চিত্র নায়ক ওয়াসিমের আড়াল হওয়ার আসল রহস্য কি ছিল?

চিত্র নায়ক ওয়াসিমের আড়াল হওয়ার আসল রহস্য কি ছিল?

৭০ ও ৮০ দশকের ঢাকায় সিনামার জনপ্রিয় এই অভিনেতা ওয়াসিমের একের এক ব্যবসা সফল ছবি হওয়ার কারণে তখন আর তাকে পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। তাকে বাংলা চলচ্চিত্রের অ্যাকশন এবং লোক ফ্যান্টাসির নায়ক হিসেবে অপ্রতিদ্বন্দ্বী মনে করা হত। তার অভিনয় দর্শক নন্দিত হওয়ার কারণে সে সময় তার জনপ্রিয়তা ছিল মানুষের পছন্দের প্রথম কাতারে।

তার অভিনীত ১৫০ সিনামার মধ্যে হাতেগনা কয়েকটি সিনামা ছাড়া তার অভিনীত সকল সিনামাই হয়েছিল সুপারহিট। ১৯৭৩ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত শীর্ষ নায়কদের একজন ছিল গুনী এই অভিনেতা। কর্মজীবনে তিনি ১৫২টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।কিন্তু তার জনপ্রিয়তা যখন আকাশ চুম্বি তখন নিজেকে আড়াল করে রাখলেন চার দেয়ালের মাঝে। কিন্তু কেন? এটার উত্তর হয়তো অনেকেই জানতো না।  

অভিনেতা ওয়াসিম প্রিয়জন হাড়ানোর দুঃখে সিনামার জগত কে বিদায় জানিয়েছিলে একসময়। আর বিদায় মূল কারণ ছিল তার প্রিয়তমা স্ত্রী আর একমাত্র কন্যার অকাল মৃত্যু।  ২০০০ সালে তার স্ত্রীর অকাল মৃত্যু হয় আর সেই শোক কাটাতে না কাটাতেই ২০০৭ সালে তার ১৪ বছরের মেয়ে  কন্যা বুশরা আহমেদ চৌদ্দ বছর বয়সে মানারাত তার নিজের বিদ্যালয় ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের পাঁচতলা থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেন। মূলত এই দূর্ঘটনায় অভিনেতা ওয়াসিমের জীবনে বিষাদ নেমে আসে আর তা থেকেই সে নিজেকে আড়াল করে রেখেছিল। আর বেঁচে নেন একাকীত্ব জীবন ।

তৎকালিন প্রখ্যাত চিত্র পরিচালক এস এম শফীর হাত ধরেই ওয়াসিমের চলচ্চিত্র জগতে অভিষেক ঘটে। পরে ১৯৭২ সালে শফী পরিচালিত ‘ছন্দ হারিয়ে গেলো’ চলচ্চিত্রের সহকারী পরিচালক হন তিনি। ১৯৭৪ সালে আরেক প্রখ্যাত চিত্রনির্মাতা মহসিন পরিচালিত ‘রাতের পর দিন চলচ্চিত্রে প্রথম নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। এই ছবির পর থেকে ওয়াসিমকে পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি।

উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা রোগে শয্যাশয়ী হয়ে  রোববার ১৮ এপ্রিল ৭১ বছর বয়সে ঢাকার  শাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন অভিনেতা ওয়াসিম। পরে দুই দফা জানাজা শেষে বনানীর কবর স্থানে চির নিদ্রায় শায়িত হলেন প্রখ্যাত চিত্র নায়ক ওয়াসিম।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password