মেট্রো রেল উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

মেট্রো রেল উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
MostPlay

মেট্রোরেলের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার বেলা ১১টা ৫ মিনিটে মেট্রোরেলের ফলক উন্মোচন করে উদ্বোধন করেন তিনি। আর এর মাধ্যমেই মেট্রোরেল যুগে প্রবেশ করল বাংলাদেশ। এর মধ্য দিয়ে দেশে সূচিত হলো আধুনিক নগরায়নের এক নতুন অধ্যায়। আজ বুধবার বেলা ১১টায় উত্তরার দিয়াবাড়ি মাঠে ফলক উন্মোচনের মধ্য দিয়ে দেশের প্রথম বিদ্যুৎচালিত দ্রুতগতির এই মেট্রোরেল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

এরপর সেখানে সুধী সমাবেশে যোগ দেন তিনি। সুধী সমাবেশ শেষে মেট্রোরেলের প্রথম যাত্রী হয়ে উত্তরা থেকে আগারগাঁও স্টেশনে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে মেট্রোরেল জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। মেট্রোরেলের উদ্বোধন উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের গর্ব ও আকাঙ্ক্ষার প্রতীক মেট্রোরেল বাংলাদেশের নগর গণপরিবহন ব্যবস্থায় একটি অনন্য মাইলফলক।

উদ্বোধনের এই মাহেন্দ্রক্ষণে আমি দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। সময় সূচি যানজটে অতিষ্ঠ রাজধানীতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে উত্তরার দিয়াবাড়ী থেকে আগারগাঁও অংশে প্রথমবারের মতো যাত্রী নিয়ে ছুটবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত আধুনিক ট্রেন। পৌনে ১২ কিলোমিটার উড়াল-রেলপথে মাত্র ১০ মিনিট ১০ সেকেন্ডে উত্তরা থেকে আগারগাঁও চলে আসবে মানুষ।

তবে প্রথমদিকে মেট্রোরেল চলবে সীমিত পরিসরে, সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। মাঝপথে কোথাও থামবে না। প্রথমদিকে ১০ মিনিট পরপর ট্রেন চলবে। আগামী ২৬ মার্চ থেকে এই রুটে উত্তরা-আগারগাঁও রুটে মেট্রোরেল পু‌রোদ‌মে চল‌বে। সে‌দিন থে‌কে সব স্টেশনে থে‌মে যাত্রী তুল‌বে। পুরোদমে চলাচল শুরু হলে চলবে ভোর থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত।

যাত্রীর অভ্যস্ততার জন্য ধাপে ধাপে পথের সাতটি স্টেশনে যাত্রাবিরতি করবে যাত্রী ওঠানামার জন্য। তখন ১৭ মিনিট সময় লাগবে। এর মধ্যে যাত্রা বিরতির ১০ মিনিট। ট্রেনের সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতা ২ হাজার ৩০৮ জন হলেও আপাতত ২০০ যাত্রী নিয়ে চলবে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে উত্তরা থেকে মতিঝিল এবং ২০২৫ সালে মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত চলবে মেট্রোরেল। উত্তরা থেকে মতিঝিলে যেতে ৩৮ মিনিট লাগবে। ঘণ্টায় ৬০ হাজার অর্থাৎ দিনে ৫ লাখ যাত্রী মেট্রোরেলে চলাচল করতে পারবেন।

ভাড়া কত? মেট্রোরেলে কিলোমিটারে ভাড়া ৫ টাকা। মেট্রোরেলে সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ টাকা। দিয়াবাড়ী থেকে আগারগাঁওয়ের ভাড়া ৬০ টাকা। কমলাপুর পর্যন্ত ভাড়া হবে ১০০ টাকা। শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ পাস নেই। ভাড়া লাগবে না যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তিন ফুটের কম উচ্চতার শিশুদের। স্মার্ট কার্ডে ভাড়া পরিশোধ করলে ১০ শতাংশ ছাড় পাবেন যাত্রীরা। বিনা ভাড়ায় বা অতিরিক্ত ভ্রমণ করলে ১০ গুণ জরিমানা গুনতে হবে।

এ ছাড়া ট্রেন ও স্টেশনে ধূমপান, পান খাওয়া নিষেধ। পোষা প্রাণী নিয়ে চড়া যাবে না মেট্রোতে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য রয়েছে নানা সুবিধা। নারী ও শিশুদের জন্য থাকছে বিশেষ সুবিধা। মেট্রোরেল চলবে বিদ্যুতে। জাতীয় গ্রিড থেকে পাঁচটি বিকল্প সংযোগ রয়েছে। তাই লোডশেডিংয়ের শঙ্কা নেই। টিকিট কাটবেন যেভাবে মেট্রোরেলে দুই ধরনের টিকিটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। একটি দীর্ঘ মেয়াদে ব্যবহারের এমআরটি পাস, অন্যটি দিয়ে চড়া যাবে একবার।

শুরুতে কেবল মেট্রোরেল স্টেশনের কাউন্টার থেকে নির্দিষ্ট জামানত দিলে মিলবে এমআরটি পাস। আর একবারের যাত্রার জন্য টিকিট মিলবে স্টেশনে থাকা কাউন্টার এবং পাশের স্বয়ংক্রিয় ‘টিকিট মেশিন’ থেকে। যাত্রা শেষে নির্ধারিত মেশিনে টিকিট কার্ডটি ফেরত দিলে তবেই স্টেশন থেকে বের হতে পারবেন যাত্রীরা। মেট্রোরেলের নির্মাণ খরচ মেট্রোরেলের প্রথম পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল ২০০৫ সালে।

রাজধানীর জন্য তৈরি কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনায় (এসটিপি) বলা হয়েছিল মেট্রোরেলের কথা। মেট্রোরেলের মোট ব্যয় প্রায় ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। এরমধ্যে জাইকা ঋণ দিচ্ছে ১৯ হাজার ৬৭৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা। বাকি ১৩ হাজার ৭৯৬ কোটি ২৯ লাখ টাকা সরকারি তহবিল থেকে খরচ করা হবে। ঋণের গ্রেস পিরিয়ড ১০ বছর। পরিশোধ করতে হবে ৩০ বছরের মধ্যে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password