সুদের টাকা ফেরত না পেয়ে ঋণগ্রহীতার স্ত্রীকে তুলে নিয়ে বিয়ে

সুদের টাকা ফেরত না পেয়ে ঋণগ্রহীতার স্ত্রীকে তুলে নিয়ে বিয়ে

সুদ নিয়ে সেই টাকা ফেরত দিতে পারেননি ব্যক্তি। এর শাস্তিস্বরূপ ঋণগ্রহীতার স্ত্রীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগ ঋণদাতার বিরুদ্ধে। এখানেই শেষ নয়, অভিযোগ আরও একগুচ্ছ। ওই অসহায় যুবতীকে বলপূর্বক ধর্মান্তরিত করার পর বিয়ে করার অভিযোগও উঠেছে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। বাংলাদেশের (Bangladesh) মাগুরা জেলার মহম্মদপুরের এই ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল। এরপর নববিবাহিত স্ত্রীকে আবার পর্দার আড়ালে রেখে অত্যাচার করা হলে, দ্বিতীয় স্বামীকে তালাক দেন যুবতী। কিন্তু স্বামী তা মানতে নারাজ হন। এরপর উপায়ান্তর না দেখে আইনের দ্বারস্থ হন মেয়েটি।

আট বছর আগে মহম্মদপুরের রাজাপুর গ্রামের পান ব্যবসায়ী সুজয় বিশ্বাসের সঙ্গে ওই নারীর বিয়ে হয়। সব ঠিকঠাকই চলছিল। ২০১৮ সালে ইসমাইল মণ্ডল নামে এক ব্যক্তির থেকে সুদ নিয়ে সেই টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হন সুজয়। এরপরই ঋণদাতা ইসমাইল সুজয়ের স্ত্রীকে তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। এরপর নির্যাতনের মুখে গত ৩১ আগস্ট ইসমাইলকে তালাক দিয়ে মাগুরা শহরের এক নারীর কাছে আশ্রয় নেন এই যুবতী। এক ক্লিনিকে সেবিকার চাকরিও পান। তবে ইসমাইল কিছুতেই তাঁর পিছু ছাড়ছে না। ফলে মীমাংসার জন্য জেলা লিগ্যাল এইড আধিকারিকের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই নারী। জেলা লিগ্যাল এইডের আইনজীবী শাহিনা আক্তার বলেন, আইনগতভাবে তালাক দিলে কোনও নারীকে তাঁর স্বামী আর স্ত্রী হিসেবে দাবি করতে পারেন না। তাছাড়া তালাক দেওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে তা এমনিতেই কার্যকর হয়ে যায়।

মাগুরা সদর উপজেলার মনিরামপুর গ্রামের নির্যাতিতা ওই নারী জবানবন্দিতে জানিয়েছেন যে ২০১৮ সালে তাঁর স্বামী সুজয় ইসমাইলের থেকে টাকা ধার নেন। ইসমাইলের দাবি অনুযায়ী, সুদে-আসলে যার পরিমাণ ৯ লক্ষ টাকা। ইসমাইল তাঁর স্বামীকে টাকার পরিশোধের জন্য নানাভাবে চাপ তৈরি করতে থাকে। মূল টাকা পরিশোধ করলেও সুজয় সুদের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হন। এরপরই ইসমাইল বলে যে সুদের টাকা দিতে না পারলে স্ত্রীকে তার হাতে তুলে দিতে। চাপে পড়ে ইসমাইলের হাতে স্ত্রীকে তুলে দেন সুজয়। এরপর ধর্মন্তারিত করে ইসমাইল তাকে বিয়ে করে। এরপর মাগুরায় নিয়ে গিয়ে শুরু হয় নির্যাতন। তা সহ্য করতে না পেরে প্রায় পাঁচ মাস আগে সেখান থেকে পালিয়ে আসেন তিনি। গত ৩১ আগস্ট ইসমাইলকে তালাক দেন তিনি। 

এদিকে, স্ত্রীকে অন্যের হাতে তুলে দেওয়ার দায় অস্বীকার করেছেন ওই নারীর প্রথম স্বামী সুজয়। তাঁর কথায়, ”ধারের টাকা ফেরত দিয়ে দিয়েছি ইসমাইলকে। এরপর সে বলে যে সুদের টাকা দিতে না পারলে আমার বউকে তার হাতে তুলে দিতে বলে। যশোরে ডাক্তার দেখাতে গেলে ইসমাইল আমাকে মারধর করে মস্তান দিয়ে স্ত্রীকে জোর করে তুলে নিয়ে যায়। আবার অভিযুক্ত ইসমাইল মণ্ডলের দাবি, তার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ মিথ্যা। সে বলছে, ওই নারী স্বেচ্ছায় ধর্মন্তারিত হয়ে আমাকে বিয়ে করেছে।গোটা ঘটনায় মাগুরার পুলিশ সুপার যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password