পাবনায় পরকীয়া প্রেমিকার পরিকল্পনায় যুবদল নেতাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা

পাবনায় পরকীয়া প্রেমিকার পরিকল্পনায় যুবদল নেতাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা
MostPlay

পরকীয়া প্রেমিকার পরিকল্পনাতেই প্রথমে অপহরণ এবং পরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় পাবনা জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলীকে (৩৫)। হত্যার পর তার লাশ জেলার আটঘরিয়া উপজেলার একটি মাদ্রাসা সংলগ্ন বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্কের মধ্যে ফেলে দেন হত্যাকারীরা।হত্যাকাণ্ডের ১২ দিন পর পাবনা জেলা পিবিআই ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে। ইতোমধ্যে শাহজাহান হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত ইব্রাহীম প্রাং (২৮) নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

গত ৩১ মার্চ সন্ধ্যায় জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান শহরের শালগাড়িয়া প্লাস্টিক মোড় থেকে অপহৃত হন এবং ৪ এপ্রিল সকালে জেলার আটঘরিয়া উপজেলার গঙ্গারামপুর গ্রামের একটি মাদ্রাসার পাশে সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে তার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত শাহজাহান পাবনা শহরের শালগাড়িয়া গোরস্থান এলাকার  মো. তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে।গ্রেফতার আসামি ইব্রাহীম প্রাং জেলার আটঘরিয়া উপজেলার ডেঙ্গার গ্রামের মো. তায়েজ প্রাংয়ের ছেলে। তাকে ঢাকা জেলার সাভার থানাধীন সবুজবাগ এলাকা হতে গ্রেফতার করে পিবিআইয়ের একটি দল।

পিবিআই পাবনার সহকারী পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সবুজ আলী জানান, পাবনা শহরের প্লাস্টিক মোড়ে ফটোস্ট্যাট ব্যবসা ছিল শাহজাহানের। তিনি ছিলেন অবিবাহিত। এক নারীর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে শাহজাহানের পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। কিন্তু সম্প্রতি আর্থিক লেনদেনসহ নানা কারণে তাদের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলতে থাকে। এরই জের ধরে ওই নারী তার নিকটাত্মীয় ইব্রাহীমের সহায়তায় শাহজাহানকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৩১ মার্চ সন্ধ্যায় সুকৌশলে শাহজাহানকে অপহরণ করে জেলার আটঘরিয়া উপজেলার গঙ্গারামপুর গ্রামের মো. ইব্রাহীম প্রাংয়ের নিকটাত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই বাড়িতে পরকীয়া প্রেমিকা এবং ইব্রাহিমসহ আসামিরা পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক খাবারের মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে শাহজাহানকে খাওয়ায়।

শাহজাহান গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়লে ইব্রাহীমসহ অন্যরা তাকে ঘুমন্ত অবস্থায় হাত-পা বেঁধে গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। হত্যার পর তার লাশ বস্তাবন্দি করে আটঘরিয়া উপজেলার গঙ্গারামপুর হাফিজিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন জনৈক কাসেমের বাড়ির টয়লেটের সেপটিক ট্যাঙ্কে ফেলে রাখে।গত ৫ এপ্রিল সকালে স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতে পুলিশ ওই সেপটিক ট্যাঙ্ক হতে তার লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনার পর নিহত শাহজাহানের ভাই মো. আব্দুল গফুর পাবনা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে মামলাটি পিবিআই পাবনার ওপর ন্যস্ত করা হয়।

পিবিআইয়ের এসআই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, এ মামলার তদারককারী কর্মকর্তা পাবনা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মো. ফজলে এলাহীর নির্দেশনায় এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় গত ১১ এপ্রিল সন্ধ্যায় মো. ইব্রাহীম প্রাংকে ঢাকা জেলার সাভার থানাধীন সবুজবাগ এলাকা হতে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত ইব্রাহীমকে সোমবার রাতে পাবনার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামাল উদ্দীনের আদালতে হাজির করা হলে তিনি হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত বলে স্বীকার করে জবানবন্দি প্রদান করেন। পরে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়।তিনি বলেন, আদালতে ইব্রাহীম অন্য আসামিদের নাম প্রকাশ করেছেন। পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password