সড়কে নৌকা চালিয়ে ঢাকায় যাবেন ইউছুফ,উপহার দিতে চান প্রধানমন্ত্রীকে

সড়কে নৌকা চালিয়ে ঢাকায় যাবেন ইউছুফ,উপহার দিতে চান প্রধানমন্ত্রীকে

স্বপ্নতো অনেক রকমই হয়। কিন্তু লক্ষ্মীপুরের রামগতির নৌকার কারিগর মো. ইউছুফ দেখেছে ভিন্নধর্মী স্বপ্ন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দিতে প্রায় ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘জল ডাঙা মুজিব পরিবহন’ বানিয়েছেন। এ পরিবহনটি জলপথ ও স্থলপথে চলবে। আর নৌকাটি প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিতেই ইউছুফ যাত্রী নিয়ে ঢাকায় যাবেন। আবার প্রধানমন্ত্রীকে এ নৌকায় চড়াতে চান তিনি। অন্তত পক্ষে একবার যেন প্রধানমন্ত্রী নৌকাটি ছুঁয়ে দেখেন এ স্বপ্ন ইউছুফের।

জানা গেছে, ইউছুফ লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চর পোড়াগাছা ইউনিয়নের পূর্ব চর কলাকোপা গ্রামের আবুল কালামের ছেলে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিতে ইউছুফ নৌকাটি নির্মাণ করেন। তিন বছর ধরে ক্লান্তিহীন পরিশ্রম করে ১৪ থেকে ১৫ লাখ টাকা ব্যয় করা এ নৌকাটির কাজ শেষ হয়েছে। ১৭ মার্চ চরকলাকোপা গ্রাম থেকে উভচর নৌকাটিতে যাত্রী নিয়ে ইউছুফ ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেবেন। তবে সড়ক পথে।

২৪ আসনের নৌকাটিতে দেখা যায়, এতে বাসের মতো স্ট্যায়ারিং ও পানিতে চলার জন্য দুটি পাখা রয়েছে। জাতীয় পতাকার লাল-সবুজ রঙ দিয়ে নৌকাটি রঙিন করা হয়েছে। আবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিও আঁকা রয়েছে। নৌকাতে উঠার জন্য উড়োজাহাজের আদলে সিঁড়ি আছে। এতে গিয়ার, ফলোক্যামেরা, হেডলাইট, ইন্ডিকেটর, এসি ফ্যান, হর্ন এবং মিটার বোর্ডও রয়েছে। দৃষ্টিনন্দন ডিজাইনের ছাউনি রয়েছে পাটাতনে। প্রতিদিনই ব্যতিক্রম এই উভয়চর পরিবহনটি দেখতে ভীড় করছেন উৎসুকরা।

ওই গ্রামের বাসিন্দারা জানান, বঙ্গবন্ধুর দল আওয়ামী লীগের জন্য পাগল ইউছুফ। সে লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীকে একটি উপহার দেওয়ার জন্য তিনি নৌকাটি নির্মাণ করার উদ্যোগ নেন। ২০১৯ সাল থেকে দিনে বেলায় নিজের কাজ শেষে রাতে নৌকাটি নির্মাণে সময় দিতেন। একটু একটু করে আজ তার নৌকার কাজ শেষ হয়েছে। সারা জীবন মানুষের নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত ছিলেন ইউসুফ ও তার পরিবার। নিজেদের কোনো নৌকা না থাকলেও স্বপ্ন পূরণের অঙ্গিকার নিয়ে নিরলস পরিশ্রম করেন তিনি। ইউছুফের ভাষ্যমতে ‘ওই দিনই তার স্বপ্ন আর কষ্ট স্বার্থক হবে, যখন প্রধানমন্ত্রী তার বানানো নৌকাটি ছুঁয়ে দেখবেন’।

নৌকার কারিগর মো. ইউছুফের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জল ডাঙা মুজিব পরিবহনটি বঙ্গবন্ধুর প্রতি তার ভালোবাসার প্রতীক। তিনি নিজেই ৩ বছর ধরে এ নৌকা বানিয়েছেন। ১৭ মার্চ তিনি সড়ক পথে প্রধানমন্ত্রীকে উপহারটি বুঝিয়ে দিতে যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিবেন। তার প্রবল ইচ্ছে প্রধানমন্ত্রী নৌকায় চড়বেন অথবা অন্তত একবার ছুঁয়ে দেখবেন। 

মো. ইউছুফ বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেওয়ার জন্য নৌকাটি নির্মাণে আমি ইচ্ছে পোষণ করি। এতে আমার বাবা আবুল কালাম প্রথম ৫০ হাজার টাকা দিয়ে আমাকে অনুপ্রেরণা দেন। স্থানীয় মো. করিম ও আলাউদ্দিনও আমাকে সহযোগীতা করেছেন। এ কাজে আমার স্ত্রীও সার্বক্ষণিক আমার সঙ্গে ছিলেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল ওয়াহেদ বলেন, নৌকাটি দেখেছি। উপহারটি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছাতে তাকে সকল ধরনের সহযোগীতা করা হবে। 

রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল মোমিন বলেন, ইউসুফ আমার কাছে এসে নৌকার ছবি দেখিয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) নৌকাটি জেলা প্রশাসককে দেখানো হবে। নৌকাটি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানোর উপযোগী হলে আমরা তাকে সহযোগীতা করবো।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password