মাহিকে রিমান্ডে নিতে চায়নি পুলিশ

মাহিকে রিমান্ডে নিতে চায়নি পুলিশ
MostPlay

চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি গ্রেফতারের পর ডিজিটাল নিরাপত্তা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে গাজীপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। শনিবার দুপুরে তাকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইকবাল হোসেনের আদালতে তোলা হলে আদালত কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তবে তাকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানায়নি পুলিশ।

এর কারণ হিসেবে জিএমপির কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলাম বলেন, যেহেতু তিনি প্রেগনেন্ট, তাই আমরা তার রিমান্ড চাইনি। পুলিশের মামলায় আসামি হয়েছেন এটি আগেই টের পেয়েছিলেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। এ কারণেই ফেসবুক লাইভে এসে যে কোনো সময় গ্রেফতার হতে পারেন বলে জানিয়েছিলেন এ অভিনেত্রী।

তবে সেই ভয়কে দূরে রেখেই ওমরাহ পালন শেষে শনিবার বেলা ১১টায় সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরেন তিনি। পরে দুপুর ১২টায় গাজীপুর মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল মাহিকে গ্রেফতার করে। বিমানবন্দরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও পুলিশ জানিয়েছে, মাহি বোরকা পরে বিমান থেকে নেমেছিলেন। মামলার বিষয়ে তিনি অবগত ছিলেন। বিমানবন্দরে নেমে গ্রেফতারও হতে পারেন। সেই আশঙ্কা থেকে তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি এড়াতে ছদ্মবেশ নিয়েছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তা ছাড়া বিমানবন্দরে মাহিকে হুইলচেয়ারেও দেখা গেছে।

ইমিগ্রেশন পুলিশ সূত্র জানায়, সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে সৌদি আরব থেকে বিজি ৩৩৬ ফ্লাইটে জেদ্দা থেকে মাহি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। ৪ নম্বর বোর্ডিং ব্রিজের ৬ নম্বর বেল্টে তার লাগেজ ছিল। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিমানবন্দরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ এড়াতে পারেননি মাহি। বিমান থেকে নামার পর ইমিগ্রেশন অফিসাররা মাহির ইমিগ্রেশন শেষ করেন। এরপর আমাদের হাতে মাহিকে তুলে দেওয়া হয়।

এর আগে শুক্রবার রাতে মাহির বিরুদ্ধে বাসন থানার এসআই মো. রোকন মিয়া বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন। এ ছাড়া মারধর, ভাঙচুর, চাঁদা দাবি ও জমিদখলের অভিযোগ এনে মাহি ও তার স্বামী রকিব সরকারকে আসামি করে আরও একটি মামলা করেন স্থানীয় ইসমাইল হোসেন। এ মামলায় ২৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এ দিকে মামলার বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলাম গতকাল জানিয়েছিলেন, অপমান, অপদস্ত ও হেয়প্রতিপন্ন করে বিভিন্ন মিথ্যা, বানোয়াট, আক্রমণাত্মক, কুরুচিপূর্ণ এবং মানহানিকর তথ্য প্রচার করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি করার অপরাধে রকিব সরকার ও তার স্ত্রী মাহিয়া মাহি সরকারের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করার কথা জানান এ পুলিশ কমিশনার।

স্বামীর সঙ্গে ওমরাহ পালন করতে যাওয়া চিত্রনায়িকা মাহি শুক্রবার সৌদি আরবের মক্কা শহর থেকে ফেসবুক লাইভে রকিবের গাড়ির শোরুম ভাঙচুর ও হামলার অভিযোগ করেন। এর কিছু সময় পর রকিব ও মাহি ফেসবুক লাইভে এসে বলেন, ফেসবুক লাইভে মাহি গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে দেড় কোটি টাকার বিনিময়ে আমাদের গাড়ির শোরুম দখল করিয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন এ চিত্রনায়িকা।

এর পর ওই দিন রাত সাড়ে ১২টার দিকে মাহি ও রকিব সরকার আবারও ফেসবুক লাইভে আসেন। সেখানে বলেন আমরা সকালে এয়ারপোর্টে নামব। হয়তো আমরাও গ্রেফতার হতে পারি। বর্তমানে ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা মাহি। কিছু দিনের মধ্যেই মা হবেন তিনি। এর মধ্যেই গ্রেফতার হলেন এই চিত্রনায়িকা।

এর আগে শনিবার সকালে চিত্রনায়িকা মাহি ওমরাহ পালন শেষে দেশে ফিরলে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারপরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, মাহি দেশে ফেরার পর বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মাহির স্বামী রকিব সরকার এখনো পলাতক।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দুটি করে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। ওই দিন রাতে বাসন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রোকন মিয়া বাদী হয়ে এ মামলা করেন। এ ছাড়া জমিদখলের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে হুকুমের আসামি করে আরও একটি মামলা করেন স্থানীয় বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password