দেশের বাজারে আবার বাড়ল জ্বালানি তেলের দাম। বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে চতুর্থবারের মতো জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণ করেছে সরকার। স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণের ঘোষিত প্রজ্ঞাপনে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারপ্রতি ৭৫ পয়সা করে বাড়ানো হয়েছে। একই সঙ্গে অকটেন ও পেট্রলের দাম লিটারপ্রতি ২ টাকা ৫০ পয়সা করে বাড়ানো হয়েছে। নতুন এ দর কার্যকর হবে ১ জুন থেকে।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) রাত ১১ টার দিকে জ্বালানি তেলের নতুন দাম নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ১০৭ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০৭ টাকা ৭৫ পয়সা করা হয়েছে। অকটেনের দাম ১২৮ টাকা ৫০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১৩১ টাকা এবং পেট্রলের দাম ১২৪ টাকা ৫০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১২৭ টাকা করা হয়েছে।
সর্বশেষ গত ৩০ এপ্রিল ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারপ্রতি এক টাকা এবং অকটেন ও পেট্রলের দাম লিটারপ্রতি ২ টাকা ২৫ পয়সা করে বাড়ানো হয়েছিল। বর্তমানে জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণ ছাড়াও আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মিল রেখে প্রতি মাসে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম নির্ধারণ করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। অনেকটা একই প্রক্রিয়ায় প্রতিমাসে জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণ করছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বছরে জ্বালানি তেলের চাহিদা প্রায় ৭৫ লাখ টন। মোট চাহিদার প্রায় ৭৫ শতাংশই ডিজেল ব্যবহার হয়।
বাকি ২৫ শতাংশ চাহিদা পূরণ হয় পেট্রল, অকটেন, কেরোসিন, জেট ফুয়েল, ফার্নেস অয়েলসহ বিভিন্ন জ্বালানি তেলে। ডিজেল সাধারণত কৃষি সেচে, পরিবহন ও জেনারেটরে ব্যবহার করা হয়। অকটেন ও পেট্রল বিক্রিতে সব সময় বিপিসি লাভ করে। মূলত ডিজেল বিক্রিতেই বিপিসির লাভ ও লোকসান নির্ভর করে। জ্বালানি তেলের মধ্যে উড়োজাহাজে ব্যবহৃত জেট ফুয়েল ও বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত ফার্নেস অয়েলের দাম নিয়মিত সমন্বয় করে বিপিসি।
আর ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রল ও অকটেনের দাম নির্ধারণ করে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। জ্বালানি বিভাগ জানায়, প্রতিবেশী দেশ ভারত ছাড়াও উন্নত বিশ্বে প্রতি মাসেই জ্বালানির মূল্য নির্ধারণ করা হয়। প্রতিবেশী দেশ ভারতের কলকাতায় বর্তমানে ডিজেল লিটারপ্রতি ৯০.৭৬ রুপি বা ১২৫ টাকা ৭০ পয়সা এবং পেট্রল ১০৩.৯৪ রুপি বা ১৪৩ টাকা ৯৬ পয়সায় বিক্রি হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের শর্ত হিসেবে সরকার গত ২৯ ফেব্রুয়ারি জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি ঘোষণা করে। স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণ প্রক্রিয়া চালুর ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম কমলে দেশে কমবে, আবার বাড়লে দেশের বাজারেও বাড়বে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন