মেহেরনাজ ৮ বছর ধরে শিকলবন্দি

মেহেরনাজ ৮ বছর ধরে শিকলবন্দি

শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে মেহেরনাজ (১৬) নামে এক মানসিক প্রতিবন্ধী ৮ বছর ধরে বিনা চিকিৎসায় শিকলে বন্দি অবস্থায় রয়েছে। আর্থিক অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না তার অভিভাবকরা। ফলে প্রতিবন্ধী মেহেরনাজকে নিয়ে তার বৃদ্ধ মা হাওয়া বেগম মানবেতর জীবনযাপন করছেন। 

মেহেরনাজ ঝিনাইগাতী উপজেলা সদর ইউনিয়নের উপজেলা সদরের কাচারীপাড়া মহল্লার মৃত গোলাম মোস্তফার মেয়ে। মেহেরনাজ ৭ বছর বয়স থেকেই ভারসাম্যহীন আচরণ করতে শুরু করে। পিতা গোলাম মোস্তফা বেঁচে থাকাবস্থায় সাধ্যমতো চিকিৎসা করালেও মারা যাওয়ার পর থেকে মেহেরনাজের চিকিৎসা বন্ধ হয়ে যায়। 

মেহেরনাজের মা হাওয়া বেগম (৬০) জানান, ২ ছেলে, ৪ মেয়েকে নিয়ে ছিল তাদের ৮ সদস্যের পরিবার। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম তার স্বামী গোলাম মোস্তফা ২০১১ সালে এক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। এরপর থেকেই অর্থসংকটে পড়ে পরিবারটি।

তিন মেয়ের বিয়ে দেয়া হয়েছে। দুই ছেলেও বিয়ে করে আলাদা সংসার করছে। ছেলেদেরই সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। সহায়-সম্বল বলতে কোনো কিছুই নেই হাওয়া বেগমের। সরকারি খাস ২ শতাংশ জমির ওপর একটি ঘর নির্মাণ করে বসবাস করেন হাওয়া বেগম। বয়স ও শারীরিক দুর্বলতার কারণে কোনো কাজও করতে পারেন না তিনি।

বর্তমানে হাওয়া বেগম শিকলে বাঁধা মেয়ে মেহেরনাজকে নিয়ে  অনাহারে-অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছেন। প্রতিবেশীরা যা দেয় তাই খেয়ে দিন চলছে তাদের। 

হাওয়া বেগম জানান, ১০ টাকা কেজির একটি চালের কার্ড, তার নামে একটি বিধবা ভাতা ও প্রতিবন্ধী মেয়ে মেহেরনাজের নামে একটি প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড চেয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে দীর্ঘদিন থেকে বহু আবেদন করেছেন তিনি। কিন্তু জুটেনি তাদের ভাগ্যে কোনো সরকারি সাহায্য-সহযোগিতা।

এ ব্যাপারে ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন চাঁন বলেন, এখন কোনো কিছু দেয়ার সুযোগ নেই। সরকারি সাহায্য এলে পরবর্তীতে দেয়া হবে। 

এ বিষয়ে ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবেল মাহমুদ জানান, খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password