কোটা আন্দোলনকারীরা উচ্চ আদালতের আদেশ না মেনে সীমা অতিক্রম করছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। লিমিট ক্রস করলে কোটা আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
তিনি বলেন, তারা যদি জানমালের ক্ষতি করে, অগ্নিসংযোগ ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে, তাহলে তো পুলিশ বসে থাকবে না।
বলেছেন, আদালতের বিষয় আদালতে নিষ্পত্তি হবে, এরপরও জনদুর্ভোগ করলে পুলিশ বসে থাকবে না।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিজ অফিসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, উচ্চ আদালত শিক্ষার্থীদের কথা শুনতে চাচ্ছেন, যে কারণে রাস্তায় তাদের আর কষ্ট করার কোনও প্রয়োজন নেই। তিনি আরও বলেন, অনেকেই তাদের ব্যবহার করার জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছে। তাদের ষড়যন্ত্রে পা না দিয়ে আন্দোলনে প্রত্যাহার করে নেওয়া উচিত।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে সরাসরি নিয়োগে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি তুলে দিয়ে পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ওই প্রজ্ঞাপনকে চ্যালেঞ্জ করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সাত সদস্য ২০২১ সালে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন।
এই রিটের চূড়ান্ত শুনানিতে গত ৫ জুন সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। এরপর ৯ জুন হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। গত ৪ জুলাই প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় আপাতত বহাল রাখার নির্দেশ দেন।
আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে গত ২ জুলাই থেকে আন্দোলনে নামের শিক্ষার্থীরা। ৭ ও ৮ জুলাই তারা দুপুরের পর থেকে রাত ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্ত রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার সড়ক অবরোধ করে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করেন। ১০ জুলাই তারা সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা ব্লকেড পালন করেন। এদিকে রাষ্ট্রপক্ষ গত ৮ জুলাই আপিল বিভাগে একটি আবেদন করে।
এরপর ১০ জুলাই শুনানি করেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম। এদিন সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর এক মাসের স্থিতাবস্থা জারি করেন আপিল বিভাগ। এই আদেশের ফলে সব কোটা পদ্ধতি বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র আপাতত বহাল থাকছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন