করিমগঞ্জ বেদে পল্লীর জীবন যাত্রা

করিমগঞ্জ বেদে পল্লীর জীবন যাত্রা

করিমগঞ্জ, দোহার উপজেলা রাইপারা ইউনিয়নের ছোট্ট একটি গ্রাম, বেদে পল্লী নামে পরিচিত, যেখানে প্রায় ৭০০ লোকের বাস ভোটার সংখ্যা ২৭০।তারা আগে স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে নৌকায় বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াত জীবিকার তাগিদে। নৌকাতেই ছিল তাদের পুরো সংসার। মহিলারা চুড়ি ফিতা আর পুরুষরা তালা চাবি ও ছাতা মেরামত সংসার করে চালাতো। তবে সে ধারা পরিবর্তন হয়েছে। কেননা সে পেশা যুগের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারছে না।

যদিও গুটি কয়েক পরিবার এখনো পূর্বপুরুষের ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। এখন তারা নৌকার পরিবর্তে গড়ে তুলেছে স্থায়ী নিবাস। বিশেষ করে এ সম্প্রদায়ের নারীদের কঠোর সংগ্রাম সাহস ও নেতৃত্ব গুণাবলী যা আমাদের শিক্ষনীয় হতে পারে । এ সম্প্রদায়ের লোকেরা প্রকৃতির মধ্যেই চলার পথে বৈচিত্র খুঁজে বেড়ায় ।

আগে যাদের নৌকা বা ঝুপড়ি ছিল মাথা বোঝার ঠাঁই। তারা এখন তৈরি করেছে টিনের আধাপাকা ও পাকা ঘর। করিমগঞ্জ গ্রামের সবাই মুসলমান। এ গ্রামে একটি মসজিদ রয়েছে টাকার অভাবে তা দ্বিতল করা সম্ভব হচ্ছে না। রাইপাড়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড কেন্দ্রের ১৬১০ ভোটের মধ্যে এ জনগোষ্ঠীর ভোটের সংখ্যা ২৭০।

যা ভোট ব্যাংক হিসেবে গণ্য। এ গ্রামের লোকদের কদর বেড়ে যায় যে কোন নির্বাচনকালীন সময়ে । অভিমানের সুরে ওমর ওমর নামে ব্যক্তির উক্তি ‘নির্বাচনে প্রার্থীরা তাদের উন্নয়নের অঙ্গীকার করলেও নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর আর দেখা মেলে না’। এ সম্প্রদায়ের তিনজন ১৯৭১ এর স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছিল। হাতেগোনা কয়েকজন এখনো পূর্ব পুরুষের পেশা আগলে রেখেছে।

অধিকাংশ লোক তাদের চিরচেনা পেশা থেকে বেরিয়ে অন্যান্য পেশায় যুক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে শিল্পী আক্তার, সে মানিকগঞ্জ মহিলা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর, করিমগঞ্জবাসী ব্যক্তির সাথে বিয়ে হয়। তার স্বামী এক স্কুলের শিক্ষক ছিল।

তার স্বামী গত সাত মাস হলো ব্রেনই স্ট্রোকে মারা গেছে। সে শিক্ষকতার পাশাপাশি একটি মুদির দোকান চালাত। শিল্পী আক্তারের এক মাত্র সন্তান উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর টাকার অভাবে লেখাপড়া বন্ধ রয়েছে । স্বামীর রেখে যাওয়া মুদির দোকান চালিয়ে একমাত্র সন্তান নিয়ে কোনরকম ভাবে দিনানিপাত করছে শিল্পী আক্তার।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password