দেশজুড়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ

দেশজুড়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ

বহু আলোচনা-সমালোচনার পর অবশেষে গ্রেফতার করা হয়েছে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে। তার গ্রেফতার ঘিরে যে কোনো ধরনের অপতৎপরতা এড়াতে দেশজুড়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ।আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সূত্র জানায়, হেফাজতে ইসলামের দেশজুড়ে জ্বালাও-পোড়াও তাণ্ডবের পর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে যায়। বিভিন্ন থানায় থানায় বাঙ্কার বানিয়ে এলএমজি গার্ড বসানো হয়। কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন সহিংসতায় জড়িতরাসহ গ্রেফতার করা হয় নির্দেশদাতা হিসেবে কেন্দ্রীয় নেতাদের।

এরই ধারাবাহিকতায় দীর্ঘ নজরদারি শেষে রোববার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া মাদ্রাসা থেকে গ্রেফতার করা হয় বহুল আলোচিত মামুনুল হককে। তাকে গ্রেফতারের পর সারাদেশে বিশেষ করে চট্টগ্রাম-ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ হেফাজত অধ্যুষিত এলাকায় বাড়তি পুলিশ সদস্য মোতায়েন করে সতর্ক অবস্থানে থাকতে বলা হয়েছে।

পুলিশ সূত্র জানায়, রোববার (১৮ এপ্রিল) সকালে সব এসপি ও রেঞ্জের ডিআইজিকে নিজ নিজ জেলার আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সতর্ক অবস্থানে থাকতে বলা হয়েছে। মাঠপর্যায়ে সেই নির্দেশনা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। কেউ যাতে কোনোভাবেই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে। অপতৎপরতাকারীদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেসব থানায় বাংকার তৈরি করা হয়েছে, সেখানে সার্বক্ষণিক দু’জন পুলিশ সদস্যকে অন-গার্ড দায়িত্ব পালনের কথা বলা হয়েছে।

ডিএমপির একজন কর্মকর্তা জানান, থানাগুলোতে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া যেসব থানা এলাকার মাদ্রাসা ও মসজিদ রয়েছে, সেসব কেন্দ্রিক বাড়তি নজরদারি রয়েছে। মসজিদ ও মাদ্রাসাগুলোতে যাতে কেউ জড়ো হতে না পারে সে বিষয়ে মাঠপর্যায়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, রোববার সকাল থেকে মোহাম্মদপুর এলাকায় মামুনুলের মাদ্রাসার সামনে বাড়তি পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়। যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে গ্রেফতারের পরেও ওই এলাকায় বাড়তি পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে।

ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, মামুনুলকে গ্রেফতার কেন্দ্র করে শনিবার রাত থেকেই মোহাম্মদপুরের ওই মাদ্রাসার আশপাশে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়। যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে সকাল থেকে মোতায়েন করা হয় বাড়তি পুলিশ সদস্য। গ্রেফতারের পরেও ওই মাদ্রাসা এলাকায় বাড়তি পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে।

ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) হারুন-অর-রশিদ বলেন, বিভিন্ন নাশকতার ঘটনায় তদন্তে সংশ্লিষ্টতার প্রাথমিক প্রমাণের ভিত্তিতেই হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি বলেন, ২০২০ সালে মোহাম্মদপুর থানায় হামলা ও নাশকতার অভিযোগে দায়ের করা একটি মামলায় মামুনুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। আমরা মামলাটি তদন্ত করছিলাম, তদন্তে তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তার বিরুদ্ধে সারাদেশে পুলিশের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা, থানায় হামলা, রেজিস্ট্রার অফিসে হামলা-ভাঙচুরসহ অনেকগুলো মামলা রয়েছে। এসব মামলার তদন্ত চলছিল, পাশাপাশি আমরা দীর্ঘদিন ধরে তাকে নজরদারিতে রেখেছিলাম।ডিসি হারুন-অর-রশিদ বলেন বলেন, মামুনুলকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসা হয়েছে। এসময় আমরা কোনো বাধার সম্মুখীন হইনি।

জানা যায়, গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টে নারীসঙ্গীসহ স্থানীয় লোকজনের হাতে আটক হওয়ার পর ছাড়া পেয়ে রাতেই ঢাকায় চলে আসেন তিনি। ঢাকার মোহাম্মদপুরের কাদিরাবাদ হাউজিংয়ের নিজ বাসায় না গিয়ে তিনি পাশেই জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসায় যান। বের হলেই গ্রেফতার হতে পারেন আশঙ্কায় এরপর থেকে তিনি ওই মাদ্রাসাতেই অবস্থান নেন।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password