ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা সৌদিফেরত নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে

ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা সৌদিফেরত নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে
MostPlay

দিনাজপুরের বীরগঞ্জে বিদেশফেরত এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে আব্দুল খালেক সরকার নামে  ইউনিয়ন পরিষদের এক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে ধর্ষণের শিকার ওই নারী বীরগঞ্জ থানায় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক সরকারের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলাটি দায়ের করেন।

আব্দুল খালেক সরকার বীরগঞ্জ উপজেলার ৬ নম্বর নিজপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলার সৈয়দপুর (কল্যানী) এলাকার মৃত তছলিম উদ্দীনের ছেলে।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিয়ে বিচ্ছেদের  পর বাবার বাড়িতে অবস্থান করছিলেন  তিনি। ২০১৫ সালের ঈদ উপলক্ষে চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক সরকার সরকারি চাল দেওয়ার কথা বলে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে তাকে ডেকে নেন। তার কথা মতো ইউনিয়ন পরিষদে গেলে সেখানকার একটি পুরনো ভবনে নিয়ে ওই নারীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন চেয়ারম্যান। ধর্ষণের পর বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য হুমকি দেওয়া হয়। কাউকে জানালে তার পরিবারের সবাইকে মেরে লাশ গুম করে দেওয়া হবে বলে জানান চেয়ারম্যান। এভাবে ২০১৫ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ওই নারীকে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে গিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করেন এবং ভিডিও চিত্র ধারণ করে রাখেন চেয়ারম্যান।

এরপর ওই নারী চাকরি নিয়ে সৌদি আরবে চলে যান। বিদেশে থাকা অবস্থায় চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক সরকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্নভাবে যৌন উত্তেজক কথাবার্তা বলতেন। দুই বছর পর সম্প্রতি ওই নারী সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরত আসলে তার বাবা-মা একই উপজেলার এক ব্যক্তির সঙ্গে তাকে বিয়ে দেন। দেশে ফেরত আসা এবং অন্য ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ের খবর শুনে চেয়ারম্যান খালেক সরকার মোবাইল ফোনে ওই নারীকে নানা ধরনের হুমকি দেন।

পরে ভিডিওগুলো ফেরত দেওয়ার কথা বলে ওই নারীকে দেখা করতে বলেন চেয়ারম্যান। তার কথা মতো গত মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুর ২টার দিকে উপজেলার নোখাপাড়ায় চেয়ারম্যানের ইটভাটার পাশে আব্দুর রশিদের বাসায় যান ওই নারী। সেখানে যাওয়ার পর তাকে ধর্ষণ করেন চেয়ারম্যান।একইসঙ্গে মোবাইলে ভিডিও করেন।  এ সময় ওই নারী প্রাণপণ চেষ্টা করে চেয়ারম্যানের মোবাইলের মেমোরি কার্ড খুলে নেন এবং তিনি তখন চেচামেচি করলে চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। পরে ধর্ষণের শিকার নারী বিষয়টি তার পরিবারকে জানালে পরিবারের লোকজন তাকে মামলা দায়ের করার পরামর্শ দেয় এবং তিনি মামলা দায়ের করেন।

এ ব্যাপারে নিজপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক সরকারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পর পর দুই বার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে আসছি। তাই প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে একটি কুচক্রী মহল আমাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে ষড়যন্ত্র করে আসছে। এটি সেই ষড়যন্ত্রের অংশ।’

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নাজমুল ইসলাম জানান, আসামিকে গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান শুরু হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামিকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে খালেক সরকারের বিচারের দাবিতে পৌর শহরের বিজয় চত্বর এলাকায় বীরগঞ্জবাসীর ব্যানারে একটি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password