানকার মানুষের কাছে আঁশফলের কদর বেশি কিন্তু বিক্রি করা হতো না। এখন দৃশ্যপট পাল্টেছে। লিচুর পিছু পিছু আসতে শুরু করেছে আঁশফল। পাকলে বেশ মিষ্টি স্বাদের হয়। ছাল কিছুটা শক্তগোছের। আর বিচিটা আকারে বড় কালচে খয়েরি রঙের। আষাঢ় মাসে যখন পাকতে শুরু করে তখন এর তলায় ছোটদের আনাগোনা বেড়ে যায়। ছোট বাচ্চারা খেলাধুলার খানিকটা সময় এ গাছতলাতেই করতে দেখা যায়। কেননা, পাখির সহযোগিতায় টুপটাপ করে পড়তে থাকে দুচারটা করে। তাতেই বাচ্চাদের পোয়াবারো।
মৌসুমী ব্যবসায়ীরা বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ফল কিনে বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। এ ফলের প্রতি যত্নশীল না হলে সর্বনাশ হয়ে যাবে। কেননা বাদুর দাদার সাথে আঁশফলের সখ্যতা একটু বেশি। বাদুর দাদা এক রাতে সুযোগ পেলেই হলো। সকালে দেখা যাবে থোকায় থোকায় থাকা আঁশফল হাজারে বিজারে মাটিতে লুটোপুটি খাচ্ছে।
তাই ফল রক্ষার জন্য নানা কৌশল অবলম্বন করে থাকে গাছের মালিকরা। কেউ রক্ষার্থে গাছে মশারি দিয়ে এ ফল ঢেকে রাখে। আবার কেউ কাপড় কিংবা পলিথিন দিয়ে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন